কলাপাড়া (পটুয়াখালী) প্রতিনিধি

  ১৪ জানুয়ারি, ২০১৮

মধুখালীর ম্যানগ্রোভ বনাঞ্চল উজাড় কাটা হয়েছে কয়েকশ গাছ

কলাপাড়া উপজেলার পূর্ব-মধুখালীর লেকের পাড়ে বেড়িবাঁধের বাইরের অন্তত দুই শ’ ম্যানগ্রোভ প্রজাতির গাছ কেটে ফেলা হয়েছে। এর মধ্যে অর্ধশত গাছ রয়েছে প্রাচীন। স্থানীয়দের ভাষ্যমতে, যার বাজার মূল্য প্রায় তিন লক্ষাধিক টাকা। লেকের পাড়ের মনোরম এ বনাঞ্চলের গাছ কাটার কারণে এলাকাটি পরিণত হয়েছে বিরান ভূমিতে।

সরেজমিনে গিয়ে দেখা গেছে, ৬০-৭০ বছর আগে প্রাকৃতিকভাবে মধুখালীর সংযোগ নদীরপাড় ভরাট হওয়া চরে ম্যানগ্রোভ প্রজাতির কেওড়া, বাইন ও গেওয়াসহ গুল্মজাতীয় গাছপালা জন্মায়। সরকার এই বাগানের মালিক। ভয়াল ঘূর্ণিঝড় সিডরের জলোচ্ছ্বাসের ঝাপটা প্রতিরোধ করেছিল এই গাছগুলো। অক্ষত রয়েছে বেড়িবাঁধ। মধুখালীর দুইপাড়েই দীর্ঘ এলাকা নিয়ে এমন প্রাচীন ম্যানগ্রোভ গাছ রয়েছে হাজার হাজার। কিন্তু মধুখালী ব্রিজের দক্ষিণ দিকে দুই দিনে বিশাল আকৃতির ৫০/৬০টি প্রাচীন বাইন ও কেওড়া গাছসহ ছোটবড় দুই শতাধিক গাছ কেটে ফেলা হয়েছে। যা ট্রলার বোঝাই করে আবার পাচার করা হচ্ছে।

স্থানীয় একাধিক ব্যাক্তির অভিযোগ, হাসান মাহমুদ নামের এক ব্যক্তি এই গাছ কেটে বনাঞ্চল উজাড় করে মাছের ঘেরের পরিকল্পনা করেছেন। বনবিভাগ নাকি তাকে গাছ কাটার অনুমতি দিয়েছেন। অথচ জলোচ্ছ্বাসের কবল থেকে মানুষের জীবন ও সম্পদ রক্ষার সবুজ দেয়াল বনাঞ্চল উজাড় করে সরকারের কয়েক লাখ টাকার গাছ কেটে নিয়ে গেলেও বনবিভাগের বিট কর্মকর্তা রয়েছেন নীরব। তবে সেনা সদস্য ও মধুখালীর বাসিন্দা হাসান মাহমুদ এ বনাঞ্চলকে একজন বন্দোবস্ত গ্রহীতার কাছ থেকে ক্রয় করেছে বলে দাবি করেন।

মোসলেম হাওলাদার ছেলে মোস্তফা হাওলাদার জানান, এসএ ১৯৮ নম্বর খতিয়ানের ৫০০১/৬০৮৬ নম্বর দাগের বেড়িবাঁধের বনাঞ্চলকে চাষযোগ্য কৃষিজমি দেখিয়ে স্থানীয় মোসলেম আলী হাওলাদারের নামে বন্দোবস্ত দেওয়া হয়। যা ১৯৮০ সালের ২২ অক্টোবর দলিল করে দেওয়া হয়েছে। তিনি অভিযোগ করে বলেন, সেনাবাহিনীর সদস্য মেহেদী হাসান তাদের কাছ থেকে কোন দলিল নেননি। তিনি দাবি করেন, ভুয়া ওয়ারিশ দিয়ে দলিল করে জমির বদলে সরকারি গাছ কাটছেন। স্থানীয়রা এতে জড়িতদের বিচার দাবি করেছেন।

অভিযুক্ত হাসান মাহমুদ জানান, তিনি বনবিভাগের পটুয়াখালীস্থ বিভাগীয় কর্মকর্তার কাছ থেকে গাছ কাটার জন্য অনুমতি চেয়েছেন। অনুমতি পেয়েছেন কিনা তা জানেন না। কেন আগেভাগেই গাছ কেটেছেন, এর কোন উত্তর মেলেনি।

বনবিভাগের মহিপুর রেঞ্জ কর্মকর্তা হারুন অর রশিদ জানান, গাছ আমাদের নয়। আমরা এ সংক্রান্ত অনুমতি দিতে পারিনা। শুধু একটি মতামত দিয়েছি।

উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) খন্দকার রবিউল ইসলাম জানান, তিনি ঘটনাস্থলে তহশীলদার পাঠিয়েছেন। প্রয়োজনীয় আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে।

পটুয়াখালী বিভাগীয় বনকর্মকর্তা অজিত কুমার রুদ্র জানান, বনবিভাগ কাউকে গাছ কাটার কোন অনুমতি দেয়নি। বিষয়টি তদন্ত করে প্রয়োজনীয় উদ্যোগ নেওয়া হচ্ছে।

"

প্রতিদিনের সংবাদ ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন
আরও পড়ুন
  • সর্বশেষ
  • পাঠক প্রিয়
close
Error!: SQLSTATE[42S02]: Base table or view not found: 1146 Table 'protidin_sangbad.news_hits_counter_2020_04_07' doesn't exist
Error!: SQLSTATE[42S02]: Base table or view not found: 1146 Table 'protidin_sangbad.news_hits_counter_2020_04_07' doesn't exist