সুমন কর্মকার, ফকিরহাট (বাগেরহাট)

  ০৩ জানুয়ারি, ২০১৮

ভোলা নদীর দুই পার দখল করে প্রভাবশালীদের ব্যবসা প্রতিষ্ঠান

বাগেরহাটের ফকিরহাট উপজেলার পানি উন্নয়ন বোর্ডের (পাউবো) অধিগ্রহণকৃত বিপুল পরিমানে জায়গা জবর-দখলের প্রতিযোগীতায় নেমেছে শুভদিয়া ইউনিয়ন ও পার্শবর্তী রামপাল উপজেলার কতিপয় প্রভাবশালী। পাউবোর অবহেলা ও উদাসীনতার সুযোগে তারা গড়ে তুলেছে বিভিন্ন ব্যবসা প্রতিষ্ঠান। এতে একদিকে সরকারী বিপুল পরিমাণ খাস জমি বেহাত হওয়ার উপক্রম হয়েছে, পাশাপাশি মৃত প্রায় ভোলা নদী তার নব্যতা ও ¯্রােত হারিয়ে চরণ ভূমিতে পরিণত হওয়ার আশংকা রয়েছে। এ অবস্থা চলতে থাকলে আগামী বর্ষায় পানি চলাচলের পথ বন্ধ হয়ে তিন উপজেলায় বন্যার রূপ ধারণ করতে পারে। অতিদ্রুত অবৈধ জবর দখলকারীদের উচ্ছেদ পূর্বক আইনগত পদক্ষেপ গ্রহন করা না হলে রাতারাতি বাকি নদীর চর দখল হয়ে যাওয়ার সম্ভবনা রয়েছে বলে স্থানীয়রা জানায়।

অনুসন্ধানে জানা যায়, ফকিরহাট উপজেলা সদর থেকে দক্ষিণের শেষ সীমানা শুভদিয়া ইউনিয়নের গৌরম্ভা বাজা। এই বাজারের পাশ দিয়ে দক্ষিণের সুন্দরবনের দিকে চলে গেছে ভোলা নদী। এক সময় এই নদী দিয়ে আগে লঞ্চ-ইস্টিমার-ট্রলার সহ বড় বড় নৌযান চলাচল করত। কিন্তু কালক্রমে বিশাল নদীটি মরে গিয়ে বিপুল পরিমানে জমিতে চর জেগেছে। সেই চরের জায়গা পাউবো অধিগ্রহন করেন। শুধু তাই নয়, নদীর পানি খালে সরবরাহ করতে একটি সুইচগেট নির্মাণ করেন পাউবো। সেই সুইচ গেটটি দেখাশোনা করার জন্য সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ একটি একতলা পাকা ভবন নির্মাণ এবং একজন পাহারাদার নিয়োগ করেন। এই অবস্থা দীর্ঘদীন চলার পর সর্বশেষ বিএনপি সরকারের আমলে রাতারাতি দখল হয়ে যায় সেই এক তলা ভবনটি।

সরেজমিনে ঘুরে গিয়ে দেখা গেছে, পাউবো বিপুল পরিমানে সরকারী খাস জায়গা বেড়া দিয়ে ঘিরে এবং নদীর পলি কেটে ভরাট করে স’মিল, দোকানপাট, ব্যবসায় প্রতিষ্ঠান গড়ে তোলার দখলের প্রতিযোগীতা চলছে। এলাকার একটি মহল দীর্ঘকাল ধরে সরকারি বিপুল পরিমাণ জায়গা কোন প্রকার বন্দবস্ত ছাড়াই দখল করে ফেলেছেন।

স্থানীয় সমাজসেবক জি এম মহিবুল ইসলাম, শেখ হায়াত মাসুদ ও ইউপি সদস্য প্রদিশ অধিকারীর সাথে আলাপকালে জানান, বিগত সরকারের সময়ে এলাকার একটি সুবিধাবাদী গ্রুপ নদীর চর দখল প্রতিযোগীতা শুরু করেন। তার পর হতে রাতারাতি বেড়া দিয়ে সেখানে একের পর এক বিভিন্ন ব্যক্তি দখলে নিচ্ছে। এদের কারণে নদীটি সংকুচিত হয়ে ছোট্ট হচ্ছে। অতিদ্রুত এদের উচ্ছেদ করা না হলে ভোলা নদীটি তার নাব্যতা হারিয়ে বিলীন হয়ে যাবে।

শেখ হেলাল উদ্দীন ডিগ্রী মহা-বিদ্যালয়ের অধ্যক্ষ বটুগোপাল দাশ বলেন, ২০০০ সালে যখন কলেজটি প্রতিষ্ঠিত হয়েছিল, তখন কোন দখলকারী ছিল না, সেটি ছিল পাউবোর আওতাধীন। তারা যে লীজ দিয়েছেন তাও কোন দিন শুনিনি। অথচ রাতারাতি মরা নদীর চর দখল করে বিভিন্ন স্থাপনা নির্মাণ করা হচ্ছে। অবিলম্বে এর প্রতিকার হওয়া জরুরি।

ইউপি চেয়ারম্যান মো. শহীদুল ইসলামও একই কথা বলেন। তিনি আরো বলেন, বিগত সরকারের সময় নদীর চর দখল প্রক্রিয়া শুরু হয়েছে। এদের উচ্ছেদ করা না হলে নদীটি যখন পূনঃ খনন করা হবে তখন বড় ধরনের সমস্যার সম্মূখীন হতে হবে।

বেতাগা ইউপি চেয়ারম্যান স্বপন দাশ জানান, দীর্ঘদিন যাবৎ এই অবস্থা চলছে। কিন্তু এ ব্যাপারে কারো যেন মাথা ব্যাথা নেই। এ ব্যাপারে প্রযোজনীয় ব্যবস্থা গ্রহনের জন্য সচেতন জনগন জেলা প্রশাসক, পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী, উপজেলা নির্বাহী অফিসার সহ বিভিন্ন উর্দ্ধতন কর্মকর্তাদের আশু হস্তক্ষেপ কামনা করেছেন।

"

প্রতিদিনের সংবাদ ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন
আরও পড়ুন
  • সর্বশেষ
  • পাঠক প্রিয়
close
Error!: SQLSTATE[42S02]: Base table or view not found: 1146 Table 'protidin_sangbad.news_hits_counter_2020_04_07' doesn't exist
Error!: SQLSTATE[42S02]: Base table or view not found: 1146 Table 'protidin_sangbad.news_hits_counter_2020_04_07' doesn't exist