নিজস্ব প্রতিবেদক

  ১১ ডিসেম্বর, ২০১৯

লাম্পি স্কিন ডিজিজ প্রতিরোধ

ভ্যাকসিন দিচ্ছে সরকার

সম্প্রতি বাংলাদেশে গবাদিপশুতে লাম্পি স্কিন ডিজিজ নামে ভাইরাস জনিত একধরনের চর্মরোগ দেখা দিচ্ছে। এ রোগে প্রাপ্তবয়স্ক গরু মহিষের চেয়ে অল্প বয়সের গরু মহিষ বেশি আক্রান্ত হচ্ছে। রোগটি মহামারি আকারে দেখা দিলেও আতঙ্কের কিছু নেই বলে উল্লেখ করেন প্রাণিচিকিৎসকরা। রোগটি প্রতিরোধে সরকার কৃষকের মাঝে ভ্যাকসিন বিতরণ করছে।

জানা যায়, ভাইরাস জনিত এ চর্মরোগটি গরু মহিষের চামড়ায় নডিউল বা গুটি তৈরি করে। রোগটি পক্সভিরিড পরিবারের অন্তর্গত কেপরিওপক্স জেনাসের ভাইরাস দ্বারা গঠিত হয়। রোগটির বাহক মশা, মাছি ও আঠালি। রোগটি আক্রান্ত প্রাণীর লালা, নাক ও চোখ হতে নির্গত পানি দ্বারা, আক্রান্ত ষাঁড়ের বীর্যের মাধ্যমে সুস্থ গাভীকে কৃত্রিম প্রজনন করালে এবং আক্রান্ত গরুর দুধ খেলে অথবা আক্রান্ত গরুর দুধের বাঁট চাটলে বাছুর আক্রান্ত হয়। এছাড়া গবাদিপশু এক স্থান হতে অন্য স্থানে গমন করলেও রোগটি ছড়ায়।

রোগটি সম্পর্কে প্রাণিসম্পদ অধিদফতরের সহকারী পরিচালক (প্রাণী স্বাস্থ্য প্রশাসন) ডা. আবু সুফিয়ান বলেন, বাংলাদেশে প্রথমবারের মতো রোগটি এবারই ধরা পড়ে। রোগটি মূলত ১৯২৯ সালে সর্বপ্রথম আফ্রিকা মহাদেশের জাম্বিয়াতে দেখা যায়। তিনি বলেন, রোগটি নিয়ে আতঙ্কিত হওয়ার কিছু নেই। রোগটি প্রতিরোধে এরই মধ্যে সরকারের পক্ষ থেকে ৪ লাখ ডোজ ভ্যাকসিন নাম মাত্র মূল্যে বিতরণ করা হয়েছে কৃষকের মাঝে। ক্রমান্বয়ে দেশের আক্রান্ত জেলা উপজেলায় এই ভ্যাকসিন বিতরণ করা হবে। তবে ভাইরাস জনিত রোগটির কোন সুনির্দিষ্ট চিকিৎসা নেই। শুধু সচেতনতার মাধ্যমেই রোগটি প্রতিরোধ করা সম্ভব। এরই মধ্যে খামারিদের মধ্যে সচেতনতা সৃষ্টির লক্ষ্যে জেলা উপজেলা পর্যায়ে লিফলেট, পোস্টার বিতরণসহ উঠান বৈঠক করা হয়েছে। তিনি বলেন, তবে রোগের লক্ষণ অনুযায়ী চিকিৎসা করাতে হয়। প্রাথমিকভাবে অ্যান্টিপাইরেটিক ও অ্যান্টিহিস্টামিন দিয়ে চিকিৎসা করা হয়। এছাড়া নডিউল বা গুটি ফেটে গেলে এবং সেকেন্ডারি ব্যাক্টেরিয়াল ইনফেকশন দমন করার জন্য সিস্টেমিক অ্যান্টিবায়োটিক প্রয়োগ করা হয়। এছাড়া ফেটে যাওয়া গুটিতে যেনো মশা মাছি বসতে না পারে সেজন্য ফ্লাই রিপিলেন্ট ব্যবহার করা যাবে। তাছাড়া তিনি বলেন, রোগটি ২১ দিন পর এমনিতেই সেরে উঠে।

এই রোগটি নিয়ন্ত্রণে তথ্য কর্মকর্তা (প্রাণিসম্পদ) ডা. মো. এনামুল কবির বলেন, খামারের ড্রেনেজ ব্যবস্থা ও আশপাশের পরিবেশ পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন রাখতে হবে। অসুস্থ গবাদিপশুকে সুস্থ গবাদিপশু থেকে আলাদা করে রাখতে হবে। আক্রান্ত পশুকে মশারির ভেতর রাখতে হবে। খামারের সার্বিক হাইজিন ও বায়োসিকিউরিটি ব্যবস্থা উন্নয়নের জন্য খামারিদের প্রশিক্ষণ প্রদান করতে হবে। এছাড়া সুস্থ গরুকে দেশে উৎপাদিত গোট পক্স টিকা প্রয়োগ করতে হবে। অন্যদিকে খামারে কোনো গরু আক্রান্ত হলে উপজেলা প্রাণিসম্পদ কার্যালয়ে যোগাযোগ করতে হবে এবং রেজিস্টার্ড ভেটেরিনারি চিকিৎসকের পরামর্শ মোতাবেক প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করতে হবে।

"

প্রতিদিনের সংবাদ ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন
আরও পড়ুন
  • সর্বশেষ
  • পাঠক প্রিয়
close