শাজাহানপুর (বগুড়া) প্রতিনিধি
শাজাহানপুরে ভাটার আগুনে পুড়ছে উর্বর মাটি
বগুড়া শাজাহানপুর উপজেলায় সরকারী নিয়মনীতির তোয়াক্কা না করে বেড়েই চলেছে ইটভাটা। এতে কমে যাচ্ছে কৃষি জমি ও দূষিত হচ্ছে পরিবেশ। এসব ইটভাটায় ব্যাপক অনিয়ম থাকলেও পদক্ষেপ নেই সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের। জানা গেছে, সরকারি বিধি-নিষেধ অমান্য করে শাজাহানপুর উপজেলায় গড়ে উঠেছে ৫৪টি ইটভাটা। ইটভাটাগুলো স্থানীয় সরকার নির্মিত রাস্তার পাশেই তৈরি করা হয়েছে। প্রায় সব ইটভাটা জনবহুল এলাকায় অবস্থিত। এসব ইটভাটায় পোড়ানো হচ্ছে কৃষি জমির ঊর্বর মাটি। উপজেলার সাজাপুর, পাততেখুর, সুজাবাদ, চকজোড়া, মালিপাড়া, এলাকার কৃষি জমি থেকে এস্কেভেটর মেশিন বসিয়ে মাটি উত্তোলন করা হচ্ছে। এতে কৃষি জমি কমে যাচ্ছে এবং হুমকির মুখে পড়ছে পরিবেশ। মাটি বহনকারী ট্রাকগুলোর কারণে ক্ষতিগ্রস্থ হচ্ছে রাস্তা। এলাকাবাসী চরম ভোগান্তিতে থাকলেও ভাটার মালিকরা প্রভাবশালী হওয়ায় তারা কিছুই বলতে পারছেন না।
জসিম উদ্দিন প্রামানিক, ইকবাল হোসেনসহ আরও অনেক কৃষক অভিযোগ করে বলেন, ইটভাটার কারণে ফসলি জমির পরিমাণ কমে যাচ্ছে। ভাটার আগুনের তাপ ও চিমনির গ্যাসের কারণে ফসল পুড়ে যায়। এতে তাদের ব্যাপক ক্ষতির সম্মুখীন হতে হয়।
নাম প্রকাশ না করার শর্তে একাধিক উপজেলাবাসী জানিয়েছেন, উৎকোচ ও রাজনৈতিক প্রভাবে পরিবেশ অধিদপ্তর থেকে ছাড়পত্র নিয়ে পরবর্তিতে জেলা প্রশাসক কার্যালয় থেকে লাইসেন্স নিয়ে ইটভাটা গড়ে তোলা হচ্ছে। এতে হাজার হাজার মানুষের ক্ষতি করা হলেও প্রশাসনের পক্ষ থেকে- এর কোনও প্রতিকার করা হচ্ছে না। কৃষি জমি থেকে মাটি উত্তোলনের কারণে ওই জমিসহ আশপাশের জমির ব্যাপক ক্ষতি হচ্ছে।
সরকারী আযিযুল হক কলেজের পরিবেশ ও ভূগোল বিভাগের প্রভাষক আবু সাঈদ জানান, ইট ভাটায় কয়লা পুড়ানোর কারনে কার্বনডাই অক্সাইট ও মনো অক্সাইট নির্গত হচ্ছে। এতে শ^াসকষ্ট রোগীর পরিমাণ বাড়ছে এবং জীব-বৈচিত্র হ্রাস পাচ্ছে।
কৃষিতে ইট ভাটার প্রভাব সম্পের্কে জানতে চাইলে উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা সোহেল মোহাম্মদ সামস্ উদ্দিন ফিরোজ জানান, জমির উপরি ভাগের উর্বর মাটি না থাকলে আগামী ১০বছর ওই জমিতে ফসল হবে না। উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার বিষয়টি সম্পর্কে গুরুত্ব দিয়ে পদক্ষেপ নেওয়া উচিৎ।
"