মিনহাজুল ইসলাম, চট্টগ্রাম ব্যুরো

  ৩১ জুলাই, ২০২০

চট্টগ্রামে ৩০৪ স্থানে পশু কোরবানি

দ্রুত বর্জ্য অপসারণ

নগরীরতে নির্দিষ্ট স্থানে পশু কোরবানি নিশ্চিত করতে ব্যাপক কার্যক্রম নিয়েছে চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশন (চসিক)। নগরীর ৪১টি ওয়ার্ডের ৩০৪ টি স্থান এবার পশু জবাইয়ের জন্য নির্ধারণ করা হয়েছে। এর বাইরে নিজ উঠানেও কোরবানি পশু জবাই করা যাবে। তবে ঈদের দিন নির্ধারিত স্থানগুলোতে পশু জবাই করতে নগরবাসীর প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন সংশ্লিষ্টরা। জবাই করা পশুর বর্জ্যগুলো ঈদের দিন বিকেল ৫টার মধ্যে প্রধান সড়ক থেকে এবং রাত ৮টার মধ্যে পুরো শহর থেকে অপসারণ করার লক্ষ্য এরই মধ্যে প্রস্তুতি সম্পন্ন করা হয়েছে বলে জানান সংশ্লিষ্টরা। এ দিকে পবিত্র ঈদুল আযহায় বাসাবাড়ি, রাস্তাঘাটসহ যত্রতত্র পশু কোরবানি বন্ধ করতে উদ্যোগ নিয়েছে চসিক। এরই মধ্যে কোরবানির জন্য প্রতিটি ওয়ার্ডে স্থান নির্ধারণ করা হয়েছে। সামাজিক ও শারীরিক দূরত্ব নিশ্চিত করার পাশাপাশি মাস্ক পরিধানের বিষয়টিও দেখভাল করা হবে। কোথাও ব্যত্যয় ঘটলে ব্যবস্থা নেওয়া হবে। নগরবাসীকে এ কাজে উদ্বুদ্ধ করতে ইমাম পরিষদ, শিক্ষক সমিতি, মাংস প্রস্তুতকারী ও স্থানীয় জনপ্রতিনিধিদের সঙ্গে বৈঠকও করা হচ্ছে। করোনার সংক্রমণ রোধ এবং কোরবানির পশুর বর্জ্য অপসারণে এরই মধ্যে জনসচেতনতামূলক পোস্টার, ব্যানার ও লিফলেট বিতরণ শুরু হয়েছে। পশু জবাইয়ের স্থান পরিষ্কার রাখার জন্য পরিচ্ছন্নতাকর্মী ও ব্লিচিং পাউডারের ব্যবস্থা করা রয়েছে। সংশ্লিষ্টরা বলছেন, জনগণ সাড়া দিলে ঈদের দিন জবাই করা পশুর উচ্ছিষ্ট যত্রতত্র দেখা যাবে না। চসিক সূত্রে জানা গেছে, নগরীর ৩০৪টি পয়েন্টে পশু কোরবানি করার উদ্যোগ নেয় চসিক। এ জন্য এবার যাতে রাস্তায় পশু কোরবানি না হয় সেই লক্ষ্য নিয়ে আগেভাগেই কাজ শুরু করতে যাচ্ছে তারা। এ জন্য ঈদের দিন ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচালনার বিষয়টিও আলোচনায় রাখা হয়েছে। অন্যদিকে কোরবানি বর্জ্য নির্দিষ্ট সময়ে অপসারণের লক্ষ্যে পুরো শহরকে চারটি জোনে ভাগ করে চারজন কাউন্সিলরকে চেয়ারম্যান করে বর্জ্য অপসারণ কমিটি গঠন করা হয়েছে। তবে কেন্দ্রীয়ভাবে বর্জ্য ব্যবস্থাপনার সার্বিক বিষয় বরাবরের মতো তদারকি করবেন চসিক মেয়র আ জ ম নাছির উদ্দীন। করপোরেশনে প্রতি বছর ঈদের আগে বিশেষ নিয়ন্ত্রণ কক্ষ চালু করা হবে বলে জানা গেছে। সেখানে ফোন করে পশুর বর্জ্য সংগ্রহের কথা জানিয়ে রাখতে পারেন। চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশনে প্রধান পরিচ্ছন্ন কর্মকর্তা শফিকুল মান্নান সিদ্দিকী জানান, কোরবানি পশুর বর্জ্য অপসারণ করার জন্য প্রয়োজনীয় প্রস্তুতি প্রায় শেষের দিকে। অতিরিক্তি ২ হাজার ঈদ ও ঈদের পরের দিনের জন্য পরিচ্ছন্নতাকর্মী প্রস্তুত করা হয়েছে। সব মিলিয়ে চসিকের বর্জ্য অপসারণ করার লক্ষ্যে ৫ হাজার পরিচ্ছন্নতাকর্মী প্রস্তুত করা হয়েছে। তাছাড়া ওয়ার্ডভিত্তিক কর্মীদের প্রস্তুত করা হচ্ছে। আমাদের লক্ষ্য জবাইকৃত পশুর বর্জ্যগুলো ঈদের দিন বিকেল ৫টার মধ্যে প্রধান সড়ক থেকে অপসারণ করা। শফিকুল মান্নান সিদ্দিকী আরো জানান, পশু জবাইয়ের পরপরই সিটি করপোরেশনের পরিচ্ছন্নতাকর্মীরা বর্জ্যগুলো সংগ্রহ করে নিয়ে যাবেন। বর্জ্য পলিথিনের ব্যাগে মুড়িয়ে বাড়ির সামনে গেটের বাইরে রেখে দিলে সিটি করপোরেশনের পরিচ্ছন্নতাকর্মীরা তা সংগ্রহ করবেন। নদী কিংবা জলাধারের আশপাশে কখনোই বর্জ্য পুঁতে রাখবেন না। চসিক ২১ নম্বর জামালখান ওয়ার্ড কাউন্সিলর ও চসিক বর্জ্য ব্যবস্থাপনা স্ট্যান্ডিং কমিটির সভাপতি শৈবাল দাশ সুমন জানান, মানুষ আগে থেকে অনেক সচেতন হয়েছে। সেই সঙ্গে আমাদেরও বর্জ্য অপসারণের অভিজ্ঞতা বেড়েছে। নগরবাসীকে অনুরোধ জানাবো কোরবানি বর্জ্য যেন একটি চটের ব্যাগে রাখে। বিকল্প হিসেবে প্লাস্টিক ব্যাগেও রাখা যায়। তাহলে আমাদের এই বর্জ্য সংগ্রহ করতে সহজ হয়। এই জন্য আমরা সচেতনতা সৃষ্টিতে কাজ করছি। এই দিকে চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশনের পাশাপাশি ৩০৪টি নির্দিষ্ট স্থানে কোরবানির পশু জবাইয়ের নির্দেশনা দিয়েছে মন্ত্রণালয়ও। নির্ধারিত স্থানগুলো ছাড়া অন্য কোথাও উন্মুক্ত স্থান বা সড়কে পশু জবাই না করার জন্য নগরবাসীর প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন চসিক মেয়র আ জ ম নাছির উদ্দীন।

"

প্রতিদিনের সংবাদ ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন
আরও পড়ুন
  • সর্বশেষ
  • পাঠক প্রিয়
close