সবুজ হোসেন, নওগাঁ
‘গৃহবধূ কামরুন নাহার এখন সফল কেঁচো চাষি’
‘টেলিভিশনে একদিন কেঁচো চাষের খবর দেখার পর থেকে আগ্রহ তৈরী হয়। কেঁচো চাষের পদ্ধতি যদি হাতেকলমে শিখতে পারতাম। সত্যি এ পদ্ধতিটির উপর প্রশিক্ষণ নিয়ে এখন কেঁচো চাষ করছি। বলতে পারেন একজন সফল কেঁচো চাষী। তবে প্রথমে বাড়ির কেউ উৎসাহী ছিলেন না।’ কথাগুলো বলছিলেন নওগাঁর মান্দা উপজেলার বিজয়পুর গ্রামের মৃধাপাড়ার লালমিয়ার স্ত্রী গৃহবধু কামরুন নাহার। মাধ্যমিক পর্যন্ত পড়াশুনা করেছেন। এলাকায় তিনি এখন কৃষাণী হিসেবে পরিচিত পেয়েছেন। বাড়িতেই কেঁচো খামার গড়ে তুলেছেন।
২০১৪ সালে একটি বেসরকারি সংস্থা (সিসিডিবি) থেকে গ্রামে কেঁচো চাষের উপর একদিনের প্রশিক্ষণ হয়। সেখানে ৩৫জন নারীকে প্রশিক্ষণ দেয়া হয়। তাদের মধ্যে তিনিও ছিলেন। ওই সংস্থা থেকে একটি করে ডাবর (মাটির বড় পাত্র) ও কিছু কেঁচো ও উপকরণ দেয়া হয়। এখন কেঁচো সার তৈরীর প্রধান কাঁচামাল গোবর আসে তার দুইটি গাভী থেকে।
কেঁচো সারগুলো তিনি নিজের কাজেই ব্যবহার করেন। যেমন বেগুন, লাউ, আদা, হলুদ, সীম, মরিচ চাষে এবং নারকেল গাছের গোড়ায় ব্যবহার করেন। তবে এ পর্যন্ত প্রায় ৭ হাজার টাকার কেঁচো বিক্রি করেছেন। আরো প্রায় চার হাজার টাকার মতো বিক্রি হবে। এছাড়া কেঁচো সার ১০ টাকা কেজি হিসেবে প্রতিবেশিদের কাছে বিক্রি করেছেন যেটা খুবই সামান্য। তার এ পদ্ধতি দেখে এখন অনেকেই কেঁচো সার তৈরীতে আগ্রহ প্রকাশ করছেন। এ পর্যন্ত প্রায় ১৫ জন অনুপ্রাণিত হয়েছে।
গৃহবধু কামরুন নাহার ভবিষৎ পরিকল্পনায় বলেন, কেঁচো চাষ আরো বড় পরিসরে করার জন্য আর্থিক সহযোগীতাও দরকার। এলাকার কৃষকরা সবজি ও ধানের আবাদে রাসায়নিক সারের পরিবর্তে কেঁচো সার বা জৈব সার ব্যবহারে আগ্রহী হয় সেই লক্ষ্যে কাজ করে যাব।
মান্দা উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা জাহাঙ্গীর আলম বলেন, উপজেলায় বিক্ষিপ্ত ভাবে ছড়িয়ে ছিটিয়ে অনেকেই কেঁচো চাষ করছেন। বাণির্জিক ভাবে এখনো চাষ শুরু হয়নি। তবে আগামীতে কেঁচো চাষ আরো বৃদ্ধির লক্ষে কৃষকদের উদ্বৃদ্ধ করা হবে। সরকারি ভাবে এ পর্যন্ত ২০ সেট (৩টি রিং স্লাব, কেঁচো, খাদ্য) কেঁচো চাষের সরঞ্জাম বিতরণ করা হয়েছে।
"