বগুড়া প্রতিনিধি

  ১০ ফেব্রুয়ারি, ২০১৮

শীতের সঙ্গে কমেছে কুয়াশার দাপট স্বস্তিতে বগুড়ার রোবোচাষিরা

বগুড়ায় শীতের সাথে সাথে কমেছে কুয়াশার দাপট। আর এতে ব্যস্ততাও বেড়েছে বগুড়ার বোরোচাষিদের। ‘কোল্ড ইনজুরিতে’ শঙ্কিত চাষিদের মাঝে ফিরেছে স্বস্তি। জেলার বিভিন্ন উপজেলার চাষিরা বলছেন, বোরোর বীজতলার যতটা ক্ষতির আশঙ্কা করেছিল ততটা ক্ষতি হয়নি। এখন বোরোবীজ সংগ্রহ করে চাষে মনোযোগী জেলার কৃষকরা।

বগুড়া কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতরের উপপরিচালক প্রতুল চন্দ্র সরকার প্রতিদিনের সংবাদকে জানান, আবারো ব্যস্ততা বেড়েছে কৃষকপাড়ায়। আমন ধান কাটা মাড়াইয়ের পর ধান বিক্রি শেষ করে বোরো বীজতলা করে জমি তৈরির শেষে রোপণে ব্যস্ত হয়ে পড়েছেন বগুড়ার বোরোচাষিরা। বগুড়ার ১২ উপজেলার চাষিরা বোরোর জমি নিয়ে ব্যস্ততা পার করছে। জেলায় এবার প্রাথমিকভাবে এক লাখ ৯০ হাজার হেক্টর জমিতে বোরো চাষের জমি নির্ধারণ করা হয়েছে। গেল আমন মৌসুমে ধানের বাম্পার ফলন ও ভালো দাম পাওয়ায় এবার বোরো চাষে কোমর বেঁধে মাঠে নেমেছেন বগুড়া অঞ্চলের বোরো চাষিরা। স্থানীয় কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতর সূত্রে জানা যায়, জেলায় আমন ধান কাটা মাড়াই শেষ। ধান কেনাবেচাও হয়েছে। সরকারিভাবে ধান চাল সংগ্রহ অভিযান চলছে। আমন চাষিরা এবার বোরো চাষে নেমেছেন। জেলার ১২ উপজেলার বোরো চাষিরা বীজ তৈরি করেছে। বীজ তৈরির সময়ে জেলায় অতিমাত্রার শীত ও কুয়াশার কারণে বোরো চাষিরা বীজতলা ‘কোল্ড ইনজুরির’ শংকা করেছিল। তবে হঠাৎ কুয়াশা কেটে যাওয়া ও রোদের দেখা দেওয়ার কারণে স্বস্তিতে রয়েছে জেলার চাষিরা। বীজতলা সতেজ থাকায় বীজ সংগ্রহ করে জমিতে রোপণ শুরু করেছে। জেলায় এবার ৪ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত জেলায় ৫২ হাজার ২৬০ হেক্টর জমিতে চাষ হয়েছে। বোরো চাষ এখনো চলমান রয়েছে। চাল আকারে ফলন ধরা হয়েছে প্রতি হেক্টরে ৪.৫ মেট্রিক টন। আর ধান আকারে ধরা হয়েছে ৬.৫ মেট্রিক টন। জেলা কৃষি বিভাগ এবার আশা করছে ৭ লাখ ৫৪ হাজার মেট্রিক টন ধান আকারে ফলন পাওয়া যাবে। তবে কিছু কিছু এলাকায় চাষিরা উন্নতজাত বা আগামজাতের চাষবাস করেছেন। সেসব স্থানে বোরোর চাষ আগেই শুরু হয় আবার ফলনও আগাম পাওয়া যায়। আগাম চাষে দাম ভাল পাওয়ার আশায় চাষিরা এ চাষ মুখি হয়। এতে যেমন ভাল দাম পায় চাষিরা তেমনি ফলন পায় দিগুণ। বগুড়ার আদমদিঘি, তালোড়া, দুপচাঁচিয়া, কাহালু উপজেলায় চাষিরা নিচু এলাকায় বোরোর বীজতলা তৈরি করে এখন জমি চাষ শুরু করেছেন।

বগুড়ার নন্দীগ্রাম উপজেলা সদরের ব্যবসায়ী নুরুল আমিন বাচ্চু প্রতিদিনের সংবাদকে বলেন, বর্তমানে আধুনিক তথ্য প্রযুক্তির যুগে প্রবেশ করছেন স্থানীয় কৃষকরা। গত দুই-তিন বছর যাবত তারা সল্প পরিসরে কৃষি অফিসের পরামর্শে আধুনিক ও ঝুঁকিমুক্ত বীজতলা তৈরি শুরু করেছে। এতে করে একদিকে যেমন বোরো ধানের চারাগুলো ‘কোল্ড ইনজুরি’ মুক্ত হয়। তৈয়বপুর গ্রামের কৃষক হোসেন আলী জানান, কৃষকরা বোরো আবাদের জন্য বীজতলা তৈরির পর কুয়াশার কবলে পড়ে। দুই সপ্তাহ পর কুয়াশা কেটে গেছে। এখন বীজ সংগ্রহ করে জমিতে রোপণ শুরু হয়েছে।

বগুড়ার শেরপুর উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা খাজানুর রহমান জানান, উপজেলায় ২০ হাজার ৫০০ হেক্টর জমিতে বোরো চাষের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়। ইতিমধ্যে প্রায় পাঁচ হাজার হেক্টর জমিতে বোরো ধানের চারা লাগানো সম্পন্ন হয়েছে। শেরপুর উপজেলার বরেন্দ্রখ্যাত বেশ কয়েকটি ইউনিয়নের বিভিন্ন গ্রাম ঘুরে দেখা যায়, কাকডাকা ভোরে কৃষকরা বেরিয়ে পড়ছেন। ছুটে চলছেন নিজ নিজ জমিতে। জমি তৈরিতে ব্যস্ত সময় পার করছেন তারা। পাওয়ার টিলারের সাহায্যে জমি চাষ করছেন। আবার কেউ কেউ রাসায়নিক সার ছিটাচ্ছেন। সমানতালে জমিতে ধান রোপণের কাজও চলছে। এদিকে বীজতলায় আরেকদল কৃষককে ব্যস্ত দেখা যায়। বগুড়ার শেরপুর উপজেলার মামুরশাহী গ্রামের কৃষক জাহিদুল ইসলাম, সাধুবাড়ী গ্রামের গোলাম রব্বানী ও বাগড়া চকপোতা গ্রামের আবু বকর ছিদ্দিক জানান, বর্তমানে ধানের বাজার কৃষকের অনুকূলে রয়েছে। আমন মৌসুমের শুরু থেকেই তাদের উৎপাদিত ধানের ভালো দাম পেয়েছেন। এবার বোরো চাষ হওয়ার পর বাজারে দাম কেমন পাওয়া যাবে তা এখনই বলা যাচ্ছে না। বগুড়ার শেরপুর উপজেলায় স্থানীয় বাজারে এখন বিভিন্নজাতের ধান বিক্রি হচ্ছে।

"

প্রতিদিনের সংবাদ ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন
আরও পড়ুন
  • সর্বশেষ
  • পাঠক প্রিয়
close
Error!: SQLSTATE[42S02]: Base table or view not found: 1146 Table 'protidin_sangbad.news_hits_counter_2020_04_07' doesn't exist
Error!: SQLSTATE[42S02]: Base table or view not found: 1146 Table 'protidin_sangbad.news_hits_counter_2020_04_07' doesn't exist