নিজস্ব প্রতিবেদক
রাজধানীর পশুর হাট ইজারা শেষে চলছে প্রস্তুতি
রাজধানীর দুই সিটি করপোরেশনে ২২টি অস্থায়ী পশুর হাটের মধ্যে ইজারা প্রক্রিয়া শেষ হয়েছে ১৬টির। সরকার নির্ধারিত দামের চেয়ে কম দাম ওঠায় ৬টি হাট এখনো ইজারা দিতে পারেনি করপোরেশন। ইজারা দেওয়া হাটগুলোতে পুরোদমে চলছে প্রস্তুতির কাজ। সিটি করপোরেশন বলছে, এবার হাটের নির্ধারিত এলাকার বাইরে সড়ক বা ফুটপাতে কেউ পশু রাখলেই ব্যবস্থা নেওয়া হবে। এদিকে, গরুর হাটে পশুপ্রতি খাজনা নামমাত্র ১০০ টাকা নির্ধারণ করা হলে সারা বছরই ২৫০ টাকা কেজিতে গরুর মাংস সরবরাহের আশ্বাস দিয়েছেন রাজধানীর মাংস ব্যবসায়ীরা। গতকাল শুক্রবার রাজধানীর ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটিতে এক সংবাদ সম্মেলনে এমন আশ্বাস দেন বাংলাদেশ মাংস ব্যবসায়ী সমিতির মহাসচিব রবিউল আলম।
সরেজমিনে দেখা গেছে, রাজধানীর মোহাম্মদপুরের বসিলায় খালি জায়গায় সারি সারি বাঁশ ও কাঠ দিয়ে চলছে অস্থায়ী পশুর হাট তৈরির কাজ। হাটটি ইজারা পেয়েছে হাসান-হোসেন নামের একটি প্রতিষ্ঠান। গাবতলীর পশুর হাটসহ ইজারা পাওয়া পশুর হাটগুলোতেও চলছে প্রস্তুতি। এ বছর অতিবৃষ্টি ইজারাদারদের জন্যে চিন্তার কারণ হলেও শেষ পর্যন্ত হাটগুলো জমে ওঠার ব্যাপারে আশাবাদী তারা।
ইজারাদাররা বলেন, র?্যাব-পুলিশ সবার সঙ্গে যোগাযোগ করা হয়েছে, যেন হাটে কোনো আইনশৃঙ্খলার অবনতি না হয়। হাটগুলোর তদারকিতে থাকা ইজারাদারদের সব ধরনের সহায়তা দিচ্ছে সিটি করপোরেশন।
দক্ষিণের ১৩টি পশুর হাটের মধ্যে গোপীবাগ ব্রাদার্স ইউনিয়ন সংলগ্ন বালুর মাঠ, কমলাপুর স্টেডিয়ামের পাশের হাট আরমানিটোলা খেলার মাঠ, ধোলাইখালের সাদেক হোসেন খোকা মাঠ-এ চারটি হাট এখনো ইজারা দিতে পারেনি ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশন।
আর উত্তরের খিলক্ষেত বনরূপা ও আসিয়ান সিটির হাট ইজারা দিতে না পারায় মন্ত্রণালয়ের সিদ্ধান্তের জন্য অপেক্ষায় আছে তারা। যদিও দক্ষিণ সিটি করপোরেশন ইজারা দেওয়ার চেষ্টা অব্যাহত রেখেছে বলে জানায় তারা।
এদিকে, গতকাল সংবাদ সম্মেলনে মাংস ব্যবসায়ীরা জানান, পাঁচ-ছয় হাজার টাকা খাজনা দিয়ে গরু কিনে এনে পশুপালনে উন্নয়ন সম্ভব না, অবাস্তব। গাবতলীর গরুর হাটে খাজনা নামমাত্র ১০০ টাকা নির্ধারণ করা হলে আমরা মাংস ব্যবসায়ীরা আপনাদের প্রতিশ্রুতি দিচ্ছি, সর্বোচ্চ ২৫০ টাকা কেজিতে সারা বছর গরুর মাংস খাওয়াব।
সমিতির মহাসচিব রবিউল আলম বলেন, হাটের ইজারাদাররা শর্ত মানে না। গাবতলী পশুর হাটে র্যাব ও পুলিশের ক্যাম্পে গিয়ে অভিযোগ করলেও কোনো সুরাহা পাওয়া যায় না। কারণ ইজারাদার ইজারার শর্ত বাস্তবায়ন করছে কি না তা দেখার ক্ষমতা পুলিশকে দেওয়া হয়নি। আমাদের দাবি-র্যাব-পুলিশকে এ ক্ষমতা দেওয়া হোক।
এর আগে চলতি বছরের মে মাসে ব্যবসায়ীরা বলেছিলেন, গাবতলী হাটের ইজারাদার, হুন্ডি ব্যবসায়ীরা বেশি টাকা আদায় করছে। দেশের সাধারণ মানুষকে এর মাসুল দিতে হচ্ছে। এসব সমস্যার সমাধান করলে প্রতি কেজি গরুর মাংস ৩০০-৩৫০ টাকা এবং খাসির মাংস ৫০০ টাকায় বিক্রি করা সম্ভব। তখন রবিউল আলম বলেন, গাবতলী হাটের ইজারাদার, হুন্ডি ব্যবসায়ীরা আমাদের কাছ থেকে বেশি টাকা আদায় করছে। দেশের সাধারণ মানুষকে এর মাসুল দিতে হচ্ছে। এখন ভোক্তাদের থেকে অতিরিক্ত দাম নিয়ে সেই অর্থ ইজারাদার, হুন্ডি ব্যবসায়ীদের দিতে হচ্ছে। তিনি বলেন, প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশ, আদালতের আদেশ, সিটি করপোরেশনের শর্ত কোনো কিছুর তোয়াক্কা করে না গাবতলী গরুর হাটের ইজারাদাররা। মাংস ব্যবসায়ীদের ভয়ভীতি দেখিয়ে বিচারের নামে চাঁদাবাজি করছে ইজারাদারদের নিযুক্ত বাহিনী। রাত ১২টার আগে হাট থেকে গরু বের হতে দিচ্ছে না তারা। তিনি আরো বলেন, এসব সমস্যার সমাধান করলে কম দামে গরুর মাংস বিক্রি করা সম্ভব হবে।
"