রাজশাহী ব্যুরো

  ০৫ জুন, ২০২০

অনলাইন মানববন্ধনে

উচ্চহারে তামাকের কর বৃদ্ধির দাবি

২০৪০ সালের মধ্যে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ধূমপানমুক্ত বাংলাদেশ গড়ার স্বপ্ন নিয়ে কাজ করছেন। তার এই স্বপ্নকে বাস্তবে রূপ দিতে অবশ্যই উচ্চহারে তামাকের কর বৃদ্ধি করতে হবে বলে দাবি জানানো হয়েছে। আসন্ন ২০২০-২১ অর্থবছরের বাজেটে সব প্রকার তামাকপণ্যের ওপর উচ্চহারে কর ও দাম বৃদ্ধির দাবিতে অনলাইন মানববন্ধন কর্মসূচিতে এ দাবি জানানো হয়। গতকাল বৃহস্পতিবার বেলা ১১টায় উন্নয়ন ও মানবাধিকার সংস্থা ‘অ্যাসোসিয়েশন ফর কম্যুনিটি ডেভেলপমেন্ট-এসিডি’ ঘণ্টাব্যাপী এ মানববন্ধন কর্মসূচির আয়োজন করে। বৃহস্পতিবার দুপুরে এসিডির মিডিয়া ম্যানেজার আমজাদ হোসেন শিমুল স্বাক্ষরিত এক প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য নিশ্চিত করা হয়।

ওই বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়Ñ উচ্চহারে তামাকপণ্যের কর বৃদ্ধির দাবিকে সমর্থন জানিয়ে এসময় কর্মসূচিতে অংশগ্রহণ করেন- রংপুর সিটি করপোরেশনের (রসিক) মেয়র মোস্তাফিজার রহমান মোস্তফা, রংপুরের বেগম রোকেয়া সরকারি কলেজের বাংলা বিভাগের সাবেক বিভাগীয় প্রধান প্রফেসর শাহ আলম, রংপুরের তামাক নিয়ন্ত্রণ কোয়ালিশনের ফোকাল পার্সন সুশান্ত ভৌমিক, অ্যান্টিটোব্যাকো মিডিয়া এলায়েন্স-আত্মা’র রাজশাহী বিভাগীয় সমন্বয়ক শরীফ সুমন, ‘শ্যাডো’র নির্বাহী পরিচালক খন্দকার সারোয়ার জামিল, রংপুরের মাওলানা কেরামত আলী কলেজের ইংরেজি বিভাগের প্রভাষক আহসান হাবিব রবু।

এছাড়া কর্মসূচিতে এসিডির ডিরেক্টর (প্রোগ্রাম) শারমিন সুবরীনা, ডিরেক্টর (ফিন্যান্স) পংকজ কর্মকার, এসিডির তামাক নিয়ন্ত্রণ প্রকল্পের প্রোগ্রাম ম্যানেজার মোস্তফা কামাল, মিডিয়া ম্যানেজার আমজাদ হোসেন শিমুল, অ্যাডভোকেসি অফিসার মো. শরিফুর ইসলাম শামীম, প্রোগ্রাম অফিসার কৃষ্ণা রানী বিশ্বাস, আনোয়ার হোসেন, রাজশাহীর ইয়ুথ গ্রুপের সভাপতি আসাদুজ্জামান নূর, সাধারণ সম্পাদক মো. একরামুলক হক, রংপুর ইয়ুথ গ্রুপের সদস্যসহ বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার প্রায় দেড় শতাধিক মানুষ অংশ নেন।

এ সময় রসিক মেয়র মোস্তাফিজুর রহমান মোস্তফা বলেন, দেশে তামাকজনিত কারণে বছরে প্রায় ১ লাখ ৬১ হাজার মানুষ অকালেই মারা যাচ্ছে। তামাকজনিত বিভিন্ন রোগে আক্রান্ত হচ্ছে ৪ লাখেরও বেশি মানুষ। এছাড়া এক সমীক্ষায় দেখা গেছে, দেশে তামাক ব্যবহারের অর্থনৈতিক ক্ষতির (চিকিৎসা ব্যয় এবং উৎপাদনশীলতা হারানো) পরিমাণ ৩০ হাজার ৫৬০ কোটি টাকা। একই সময়ে তামাক খাত থেকে অর্জিত রাজস্ব আয় ২২ হাজার ৮১০ কোটি টাকা। অর্থাৎ ২০১৭-১৮ অর্থবছরে রাজস্ব আয়ের চেয়ে তামাক ব্যবহারে অর্থনৈতিক ক্ষতি প্রায় ৮ হাজার কোটি টাকারও বেশি। এভাবেই প্রতি বছর তামাকজনিত কারণে দেশে প্রায় হাজার হাজার কোটি টাকার আর্থিক ক্ষতি হচ্ছে। তাই আসন্ন বাজেটে আমি তামাকের কর বৃদ্ধির দাবি জানাচ্ছি।

অনলাইন মানববন্ধন কর্মসূচিতে অংশ নিয়ে রংপুরের তামাক নিয়ন্ত্রণ কোয়ালিশনেরর ফোকালপারসন সুশান্ত ভৌমিক বলেন, সারা পৃথিবীতে ধূমপায়ীরাই করোনায় বেশি আক্রান্ত কিংবা মৃত্যুবরণ করছে বলে বিভিন্ন গবেষণায় উঠে এসেছে। বাংলাদেশের স্বাস্থ্য অধিদফতর থেকেও করোনা থেকে বাঁচতে বার বার ধূমপায়ীদের ধূমপান ত্যাগের অনুরোধ জানাচ্ছেন। ধূমপায়ীরাও জানে ধূমপানে তাদের ক্ষতি হচ্ছে। কিন্তু এটি জেনেও কিন্তু তারা ধূমপান করে। তাই যারা ধূমপান করে তাদের ধূপপান থেকে ফেরানো কষ্টকর। তবে যদি উচ্চহারে তামাকের কর বাড়ানো হয় তাহলে অধিকহারে দামও বাড়বে। এতে ধূমপায়ীরা ধূপানে নিরুৎসাহিত হবে। আস্তে আস্তে কমবে তামাকসেবির সংখ্যা।

আত্মার রাজশাহী বিভাগীয় সমন্বয়ক শরীফ সুমন বলেন, আসন্ন বাজেটে তামাকপণ্যের কর বৃদ্ধির পাশাপাশি সিগারেটের মূল্যস্তর সংখ্যা চারটি থেকে কমিয়ে দুটিতে (নিম্ন এবং উচ্চ) নিয়ে আসার দাবি জানাচ্ছি। সেই সঙ্গে সিগারেট-বিড়ির স্টিক আকারে এবং জর্দ্দা-সাদাপাতা খোলা বিক্রি বন্ধ করতে পারলে তামাকসেবির সংখ্যা কমে আসবে বলে আমি আশাবাদী।

এসিডির ডিরেক্টর (প্রোগ্রাম) শারমিন সুবরীনা বলেন, ২০৪০ সালের মধ্যে প্রধানমন্ত্রী ধূমপানমুক্ত একটি বাংলাদেশ গড়ার স্বপ্ন নিয়ে কাজ করছেন। তার এই স্বপ্নকে বাস্তবে রূপ দিতে অবশ্যই উচ্চহারে তামাকের কর বৃদ্ধি করতে হবে। এটি করলে প্রায় ৩ দশমিক ২ মিলিয়ন প্রাপ্তবয়স্ক ধূমপায়ী (১ দশমিক ৩ মিলিয়ন সিগারেট ধূমপায়ী এবং ১ দশমিক ৯ মিলিয়ন বিড়ি ধূমপায়ী) ধূমপান ছেড়ে দিতে উৎসাহিত হবে। সিগারেটের ব্যবহার ১৪ শতাংশ থেকে হ্রাস পেয়ে প্রায় ১২ দশমিক ৫ শতাংশ এবং বিড়ির ব্যবহার ৫ শতাংশ থেকে হ্রাস পেয়ে হবে ৩ দশমিক ৪ শতাংশ। দীর্ঘমেয়াদে ১ মিলিয়ন বর্তমান ধূমপায়ীর অকাল মৃত্যুরোধ সম্ভব হবে এবং ৬ হাজার ৬৮০ কোটি থেকে ১১ হাজার ৯৮০ কোটি টাকার মধ্যে (জিডিপির শূন্য দশমিক ৪ শতাংশ পর্যন্ত) অতিরিক্ত রাজস্ব আয় অর্জিত হবে।

"

প্রতিদিনের সংবাদ ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন
আরও পড়ুন
  • সর্বশেষ
  • পাঠক প্রিয়
close