এনামুল হক বাদশা, সিংড়া (নাটোর)
চলনবিলে এখনো বর্ষার ক্ষত
অসময়ে পানি নামায় গমের মৌসুম হারিছেন কৃষক
বিকল্প চাষাবাদ নিয়ে কৃষকদের মধ্যে আছে মিশ্র প্রতিক্রিয়া
স্বাভাবিক বর্ষার পানি মঙ্গল বয়ে আনলেও, গত বছরের অস্বাভাবিক ভয়াবহ বর্ষার মাসুল গুনছে চলনবিলের চাষীরা। এ বছর সারা দেশের মতো ভয়াবহ বন্যার পানি নেমে যেতে অতীতের বছরগুলোর চেয়ে এবছর বেশি সময় লাগায় এ অঞ্চলের গম চাষিরা বীজ বুনতে পারেননি। গমের মৌসুম পাড় হয়ে যাওয়ায় ক্ষতির মুখে পড়বে তারা। যা ওই অঞ্চলের গম উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্র অর্জনের ব্যর্থ হবে। এদিকে সময়মত পানি না নামায় গম চাষের মৌসুম হাড়ানোর পেছনে চলনবিল এলাকার অপরিকল্পিত বাঁধ ও রাস্তা নির্মাণে এ সমস্যার সৃষ্টি হতে পারে বলে অনেকেই আশংকা করছেন।
স্থানীয় কৃষকদের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, গত নভেম্বর মাস থেকে ৫ ডিসেম্বর পর্যন্ত গম চাষের ভরা মৌসুম ছিল। মৌসুম শেষ হয়ে গেলেও একখনও জমি তৈরি করতে পারেনি অনেক কৃষক। তবে দু-একজন কাঁদা পানির মধ্যে জমিতে গম বিজ ছিটালেও, ওই পদ্ধতি তেমন ভাল উপকারে আসেনি। ফলে জমি শুকানোর আশা থাকা কৃষকদের সম্প্রতি কয়েকদিনের হালকা থেকে মাঝারি ধরনের বৃষ্টিতে শেষ আশাটুকুও ভেঙ্গে গেছে। বৈরি আবহাওয়ার মধ্যেদিয়ে গম চাষ অব্যহত ও এখনও অনেক জমি চাষের উপযোগি হয়নি।
চলনবিল এলাকার কৃষি অফিসগুলোর তথ্য মতে, এবছর চলনবিল এলাকায় গম চাষের লক্ষ্য মাত্রা ছিল ৯ হাজার ৯১৫ হেক্টর। এ পর্যন্ত চাষ হয়েছে ৬ হাজার ৮৬০ হেক্টর। এর মধ্যে সিংড়া উপজেলায় ৬০০ হেক্টর, তারাশে ২২০, উল্লাপাড়ায় ২৫০, আত্রাইয়ে ৩১০, গুরুদাসপুরে ১৮০, ভাংগুড়ায় ৪৮০, শাহাজাদপুর ৯৫০ এবং ফরিদপুর উপজেলায় সর্বোচ্চ ১ হাজাা ৩৫০ হেক্টর জমিতে গম চাষ হয়েছে।
সরেজমিনে ঘুরে ও বিভিন্ন সূত্রে জানা গেছে, চলনবিল সংলগ্ন সিংড়ার হিয়ালা চর, তাড়াশের মাদিয়াবিনদ সকুনা, আত্রই মহাদিঘি, সাহেবগঞ্জ, গুরুদাসপুরের ঘুবজিপুর শ্রৗপুর, ফরিদপুরের চিঠুলিয়া, পার ভাংগুড়া ম-তোষ সহ চলনবিলের বিভিন্ন এলাকার গম চাষ হয়েছে। গম চাষের মৌসুম না থাকলেও এখনও অনেক কৃষক গম চাষ করলেও কৃষকদের মাঝে বিকল্প চাষাবাদ নিয়ে রয়েছে মিশ্র প্রতিক্রিয়া। বিকল্প চাষ হিসাবে ধান, ভুট্টা, বাদাম, মিষ্টি আলু, মশুর কালাই সহ বিভিন্ন ধরনের শাকসবজি চাষাবাদের কথা ভাবছে কৃষক।
সিংড়া উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা সাজ্জাদ হোসেন বলেন, চলনবিল মূলত নিচু অঞ্চল, তাই বর্ষার পানি নামতে সময় লাগায় এ বছর গম চাষ কিছুটা কম হয়েছে। তারাশ কৃষি কর্মকর্তা সাইফুল ইসলাম বলেন, যেহেতু গমের মৌসুম আর নেই সেহেতু বিকল্প চাষাবাদের পরামর্শ দেওয়া হয়েছে কৃষকদের।
"