মিনহাজুল ইসলাম, চট্টগ্রাম ব্যুরো

  ০৮ জুলাই, ২০২০

ফি নির্ধারণেও কমেনি চট্টগ্রামে নমুনা পরীক্ষা

অনেকে বিনা কারণে একাধিকবার নমুনা পরীক্ষা করাচ্ছেন বলে দাবি করে আসছে স্বাস্থ্য বিভাগ। এই প্রবণতা ঠেকাতে জনস্বার্থের কথা চিন্তা করে এক সপ্তাহ ধরে সারা দেশে করোনাভাইরাস (কোভিড-১৯) নমুনা পরীক্ষার ফি নির্ধারণ করা হয়েছে। কিন্তু চট্টগ্রামে এখনো পর্যন্ত এর কোনো প্রভাবই পড়েনি। ফি নির্ধারণের পরও আগের মতো স্বাভাবিক পরীক্ষার নমুনা সংগ্রহ করা হচ্ছে বলে জানিয়েছে চট্টগ্রামের স্বাস্থ্য বিভাগ। এই দিকে এমন কোভিড-১৯ সংক্রমণ নিয়ন্ত্রণ ও সুষ্ঠু ব্যবস্থাপনার জন্য অপ্রয়োজনীয় নমুনা পরীক্ষা পরিহার করার লক্ষ্যে গত ২৮ জুন স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের উপসচিব ড. বিলকিস বেগম স্বাক্ষরিত এক প্রজ্ঞাপনে ফি নির্ধারণ তথ্য জানানো হয়েছে। করোনাভাইরাস (কোভিড-১৯) পরীক্ষা-নিরীক্ষার ইউজার ফির হার নির্ধারণবিষয়ক প্রজ্ঞাপনে বলা হয়েছে, এখন থেকে বুথে সংগৃহীত নমুনা পরীক্ষায় ২০০ টাকা, বাসা থেকে সংগহীত নমুনায় ৫০০ টাকা ও হাসপাতালে ভর্তি রোগীর নমুনা পরীক্ষায় ২০০ টাকা ফি নির্ধারণ করা হয়েছে। চট্টগ্রামে ফি নির্ধারণ করার পর এবং ফি নির্ধারণের আগে নমুনা বিশ্লেষণ করে দেখা যায়, নমুনার মধ্যে কোনো ধরনের প্রভাব পড়েনি। নমুনা পরীক্ষা ফি নির্ধারণের আগে এক সপ্তাহে চট্টগ্রামে নমুনা পরীক্ষা হয়েছে ৬ হাজার ৪৫৮ জনের। তার মধ্যে ২২ জুন ৯২৬ জন, ২৩ জুন ৯৯১ জন, ২৪ জুন ৯৭১ জন, ২৫ জুন ১ হাজার ৯৩ জন, ২৬ জুন ৮৯০ জন, ২৭ জুন ৫৯০ জন এবং ২৮ জুন ৯৯৭ জন। ফি নির্ধারণের পর থেকে চট্টগ্রামে সাত দিনে মোট করোনাভাইরাস (কোভিড-১৯) নমুনা পরীক্ষা হয়েছে ৯ হাজার ২৩৯ জনের। তার মধ্যে গত ২৯ জুন ১ হাজার ৫৯৪ জন, ৩০ জুন ১ হাজার ৩৪৫ জন, ১ জুলাই ১ হাজার ৩৭৩ জন, ২ জুলাই ১৩৭৩ জন, ৩ জুলাই ১ হাজার ৩২৩ জন, ৪ জুলাই ১ হাজার ২৩৬ জন এবং ৫ জুলাই ১ হাজার ৩১৮ জনের। এই ফি নির্ধারণের এক সপ্তাহে আগে মোট করোনাভাইরাস (কোভিড-১৯) নমুনা পরীক্ষা হয়েছে ৬ হাজার ৪৫৮ জনের এবং ফি নির্ধারণের পরে নমুনা পরীক্ষা হয়েছে ৯ হাজার ২৩৯ জন। ফি নির্ধারণের পরে চট্টগ্রামে আরো ২ হাজার ৭৮১ জনের নমুনা বেড়েছে। চট্টগ্রামের সিভিল সার্জন ডা. সেখ ফজলে রাব্বি জানান, চট্টগ্রামে করোনাভাইরাস (কোভিড-১৯) নমুনা পরীক্ষায় ফি নির্ধারণের বেশি প্রভাব পড়েনি। কিন্তু সামনে কিছুটা কমতে পারে। কিন্তু বর্তমানে স্বাভাবিক আগের মতো নমুনা সংগ্রহ হচ্ছে। জেলার উপজেলাগুলোতে কোনো ধরনের প্রভাব পড়েছে কিনা এমন প্রশ্নের জবাবে সিভিল সার্জন জানান, ফি নির্ধারণের আগে প্রতিটি উপজেলায় ২০ থেকে ৩০টি নমুনা আসত। বর্তমানেও ফি নির্ধারণের পরেও ফি নির্ধারণের আগের মতোই নমুনা আসছে। নমুনা পরীক্ষার ফি নির্ধারণের বিষয়ে বিস্তারিত আগামী কয়েক দিন পরে মন্তব্য করা যাবে। বাংলাদেশ মানবাধিকার কমিশনের সিনিয়র ডেপুটি গভর্নর আমিনুল হক বাবু জানান, ফি নির্ধারণ বড় বিষয় নয়, নমুনা পরীক্ষার ফল ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে দিতে হবে। দেশে ২০০ টাকা দেওয়ার মতো মানুষের সামর্থ্য রয়েছে। কিন্তু নির্দিষ্ট সময়ে নমুনার ফল পাওয়াটা নিশ্চিত করতে হবে। এ দিকে গত বৃহস্পতিবার (২ জুলাই) করোনা পরিস্থিতি নিয়ে আয়োজিত স্বাস্থ্য বুলেটিনে করোনা পরীক্ষার জন্য সরকার নির্ধারিত ফি অনলাইনে জমা দিতে একটি অ্যাপ তৈরির উদ্যোগ নিয়েছে স্বাস্থ্য অধিদফতর। এছাড়া নমুনা সংগ্রহের স্থানে ক্যাশ মেমোর মাধ্যমেও ফি পরিশোধ করা হচ্ছে বলে জানিয়েছেন স্বাস্থ্য অধিদফতরের অতিরিক্ত মহাপরিচালক অধ্যাপক ডা. নাসিমা সুলতানা। এ দিকে ২৮ জুলাই প্রজ্ঞাপনে বলা হয়, নমুনা সংগ্রহ বাবদ আদায়কৃত রাজস্ব সরকারি কোষাগারে জমা করতে হবে। চিকিৎসা সুবিধা বিধিমালা-১৯৭৪-এর আওতায় সরকারি কর্মকর্তা-কর্মচারীদের চিকিৎসা সংক্রান্ত সব সুবিধা বহাল থাকবে। মুক্তিযোদ্ধা, দুস্থ ও গরিব রোগীদের চিকিৎসা ও রোগ নির্ণয় পরীক্ষা-নিরীক্ষা সংক্রান্ত সরকারি আদেশ বহাল থাকবে এবং সব সরকারি হাসপাতালে উল্লিখিত হারে ফি নির্ধারণ করা হলো।

"

প্রতিদিনের সংবাদ ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন
আরও পড়ুন
  • সর্বশেষ
  • পাঠক প্রিয়
close