বগুড়া প্রতিনিধি
পোড়াদহে ‘জামাই-মেয়ে’ মেলা
শত কেজি বাঘাইড় ১০ কেজির মিষ্টি
এ যেন মাছের রাজা কিংবা জল দানব। গাবতলীর ঐতিহ্যবাহী পোড়াদহ মেলায় উঠেছিল এমনই দুই বাঘাইর। একটি ওজন একশ কেজি, অপরটি আশি। আর হরেক রকম মাছে সঙ্গে উঠেছিল ১০ কেজি ওজনে এক মিষ্টি। তাও নাকি গত বছরের তুলনায় অর্ধেক। মেলা একশ কেজির বাঘাইর বিক্রি হয়েছে ১ লাখ ২০ হাজার টাকা আর মিষ্টি দাম হাঁকিয়েছেন চার হাজার টাকা। এ মেলায় মাছ, মিষ্টি, ফার্নিচার, বড়ই, পান সুপারি, তৈজসপত্র, খেলনা থাকলেও কালক্রমে মাছের জন্য বিখ্যাত হয়ে আসছে।
গতকাল বুধবার থেকে শুরু হওয়া বগুড়ার পোড়াদহ মেলা পাশ্ববর্তী উপজেলাসহ আশেপাশের বিভিন্ন জেলা থেকে মানুষের মিলনমেলায় পরিণত হয়েছে। পোড়াদহ মেলাকে ঘিরে আশপাশে প্রায় ২০ গ্রামের মানুষ মেয়ে ও মেয়েজামাইকে নিমন্ত্রণ দিয়ে আপ্যায়ন করে থাকে। এ কারণে স্থানীয়রা আবার এ মেলাকে ‘জামাইমেয়ে’ বলে থাকেন।
সরেজমিনে দেখা গেছে, গাবতলীর মাছ ব্যবসায়ী ভোলা, কাশেম, লাল মিয়া, নান্নু, জলিল ও মোস্তাফা বিশাল আকৃতির মাছ মেলায় নিয়ে এসেছেন। যমুনা নদীর ৮০ কেজি ওজনের বাঘাইড় কেটে বিক্রি করছেন ১২শ টাকা কেজি দরে। আর একশ কেজি ওজনের বাঘাইড় মাছটি বিক্রি হবে ১২শ ৫০ টাকা কেজিতে। এছাড়া এই মেলায় ১৭ কেজি ওজনের বোয়াল মাছের দাম হাঁকানো হয়েছে প্রতি কেজি ১৬শ টাকা, ১৫ থেকে ১৮ কেজি ওজনের কাতলা মাছ ২২’শ টাকা কেজি, আট থেকে ১০ কেজি ওজনের কাতলা মাছ ১২ ’শ টাকা, ১০ কেজির উপরে আইড় মাছ ১২ ’শ থেকে ১৫’শ টাকা কেজিতে বিক্রি হচ্ছে। মেলায় আরও বিক্রি করেত দেখা গেছে, রুই, পাঙ্গাস, ব্রিগেড অন্যান্য জাতের মাছ। তবে শত কেজির ওজনের বাঘাইড় কেউ এককভাবে না ক্রয় করলে কেটে বিক্রি করা হচ্ছে। সকাল ১০টার দিকে ৮০ কেজি ওজনের বাঘাইড় মাছ কেটে বিক্রি শুরু হয়।
আরো মিষ্টির দোকান ঘুরে দেখা যায়, মেলার জন্য ১০ কেজি ওজনের মাছ আকৃতির মিষ্টি তৈরি করেছেন ব্যবসায়ী আব্দুল লতিফ। মহিষাবান এলাকার ব্যবসায়ী লতিফের দোকানে এ মিষ্টির দাম হাকানো হয়েছে চার হাজার টাকায়। এছাড়া এক, দুই, তিন ও চার কেজি ওজনের মিষ্টিও মেলায় পাওয়া যাচ্ছে বিভিন্ন নামে। সেই সঙ্গে এক দোকানো দেখা মিলেছে প্রায় দুইশ মন মিষ্টি।
স্থানীয় সমাজসেবক লুৎফর রহমান সরকার স্বপন জানান, ‘এ মেলাকে কেন্দ্র জামাই মেয়েসহ আত্মীয় স্বজনদের দাওয়াত দেওয়া হয়। আমাদের এখানে ঈদে দাওয়াত না দিলে কোনো সমস্যা নেই, কিন্তু পোড়াদহের মেলায় দাওয়াত না দিলে চলে না।’
"