আবদুল আলীম, নারায়ণগঞ্জ

  ২৫ জানুয়ারি, ২০২০

নারায়ণগঞ্জে মর্গ চলছে সেকেলে যন্ত্রপাতিতে

খুন, আত্মহত্যা, অপমৃত্যু, দুর্ঘটনাসহ বিভিন্ন অস্বাভাবিক ঘটনায় মৃত্যুর রহস্য উদ্ঘাটনের উপায় হচ্ছে ময়নাতদন্ত। ময়নাতদন্তের সঠিক তথ্যেই মৃত্যুর প্রকৃত কারণ উন্মোচন হয়। এতে পাওয়া যায় ন্যায়বিচার। ময়নাতদন্ত ছাড়া সঠিক বিচার কোনোভাবে সম্ভব নয়। আর সঠিক ময়নাতদন্ত করতে প্রয়োজন আধুনিক যন্ত্রপাতি সঙ্গে ময়নাতদন্তের উপযুক্ত পরিবেশ ও ফরেনসিক সার্জনের উঁচুমাত্রার দক্ষতা।

নারায়ণগঞ্জে সাতটি থানা এলাকার অস্বাভাবিক মৃত্যু ময়নাতদন্তের জন্য রয়েছে একটি লাশকাটা ঘর (মর্গ)। মর্গ থাকলেও মর্গের সকল প্রয়োজনীয় যন্ত্রপাতি নেই। মরচুয়ারি (মৃত দেহ সংরক্ষণের হিমাগার) নেই, নেই কফিন (কাঠের বাক্স)। মর্গে এ বছর প্রয়োজনীয় সব যন্ত্রপাতির আনয়নের কথা থাকলেও যন্ত্রপাতি আনা হবে কিনা সেটা এখনো অনিশ্চিত। আধুনিক ব্যবস্থাপনা না থাকায় কোনো রকমে চলছে ময়নাতদন্তের কার্যক্রম।

সরেজমিন দেখা যায়, মর্গের প্রথম জানালাটি ভাঙা, ভেতরে গিয়ে দেখা যায় মর্গের দুটির কক্ষের অধিকাংশ জানালার কাচ ভেঙে গেছে। এসি চারটি। তবে এর দুটি নষ্ট। একদিকে জানালার কাচ ভাঙা অন্যদিকে এসির কার্যকারিতা কম হওয়ায় মর্গ শীতাতপ নিয়ন্ত্রণে নেই। পানির পর্যাপ্ত ব্যবস্থা না থাকায় মর্গের মেঝে অপরিচ্ছন্ন।

মর্গে ময়নাতদন্তের সময় সকাল ৮টা থেকে বিকাল ৫টা। দিনের অন্য সময়ে লাশ আসলে পরদিন লাশের ময়নাতদন্ত করা হয়। মর্গের অধিক সময় লাশ পড়ে থেকে লাশে দ্রুত পচন ধরে। অতিরিক্ত লাশ হলে মর্গে লাশ এনে ময়লা ও অপরিচ্ছন্ন স্থানে ফেলে রাখা হচ্ছে। অপরিচ্ছন্ন পরিবেশে চলে লাশের ময়নাতদন্ত।

বিভিন্ন সূত্রে জানা গেছে, ২০১৩ সালের ১৬ জানুয়ারি প্রয়াত সংসদ সদস্য নাসিম ওসমান শীতাতপ নিয়ন্ত্রিত আধুনিক মর্গ হাউসটি উদ্বোধন করেন। কিন্তু সাত বছরেও মর্গের ব্যবস্থাপনায় কোনো উন্নতি করা হয়নি। একই সংখ্যক এসি ও যন্ত্রপাতি দিয়ে মর্গের কার্যক্রম চলছে। মর্গের এক কর্মী জানিয়েছেন, জেলায় একাধিক খুনসহ অন্যান্য ঘটনায় লাশ আসলে দুটো লাশ ব্যতীত সব লাশ নিয়ে মেঝেতে ফেলে রাখা হয়। লাশ থেকে রক্ত গড়িয়ে পুরো মেঝে ভিজে যায়। পরদিন লাশ কাটতে কাটতে লাশ পচে যায়, দুর্গন্ধ বের হয়।

মর্গের তত্ত্বাবধায়ক দরবন বলেন, মর্গে লাশের সংখ্যা বেশি হলে লাশ নিচে রাখি। আর ঝড়ের বাতাসে জানালার কাচগুলা ভাইঙ্গা গেছে। আমরা হাসপাতালের স্যারকে জানাইছি। তারা ব্যবস্থা গ্রহণ করলে সব ঠিক হয়ে যাবে। হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের সার্বিক তত্ত্বাবধানে মর্গ পরিচালিত হয়। হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ জানিয়ে মর্গের সমস্যা সম্পর্কে গণপূর্ত বিভাগকে জানানো হয়েছে।

"

প্রতিদিনের সংবাদ ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন
আরও পড়ুন
  • সর্বশেষ
  • পাঠক প্রিয়
close