সিংড়া (নাটোর) প্রতিনিধি

  ২২ জানুয়ারি, ২০১৮

চলনবিলে পুরোদমে চলছে ইরি-বোরো রোপণ

ঘন কুয়াশা ও তীব্র শীত

শস্য ভান্ডার নামে পরিচিত সর্ববৃহৎ বিল- চলনবিল। এ বিলে বিভিন্ন ফসলের চাষাবাদ হলেও প্রধান ফসল ইরি-বোরো ধান। বিলের পানি নামতে সময় লাগায় বীজতলা তৈরি ও চারা প্রস্তুতে কিছুটা সময় লাগার পরেও চলনবিলে এখন পুরোদমে ইরি-বোরো ধান রোপণ কাজে ব্যস্ততা বেড়েছে কৃষকের। পৌষের মাঝামাঝি থেকে মাঘের এই তীব্র শীত আর কুয়াশা যেন প্রকৃতির নয় কৃষকের জন্য বড় বাধার কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে। মাঝে মাঝে দিনের শেষে সূর্যের দেখা মিললেও উত্তরের হিমেল হাওয়ার কারণে শীত বাড়ছে। গরম পোষাক পরার পরেও বাইরে বের হওয়া যেখানে কষ্টকর সেখানে ঘনকুয়াশা ও তীব্র শীতের মাঝে সকাল থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত চলনবিল এলাকার কৃষকরা ইরি-বোরোর চারা রোপন যেন এক নজির সৃষ্টি করছে। পৌষের প্রথমে যে সকল কৃষক জমিতে ইরি-বোরো চারা রোপন করেছে টানা শৈত্য প্রবাহের কারণে অনেক জমির ধানের চারা নষ্ট হওয়ার উপক্রম হয়েছে এবং বীজতলার অনেক ধানের চারা হলুদ আকার ধারণ করেছে। প্রকৃতির এইসব সমস্যা উপেক্ষা করে কেউবা জমি প্রস্তুত, কেউবা বীজতলা থেকে চারা উত্তোলন, কেউবা জমিতে চারা রোপণের কাজে ব্যস্ত হয়ে পড়েছে।

চলনবিলে এ বছর ১ লাখ ৭৬ হাজার ৬৮২হেক্টর জমিতে ইরি বোরো রোপনের সম্ভাবনা রয়েছে। চলবিলের বিভিন্ন কৃষি অফিসের সূত্রে জানা গেছে, সিংড়া উপজেলায় ৩৯ হাজার ৬১০ হেক্টর, রায়গঞ্জে ২০ হাজার ৫৭৬ হেক্টর, উল্লাপাড়ায় ২৮ হাজার ৭০০ হেক্টর, তাড়াশ ২১ হাজার ৯২০ হেক্টর, শাহাজাদপুরে ২২ হাজার ৮১ হেক্টর, গুরুদাসপুরে ৪ হাজার ৩১৫ হেক্টর, চাটমহরে ৮ হাজার ৫১০ হেক্টর, ভাঙ্গুড়া ৬ হাজার ২২০ হেক্টর, নলডাঙ্গায় ৬ হাজার ৫০০ হেক্টর ও আত্রাই উপজেলায় ১৮ হাজার ২৫০ হেক্টর জমিতে বরো-ধানের চারা রোপণের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ হয়েছে।

সিংড়া উপজেলার আয়েশ গ্রামের কৃষক ওয়াজেদ মোল্লা বলেন, চলনবিলের বর্ষার পানি নামতে সময় লাগায় এবছর বোরো চাষে পিছিয়ে পড়েছি। একটানা কুয়াশা ও ঠান্ডার কারণে রোপনকৃত কিছু জমি নষ্ট হচ্ছে।

গুরুদাসপুর উপজেলার খুবজিপুর ইউনিয়নের বিলশা গ্রামের কৃষক শহিদুল ইসলাম জানান, ঘন কুয়াশা ও তীব্র শীতের মাঝে ও এবার ইরি-বোরো ধান রোপন করছি। আবহাওয়া যদি একটু ভালো হয় তাহলে ফলনও ভালো হবে।

সিংড়া চলনবিলের মানিকদিঘী গ্রামের দিনমজুর ফিরোজ বলেন, এখন আমাদের আয়ের মৌসুম। ঘন কুয়াশা ও তীব্র শীতের মাঝে সকাল থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত আমরা ইরি-বোরো ধান লাগানোর কাজ করছি। কারণ, শীতের কাছে হার মানলে আমাদের পরিবার নিয়ে পথে বসতে হবে।

সিংড়া উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা সাজ্জাদ হোসেন বলেন, চলনবিল মূলত নিচু অঞ্চল, বর্ষার পানি নামতে সময় লাগায় কৃষকরা ইরি-বোরো আবাদে কিছুটা পিছিয়ে পড়েছে এবং কৃষি অফিসের পরামর্শে লাইন লোগো এই পদ্ধতির মাধ্যমে ইরি-বোরো ধান রোপন করছে কৃষকরা। এই পদ্ধতিতে কৃষদের আগ্রহ বাড়ছে।

আত্রাই উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা কে এম কাওসার হোসেন বলেন, চলনবিলে পানি নামতে সময় লাগায় গম ও সরিষাসহ বিভিন্ন ফসলের চাষাবাদ কম হলেও এবছর বোরো ধান লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে বেশি পরিমাণ চাষের সম্ভবনা রয়েছে।

"

প্রতিদিনের সংবাদ ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন
আরও পড়ুন
  • সর্বশেষ
  • পাঠক প্রিয়
close
Error!: SQLSTATE[42S02]: Base table or view not found: 1146 Table 'protidin_sangbad.news_hits_counter_2020_04_07' doesn't exist
Error!: SQLSTATE[42S02]: Base table or view not found: 1146 Table 'protidin_sangbad.news_hits_counter_2020_04_07' doesn't exist