নিজস্ব প্রতিবেদক

  ০২ জুন, ২০২০

আম-লিচুর ক্রেতা পাচ্ছেন না বাগান মালিকরা

আম-লিচু বাজারজাতকরণে ক্রেতা খুঁজছেন বাগানের মালিকরা, কিন্তু পাচ্ছেন না। আম-লিচুসহ মৌসুমি ফল বাজারজাতকরণের আশ্বাস দিলেও এখন পর্যন্ত সরকারের কেউ তাদের সঙ্গে যোগাযোগ করেনি। কৃষিমন্ত্রীর প্রতিশ্রুতি অনুযায়ী ‘ফুড ফর ন্যাশন’ উদ্বোধন করা হলেও নিশ্চিত করা যায়নি কৃষিপণ্যের সঠিক বিপণন ও ন্যায্যমূল্য। অথচ চাহিদা মোতাবেক সহজলভ্যতা তৈরি এবং জরুরি অবস্থায় ফুড সাপ্লাই চেইন অব্যাহত রাখতেই বাংলাদেশের প্রথম উন্মুক্ত কৃষি মার্কেট অনলাইন প্ল্যাটফরম ‘ফুড ফর ন্যাশন’ চালু করা হয়েছিল। এর মাধ্যমেই সরকার আম ও লিচুর বাজারজাতকরণের সাপ্লাই চেন ঠিক রাখতে চেয়েছিল। এতে আম ও লিচুচাষিদের চিন্তা করতে হবে না বলে সরকার মনে করলেও উৎপাদিত পণ্য নিয়ে দুশ্চিন্তা কমেনি বলে অভিযোগ কৃষকদের।

চাঁপাইনবাবগঞ্জের কানসাটের আমচাষি ফজলুল হক বলেন, করোনার কারণে গণপরিবহন বন্ধ থাকায় এবার আমের ব্যাপারীরা এলাকায় আসেনি। আমরাও বাগানের আম বিক্রি করতে পারিনি। বাগান কিনেছি অনেক টাকা দিয়ে। ব্যাপারীরা আসতে না পারলে আর ট্রাক চলাচল স্বাভাবিক না হলে আমরা কীভাবে আম বিক্রি করব তা নিয়ে চিন্তার শেষ নেই। তিনি বলেন, সরকারের পক্ষ থেকে নাকি আম-লিচু বাজারে বিক্রি করার জন্য নানা পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে, কিন্তু আমরা কিছুই জানি না, কেউ এখন পর্যন্ত আমাদের সঙ্গে যোগাযোগ করেনি।

দিনাজপুরের লিচুচাষি খায়রুল আলম বলেন, লিচু খুব কম সময়ের জন্য বাজারে আসে। লিচু গাছে পাকা শুরু করলে তা সময়মতো বিক্রি করতে না পারলে সব নষ্ট হয়ে যায়, লিচু গাছের বোঁটা থেকে ঝরে যায়। তাই সময়মতো লিচু বিক্রির জন্য খরিদদার না পেলে আমরা তো মরে যাব।

এদিকে সরকারের পক্ষে গত ১৬ মে কৃষি মন্ত্রণালয়ের সম্মেলন কক্ষে করোনা উদ্ভূত পরিস্থিতিতে আম, লিচুসহ মৌসুমি ফল এবং কৃষিপণ্য বাজারজাতকরণ বিষয়ে সংশ্লিষ্টদের সঙ্গে অনলাইনে মতবিনিময় সভা করা হয়েছে। উপস্থিত কর্মকর্তা ও সংশ্লিষ্টরা ১০ দফা সুপারিশ করেছেন।

আম-লিচুসহ মৌসুমি ফল বাজারজাতকরণে ১০ দফা সুপারিশ হচ্ছে : হাওরে ধানকাটা শ্রমিকদের যেভাবে স্বাস্থ্যবিধি মেনে পাঠানো হয়েছে, তেমনি অন্যান্য জেলা হতে ব্যবসায়ী, আড়তদার ও ফড়িয়াদের যাতায়াত নির্বিঘœ করা, প্রয়োজনে তাদের স্বাস্থ্য পরীক্ষার প্রত্যয়নপত্র প্রদান এবং নিরাপদ আবাসনের ব্যবস্থা নেওয়া। মৌসুমি ফল এবং কৃষিপণ্য পরিবহনে দেশের বিভিন্ন এলাকায় ট্রাক ও অন্যান্য পরিবহনের অবাধে যাতায়াত নির্বিঘœ করা, পরিবহনের সময় যাতে কোনো হয়রানির শিকার না হয়, আইনশৃঙ্খলা বাহিনী মাধ্যমে সে ব্যবস্থা করা। বিআরটিসির ট্রাক ব্যবহারের উদ্যোগ নেওয়া। স্থানীয়ভাবে ব্যাংকের লেনদেনের সময়সীমা বাড়ানো। পার্সেল ট্রেনে মৌসুমি ফল এবং কৃষিপণ্য পরিবহনের আওতা বাড়ানো, হিমায়িত ওয়াগন ব্যবহার করা যায় কিনা তা নিশ্চিত করা।

"

প্রতিদিনের সংবাদ ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন
আরও পড়ুন
  • সর্বশেষ
  • পাঠক প্রিয়
close