সংসদ প্রতিবেদক
নভেম্বরে ঢাকায় বসছে সিপিএ সম্মেলন
আলোচনা হবে রোহিঙ্গা ইস্যুতে
জঙ্গি হামলার প্রেক্ষাপটে গত বছর বাতিল হলেও এ বছর ৬৩তম কমনওয়েলথ পার্লামেন্টারি অ্যাসোসিয়েশনের (সিপিএ) সম্মেলন ঢাকায় হচ্ছে। আগামী ১ থেকে ৮ নভেম্বর এই সম্মেলনে রোহিঙ্গা সংকট নিয়েও আলোচনার সম্ভাবনা রয়েছে বলে আয়োজকরা জানিয়েছেন। তবে, ৫ নভেম্বর জাতীয় সংসদ ভবনে এই সম্মেলনের উদ্বোধন করবেন সিপিসির ভাইস প্যাট্রন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। সিপিএ বাংলাদেশ ব্রাঞ্চ ও বাংলাদেশ জাতীয় সংসদ যৌথভাবে এ সম্মেলনের আয়োজন করছে। সিপিএ চেয়ারপারসন বাংলাদেশের জাতীয় সংসদের স্পিকার শিরীন শারমিন চৌধুরী গতকাল মঙ্গলবার সংসদ ভবনের মিডিয়া সেন্টারে এক সংবাদ সম্মেলনে এই সম্মেলনের বিষয়ে বিভিন্ন তথ্য তুলে ধরেন।
স্পিকার বলেন, সিপিএ সম্মেলনের এজেন্ডাগুলো যখন নির্ধারিত হয় তখন রোহিঙ্গা ক্রাইসিস ছিল না। ফলে এটি অন্তর্ভুক্ত করা হয়নি। তবে ‘জাতীয়তা’ বিষয়ক এক কর্মশালা রয়েছে। সে বিষয়ের সঙ্গে রোহিঙ্গা ইস্যু খুবই রিলেটেড। এ ওয়ার্কশপে বিষয়টি আলোচনা হতে পারে।
স্পিকার বলেন, সম্মেলনে বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ বিষয় আলোচিত হবে। নির্বাহী কমিটির সভা, কমনওয়েল ওমেন পার্লামেন্টারি স্টিয়ংারিং কমিটির সভা, স্মল ব্রাঞ্চেস কনফারেন্স, বিভিন্ন সাব কমিটির সভা, রিজিওনাল গ্রুপ মিটিং, জেনারেল এসেম্বলি ও ৮টি কর্মশালা অনুষ্ঠিত হবে।
পাকিস্তানের অংশগ্রহণ সম্পর্কে স্পিকার বলেন, তারাও এ সম্মেলনে অংশ নিবে বলে আমরা আশা প্রকাশ করছি। কেননা তারা সম্ভবত নিবন্ধন করেছে।
সিপিএর ৬২তম সম্মেলন গত বছর সেপ্টেম্বরে ঢাকায় হওয়ার কথা থাকলেও জুলাই মাসে হলি আর্টিজান বেকারিতে নজিরবিহীন জঙ্গি হামলার কারণে তা আর হয়নি। ওই বছরের আগস্ট মাসেই সম্মেলন ঢাকায় না করার সিদ্ধান্তের কথা জানায় সিপিএ সদর দফতর। এরপর চলতি বছর এপ্রিলে ঢাকায় ইন্টার পার্লামেন্টারি ইউনিয়নের (আইপিইউ) সম্মেলন হয়। শিরীন শারমিন চৌধুরী সংবাদ সম্মেলনে বলেন, কমনওয়েলথভুক্ত ৫২ দেশের ১৮০টি জাতীয় ও প্রাদেশিক সংসদের স্পিকার, ডেপুটি স্পিকার, সংসদ সদস্যসহ ছয় শতাধিক প্রতিনিধি এ সম্মেলনে অংশ নেবেন। এবারের সম্মেলনের মূল প্রতিপাদ্য হলো ‘কনটিনিউনিং টু এনহ্যান্স দ্য হাই স্ট্যান্ডার্ড অব পারফরম্যান্স অব পার্লামেন্টারিয়ানস’।
সংসদের ডেপুটি স্পিকার ফজলে রাব্বী মিয়ার নেতৃত্বে বাংলাদেশের প্রতিনিধিদল এই সম্মেলনে অংশ নেবেন। এবারের সম্মেলনে রোহিঙ্গা সংকট নিয়ে আলোচনা হবে কি-না জানতে চাইলে সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত সিপিএর সেক্রেটারি জেনারেল আকবর খান বলেন, এত প্রতিনিধি আসবেন। কেউ কথা তুললে আমরা তো চুপ করিয়ে দিতে পারি না। পরে স্পিকার শিরীন শারমিন বলেন, সিপিএ সম্মেলনে আলোচনার বিষয়বস্তু আগে থেকেই নির্ধারিত হয়। সিপিএর নির্বাহী কমিটি এই আলোচ্যসূচি ঠিক করে। যখন এটি ঠিক করা হয়েছিল, তখন রোহিঙ্গা ইস্যু সামনে আসেনি। তবে সিপিএর একটি টপিক আছে, ‘হোয়াট ফ্যাক্টর ফুয়েল দ্য রাইজ অব ডিফরেন্ট কাইন্ডস অব ন্যাশনালিজম’। এই টপিকের সময় রোহিঙ্গা ইস্যু নিয়ে আলোচনা উঠতে পারে। সম্মেলনের নিরাপত্তা প্রস্তুতি নিয়ে এক প্রশ্নের জবাবে শিরীন শারমিন বলেন, আইপিইউ সম্মেলন অনুষ্ঠানের সময় নিরাপত্তা বিঘ্নিত হয়নি। সিপিএ সম্মেলনের জন্য যে প্রস্তুতি গ্রহণ করা হচ্ছে তাতে প্রতিনিধিরা নিচ্ছিদ্র নিরাপত্তা পাবেন। সোমবার কমনওয়েলথভুক্ত দেশগুলোর কূটনীতিকদের সঙ্গে বৈঠক করেছি। সেখানে নিরাপত্তা বিষয়ে অবহিত করা হয়েছে। তারা সার্বিক নিরাপত্তা নিয়ে কোনো প্রশ্ন তোলেননি।
আইপিইউ সম্মেলনে পাকিস্তানের প্রতিনিধি না এলেও সিপিএ সম্মেলনে দেশটি নিবন্ধন করেছে বলে এক প্রশ্নের জবাবে জানান সিপিএ চেয়ারপারসন শিরীন। সংবাদ সম্মেলনে সিপিএ চেয়ারপারসন ও সেক্রেটারি জেনারেল ছাড়াও জাতীয় সংসদের প্রধান হুইপ আ স ম ফিরোজ, হুইপ ইকবালুর রহিম, সংসদের সিনিয়র সচিব আবদুল রব হাওলাদারসহ সংসদের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।
"