লালমনিরহাট প্রতিনিধি
এক ইউনিয়নে দুই কাজী আসল-নকল নিয়ে দ্বন্দ
নিয়মানুযায়ী বাংলাদেশের প্রতিটি ইউনিয়ন পরিষদে একজন করে নিকাহ রেজিস্টার বা কাজী থাকেন। তবে আদিতমারী উপজেলার দুর্গাপুর ইউনিয়নের রয়েছেন দুই কাজী। যার ফলে আসল-নকল নিয়ে দ্ব›েদ্ব স্থানীয়রা। এখানে মাহমুদুল হাসান ও শরিফুল ইসলাম দুইজন নিজেকে বৈধ নিকাহ রেজিস্টার হিসেবে দাবি করছেন। স্থানীয়দের আশঙ্কা এতে বাড়তে পারে ভুয়া বিয়ে, বাল্য বিয়ে ও বিবাহ বিচ্ছেদ।
সরেজমিনে জানা যায়নি, তানিয়া নামে একজনের বিয়ে রেজিস্ট্রি করতে যান নিকাহ রেজিস্টার মাহমুদুল হাসান। বিয়ের কার্যক্রম শুরু হলে নিজেকে নিকাহ রেজিস্টার দাবি করে বিয়ে রেজিস্ট্রি করতে চান শরিফুল ইসলাম। ফলে উভয়ের মাঝে বাকবিতন্ডা বাঁধে। পরে মেয়ের বাবার দাবির মুখে মাহমুদুল হাসান বিয়ে রেজিস্ট্রি করেন।
ওই গ্রামের স্কুল শিক্ষক ফারুক হোসেন সাংবাদিকদের বলেন, দীর্ঘ দিন ধরে নিকাহ রেজিস্ট্রি হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন মাহমুদুল হাসান। কিন্তু গত বছর ডিসেম্বর থেকে নিজেকে নিকাহ রেজিস্ট্রি হিসেবে দাবি করছেন শরিফুল ইসলাম। এলাকায় কোন বিয়ে হলে দুই নিকাহ রেজিস্টারের মাঝে বাকবিতন্ডা থেকে হাতাহাতির ঘটনাও ঘটে। তাদের দু’জনের মধ্য কে সঠিক তা যাচাই করতে জেলা প্রশাসকের কাছে লিখিত আবেদন করেছেন এলাকাবাসী। দুর্গাপুর ইউপি সদস্য রফিকুল ইসলাম জানান, ‘ভুয়া’ নিকাহ রেজিস্টার শরিফুলের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে ইউপি সদস্যরা জেলা প্রশাসকের কাছে লিখিত আবেদন করেছে। কিন্তু এখন পর্যন্ত কোন কাজ হয় নি। এতে বাড়তে পারে ভুয়া বিয়ে, বাল্য বিয়ে ও বিবাহ বিচ্ছেদ।
শরিফুল জানান, গত বছর ডিসেম্বর মাসে তাকে ওই ইউনিয়নের নিকাহ রেজিস্টার হিসেবে দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে। তবে নিয়োগের কাগজপত্র দেখাতে পারেন নি তিনি। মাহমুদুল জানান, তার বাবা দীর্ঘদিন এ ইউনিয়নের নিকাহ রেজিস্টার ছিলেন। নিয়মানুযায়ী পোষ্যকোটায় অগ্রাধিকার ভিত্তিতে ২০০৮ সালে বাবার পদে ছেলেকে নিয়োগ দেন কর্তৃপক্ষ। ‘ভুয়া’ নিকাহ রেজিস্টার শরিফুলের বিষয়ে ব্যবস্থা নিতে কর্তৃপক্ষকে লিখিতভাবে অবগত করেছেন বলেও জানান তিনি। জেলা নিকাহ রেজিষ্টার সমিতির সভাপতি কাজী আব্দুস সালাম জানান, মাহমুদুল হাসান দীর্ঘদিন ধরে কাজ করছেন এবং সে আমাদের সমিতির সদস্য। কিন্তু শরিফুল কিভাবে নিয়োগ পেয়েছেন তা তার জানা নেই বলেও জানান তিনি।
জেলা রেজিস্টার তাপস রায় জানান, এ জেলায় তিনি নতুন যোগদান করায় বিষয়টি তার জানা নেই। তবে খোঁজ নিয়ে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিবেন বলেও জানান তিনি। লালমনিরহাট জেলা প্রশাসক শফিউল আরিফ জানান, প্রতিটি ইউনিয়নে একজন নিকাহ রেজিস্টার থাকার কথা কিন্তু দুর্গাপুর ইউনিয়নে দুইজন থাকার বিষয়টি তার জানা নেই। খোঁজ নিয়ে ব্যবস্থা নেয়া হবে বলেও জানান তিনি।
"