নিজস্ব প্রতিবেদক

  ০২ জুন, ২০২০

মশক নিয়ন্ত্রণের পুরো কার্যক্রম ঢেলে সাজানো হবে : তাপস

ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের মেয়র ব্যারিস্টার শেখ ফজলে নূর তাপস বলেছেন, তৃণমূল থেকে উচ্চপর্যায় পর্যন্ত মশক নিয়ন্ত্রণের পুরো কার্যক্রম ঢেলে সাজানো হবে। একই সঙ্গে তিনি গৎবাঁধা পুরনো লোকদেখানো কার্যক্রম থেকে বেরিয়ে এসে মাইন্ডসেট পরিবর্তন করে অর্জিত মেধা দক্ষ কাজে লাগিয়ে নগরবাসীর সেবাদানে আন্তরিকভাবে কর্মকর্তাদের এগিয়ে আসার আহ্বান জানিয়েছেন।

গতকাল সোমবার নগর ভবন সেমিনার রুমে মেয়র ব্যারিস্টার শেখ ফজলে নূর তাপসের সভাপতিত্বে মশক নিয়ন্ত্রণ কার্যক্রমে গতিশীলতা আনয়নের লক্ষ্যে অনুষ্ঠিত সভায় তিনি এসব কথা বলেন।

মশক নিয়ন্ত্রণকে সর্বোচ্চ গুরুত্ব দিয়ে তৈরি কার বিশদ কর্মপরিকল্পনা শুরু করার কথা তুলে ধরে মেয়র তাপস বলেন মশক নিয়ন্ত্রণের লক্ষ্যে যেসব কর্মপরিকল্পনা তুলে ধরা হলো তার সঠিক বাস্তবায়নে কোনো অজুহাত গ্রহণযোগ্য হবে না।

আমি ২৪ ঘণ্টার মেয়র। যে কোনো সময় যে কোনো সময় কার্যক্রম পরিদর্শনে যাব। সেসময় স্পটে কাউকে পাওয়া না গেলে ধরে নেবেন তিনি আর ডিএসসিসিতে কর্মরত নেই। সেটা তিনি যে পর্যায়ের কর্মকর্তাই হোন।

তিনি স্বাস্থ্য কর্মকর্তা ডা. মীর মোস্তাফিজুর রহমানের নেতৃত্বে আঞ্চলিক নির্বাহী কর্মকর্তাসহ সংশ্লিষ্টদের নিয়ে কমিটি গঠন করে দেয়ার কথা উল্লেখ করে বলেন এ কমিটি মাঠপর্যায়ে প্রাপ্ত কার্যক্রমের প্রতিবেদনের ভিত্তিতে উপযুক্ত কার্যক্রম গ্রহণ এবং তার বাস্তবায়ন করবেন। ওয়ার্ড কাউন্সিলরদের পরামর্শ নেবেন। ৭ জুন থেকে এ কার্যক্রম শুরু হবে।

মেয়র তাপস বলেন, মাঠপর্যায়ে নিয়োজিত মশক কর্মীরা এসব কাজ আন্তরিকতার সঙ্গে পালন করবেন। মনিটরিংয়ের দায়িত্বে নিয়োজিতরা তা সঠিকভাবে পর্যবেক্ষণ করবেন।

এ প্রসঙ্গে তিনি বলেন লার্ভিসাইডিং কাজটি সঠিকভাবে করা গেলে মশক নিয়ন্ত্রণের অর্ধেক কাজ সম্পন্ন হয়ে যায় যদিও এটা লোকচক্ষুর অগোচরে হয়ে থাকে তাই নাগরিকদের মধ্যে এর প্রভাব কম। তবে ফগিং করার সময় শব্দ শুনে নাগরিকরা বুঝতে পারেন যে সিটি করপোরেশন কাজ করছে।

১৪ জুন থেকে দক্ষিণ সিটি করপোরেশন এলাকার জলাশয়, লেক, খাল সনাক্ত করে পরিচ্ছন্নতা কার্যক্রম চালানো শুরু হবে। একসঙ্গে নর্দমা পরিচ্ছন্নতা কার্যক্রমও চালানো হবে। তিনি বলেন ডিএসসিসি এলাকাধীন এসবের মালিক সিটি করপোরেশন। তাই নগরবাসীর কল্যাণে প্রয়োজনুযায়ী পরিকল্পনা গ্রহণ করতে হবে। এক্ষেত্রে কোন সংস্থা কি করবে বা করল তা দেখা হবে না। আমাদের দায়িত্ব আমরা পালন করব। প্রয়োজনে ওইসব সংস্থা আমাদের সঙ্গে যোগাযোগ করবে।

উপস্থাপিত এসব কর্মপরিকল্পনা জ্ঞান মেধা দক্ষতাকে কাজে লাগিয়ে সঠিকভাবে কর্মকর্তারা বাস্তবায়ন করলে নগরবাসীর জন্য নতুন আঙ্গিকে নব যুগের সূচনা হবে, যা করপোরেশনের ইতিহাসে একটি মাইলফলক সৃষ্টি করবে বলে তিনি দৃড় আশাবাদ ব্যক্ত করেন।

বিশদ কর্মপরিকল্পনা তুলে ধরা হলো : জীবজ নিয়ন্ত্রণ (খোলা জলাশয় ব্যবস্থাপনা) এর আওতায় করপোরেশনের ১০টি অঞ্চলের জলাশয়ের কচুরিপানা/আবর্জনা পরিষ্কারকরণ। প্রতিবিঘা জলাশয়ে অষ্কুমানিক ৩০০০-৩৫০০টি তেলাপিয়া এবং ২৫টি হাঁস চাষকরণ। জলাশয়ে নিয়মিত জাল চালনা করা। বর্জ্য ব্যবস্থাপনা বিভাগের মাধ্যমে সকল নর্দমা পরিষ্কারকরণ।

রাসায়নিক নিয়ন্ত্রণ কার্যক্রমের আওতায় প্রতিদিন প্রতি ওয়ার্ডে ৮ জন মশককর্মীর মাধ্যমে সকাল ৯টা হতে ১টা পর্যন্ত লার্ভিসাইডিং এবং প্রতিদিন প্রতি ওয়ার্ডে ১০ জন মশক কর্মীর মাধ্যমে দুপুর ২টা ৩০ মিনিট হতে সন্ধ্যা ৬টা ৩০ মিনিট পর্যন্ত ফগিং কার্যক্রম চালানো

সোর্স রিডাকশন কার্যক্রমের আওতায় অনলাইন এ নগরবাসীর আবেদনের প্রেক্ষিতে প্রতি ওয়ার্ডে ৩ জন মশক কর্মীর মাধ্যমে নাগরিকদের বাসা/ কর্মস্থলে এডিসের প্রজননস্থল ধ্বংস কার্যক্রম ও মোবাইল কোর্ট পরিচালনা কার্যক্রম ইত্যাদি।

সভায় প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা শাহ্ মো. ইমদাদুল হক, প্রধান স্বাস্থ্য কর্মকর্তা ব্রিগেডিয়ার জেনারেল শরিফ আহমেদ প্রধান পরিচ্ছন্ন কর্মকর্তা এয়ার কমোডর আবদুল বাতেন, সচিব মো. আকরামুজ্জামানসহ আঞ্চলিক নির্বাহী কর্মকর্তা, এন্টোমোলজিস্টরা উপস্থিত ছিলেন।

"

প্রতিদিনের সংবাদ ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন
আরও পড়ুন
  • সর্বশেষ
  • পাঠক প্রিয়
close