নিজস্ব প্রতিবেদক

  ১৮ মে, ২০১৭

আবাসিক এলাকায় ভারী ট্রাক, লরি

বনশ্রীর প্রধান সড়কে ভোগান্তির শেষ নেই

রাজধানীর আবাসিক এলাকা রামপুরার বনশ্রীতে ভারী ট্রাক, লরি চলাচল থামছে না। ফলে সড়কটি মরণফাঁদে পরিণত হয়েছে। খানাখন্দে ভরা সড়কে চলাচলকারীরা চরম ভোগান্তির শিকার হচ্ছেন। সামান্য বৃষ্টি হলেই সড়কজুড়ে তীব্র জলাবদ্ধতার সৃষ্টি হয়। যানবাহন উল্টে প্রায়ই দুর্ঘটনা ঘটে। গর্তের কারণে যানবাহন ধীরগতিতে চলে। এতে ঘণ্টার পর ঘণ্টা যানজটে আটকে থাকেন যাত্রীরা। যানজট নিয়ন্ত্রণে হিমশিম হয় ট্রাফিক পুলিশের।

স্থানীয়রা বলেছেন, সড়কটি কয়েক বছর আগেও ভালো ছিল। সড়কটি দিয়ে ভারী ট্রাক, লরি চলাচল করায় এ দশা হয়েছে। বৃষ্টিতে এসব গর্ত আরো বেশি বিপজ্জনক হয়ে পড়েছে। বিশেষ করে সড়কের মাঝের বড় গর্তগুলো পথের কাঁটায় পরিণত হয়েছে। সড়ক দিয়ে গুলশান, বনানী, মোহাম্মদপুর, মিরপুর, চিটাগাং রোড, ডেমরা, নারায়ণগঞ্জ, রামপুরা, মালিবাগ, মৌচাক, কাকরাইল, মগবাজারসহ বিভিন্ন গন্তব্যে যাতায়াতের জন্য প্রতিদিন শত শত যানবাহন চলাচল করে।

সড়কের পাশে চলা পয়ঃনিষ্কাশন কাজের খোঁড়াখুঁড়ি আর এসব গর্ত বেশ ভোগান্তিতে ফেলেছে মানুষকে। পথ চলতে গিয়ে যানবাহন ও পথচারীদের ভোগান্তি বেড়েই চলেছে। সম্প্রতি সরেজমিন ঘুরে দেখা গেছে, রামপুরা ব্রিজ থেকে বনশ্রীতে ঢোকার মুখ থেকেই রাস্তাজুড়ে গর্ত। বনশ্রী কেন্দ্রীয় মসজিদ, বি ব্লক, সি ব্লকের ব্র্যাক ব্যাংকের সামনের সড়কের অবস্থা বেশি খারাপ। প্রধান সড়কের সি ব্লকে দেখা যায়, যানবাহনগুলো খুব ধীরগতিতে গর্ত দেখে সতর্ক হয়ে চলছে। গর্তগুলোতে পানি জমে থাকায় সেগুলোর গভীরতা বোঝারও উপায় নেই। সড়কের মাঝামাঝি পিচ ঢালাই করা আর দুই পাশে মাটির অংশ। কোনো পাশেই ফুটপাত না থাকায় পথচারীদের চলাচলে ভোগান্তিতে পড়তে হচ্ছে। বনশ্রী থেকে হাতিরঝিলে যানবাহন যাতায়াতের জন্য তৈরি ইউলুপের সামনে তৈরি হয়েছে বড় একটি গর্ত। গর্তে বৃষ্টির পানি জমায় এটি ছোটখাটো জলাধারে পরিণত হয়েছে। গর্তের কিছু জায়গায় ইট বিছানো হলেও তা কোনো কাজে আসছে না। একেকটি গাড়ি চলছে হেলেদুলে, ধীরগতিতে। ইউলুপের সামনে এমন এক বড় গর্ত থাকায় গাড়িগুলো এসে সেখানে থমকে থাকছে। গর্ত পার হয়ে দেখেশুনে ইউলুপে উঠতে যানবাহনগুলোকে অনেক সময় নষ্ট করতে হচ্ছে। শেষ কবে পিচ ঢালাই হয়েছিল, তা দেখে বোঝার উপায় নেই। বৃষ্টির পানি জমে প্রতিনিয়তই গর্তগুলো বড় আকার ধারণ করছে। ফলে চলাচলে ঝুঁকিতে পড়ছেন যাত্রীরা।

বনশ্রী কল্যাণ সমিতির সাধারণ সম্পাদক মো. আবদুল হক বলেন, সড়কটি অবস্থা খুবই খারাপ। কেন্দ্রীয় মসজিদের সামনের সড়ক একদমই চলার অনুপযোগী। মাঝেমধ্যে গর্তগুলোতে ইট, সুরকি ফেলা হয়। বড় ট্রাক, লরি চলাচল করায় সেগুলো খুব একটা টেকে না। এলাকার বাসিন্দাদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, বেশ কিছুদিন ধরে সড়কে খোঁড়াখুঁড়ি চলছে। একে তো ভাঙাচোরা সড়ক, এর ওপর যত্রতত্র নির্মাণসামগ্রী ও নানা সরঞ্জাম ফেলে রাখা হয়। এর ফলে সড়ক সংকীর্ণ হয়ে গেছে। এসব সংকীর্ণ সড়কও আবার গর্তে গর্তে ঝুঁকিপূর্ণ। সব মিলিয়ে বনশ্রীতে সড়কের ভোগান্তিতে নাভিশ্বাস উঠেছে মানুষের। এদিকে সড়কের এমন দুরবস্থায় এলাকার শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থী, ব্যবসায়ীদের ভোগান্তি আরো চরমে উঠে গেছে বলে জানা গেছে। শিক্ষার্থীরা জানান, সড়কে কাদাপানি মাড়িয়ে প্রতিদিন পথ চলতে হয় তাদের। কখনো কখনো গর্তে পড়ে গিয়ে ছোটখাটো দুর্ঘটনা ঘটছে বলেও জানান তারা। অন্যদিকে, সড়ক-ফুটপাত ঘেঁষা দোকানিরা জানান, এই সড়কে খোঁড়াখুঁড়ি শুরু হওয়ার পর থেকে গত কয়েক মাসে তাদের ব্যবসায় ভাটা পড়েছে। ধুলো-কাদার কারণে ক্রেতা কমে গেছে। যে কারণে বেচাবিক্রিও গেছে কমে। এ ছাড়া ব্যস্ততম এ সড়ক দিয়ে মতিঝিল আইডিয়াল স্কুল অ্যান্ড কলেজসহ আশপাশের বিভিন্ন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের অন্তত ২০ হাজার শিক্ষার্থী যাতায়াত করার সময় হরহামেশাই দুর্ঘটনার শিকার হচ্ছে। এমন পরিস্থিতি দীর্ঘদিন ধরে চললেও ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশন (ডিএনসিসি) সমস্যার সমাধানে কোনো উদ্যোগ নিচ্ছে না বলে অভিযোগ ভুক্তভোগীদের। এ সড়কে নিয়মিত চলাচলকারী আলিফ পরিবহনের চালক তুলা মিয়া প্রতিদিনের সংবাদকে জানান, অভিযোগ কে শোনে? সিটি করপোরেশন কি দেখছে না? মেরাদিয়া হাট থেকে রামপুরা ব্রিজ পর্যন্ত ভোগান্তি। ছোট্ট এই পথটি অতিক্রম করতে সময় লাগে এক ঘণ্টার বেশি।

বনশ্রী বি ব্লকের স্বপ্ন সুপার মার্কেটের সামনে রয়েছে বড় একটি গর্ত। এর পাশেই সিটি করপোরেশনের ময়লার বড় বড় দুটি কনটেইনার। একদিকে ময়লার দুর্গন্ধ, অন্যদিনে গর্তে আটকে থেকে যাত্রীদের সীমাহীন দুর্ভোগ পোহাতে হয়। এদিকে, সড়কের বেহাল দশা দেখে ছোটখাটো যানবাহন, মাইক্রোবাস, মোটরসাইকেল ও রিকশাসহ বিভিন্ন যানবাহন বিকল্প রাস্তা হিসেবে বনশ্রীর বিভিন্ন সংযোগ সড়ক ব্যবহার করছে।

"

প্রতিদিনের সংবাদ ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন
আরও পড়ুন
  • সর্বশেষ
  • পাঠক প্রিয়
close
Error!: SQLSTATE[42S02]: Base table or view not found: 1146 Table 'protidin_sangbad.news_hits_counter_2020_04_07' doesn't exist
Error!: SQLSTATE[42S02]: Base table or view not found: 1146 Table 'protidin_sangbad.news_hits_counter_2020_04_07' doesn't exist