মহানগর (সিলেট) প্রতিনিধি

  ২২ নভেম্বর, ২০১৯

সিলেট বিআরটিএ অফিসে চাপ বেড়েছে দেড় গুণ

চলতি বছরের নভেম্বর মাসের প্রথম থেকে নতুন সড়ক আইন কার্যকর হওয়ার পর থেকে বাংলাদেশ সড়ক পরিবহন কর্তৃপক্ষ (বিআরটিএ) সিলেট অফিসে ভিড় বেড়েছে চালকদের। বড় অঙ্কের মামলা থেকে বাঁচার জন্য তড়িঘড়ি করে প্রয়োজনীয় কাগজপত্রাদি তৈরিতে ইতোমধ্যে ব্যস্ত হয়ে পড়েছেন চালকরা। চাপ সামলাতে অফিশিয়াল কাজের বাইরেও তদারকি করছেন কর্মকর্তারা। এদিকে চালকদের অভিযোগ রয়েছে নির্ধারিত তারিখে ড্রাইভিং লাইসেন্স পাচ্ছেন না তারা।

চলতি বছরের ২২ অক্টোবর সড়ক পরিবহন আইন ২০১৮ কার্যকরের তারিখ ঘোষণার পর থেকে সিলেট বিআরটিএ অফিসে চালক ও যানবাহনের মালিকের আনাগোনা বেড়েছে। সিলেট বিআরটিএ প্রাঙ্গণ থেকে শুরু করে অফিসের সামনে পর্যন্ত দীর্ঘ সারি লেগে থাকছে। বিশেষ করে নতুন ড্রাইভিং লাইসেন্সের আবেদনের জন্য ভিড় করছেন চালকরা। দীর্ঘ সারিতে দাঁড়াতে কষ্ট হলেও দিন শেষে কাজ শেষ করে হাসিমুখে বাড়ি ফিরছেন বেশির ভাগই। যদিও সেবা নিয়ে বিভিন্ন অভিযোগ থাকলেও সেটি আমলে নিয়ে সুষ্ঠুভাবে সেসব সমাধানের চেষ্টাও করে যাচ্ছেন সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তা।

গতকাল বৃহস্পতিবার সকাল ১০টায় বাংলাদেশ সড়ক পরিবহন কর্তৃপক্ষ (বিআরটিএ) সিলেট অফিসে গিয়ে দেখা যায় দীর্ঘ সারি। কেউ এসেছেন নতুন ড্রাইভিং লাইসেন্সের জন্য আবেদন করতে, কেউ এসেছেন যানবাহনের রেজিস্ট্রেশনের কাগজ নিতে আবার কেউবা এসেছেন লাইসেন্সের স্মার্টকার্ড সংগ্রহ করতে। শুধু সিলেট নগরের চালকরা নন, জকিগঞ্জ, গোলাপগঞ্জসহ দূর-দূরান্ত থেকে এসে নিজেদের কাগজপত্রাদি ঠিক করতে ভিড় জমাচ্ছেন চালক ও যানবাহন মালিকরা।

সিলেট নগরের শিবগঞ্জ এলাকার বাসিন্দা আমির হোসেন বলেন, আমি লাইসেন্স নবায়নের জন্য এখানে এসেছি। আগেও অনেকবার বিআরটিএ অফিসে এসেছি কিন্তু আগের থেকে এখন গ্রাহকদের সংখ্যা অনেক বেশি। নতুন সড়ক পরিবহন আইনটি আমার দৃষ্টিতে ভালো হয়েছে। এই আইনের কারণে ইতোমধ্যে সড়কে অনেকটা শৃঙ্খলা আসতে শুরু করেছে। সিলেট নগরে উবার চালক রায়হান উদ্দিন আহমদ বলেন, সামান্যতম অসুবিধা আমাদের আছে। ড্রাইভিং লাইসেন্স নবায়ন, গাড়ির মালিকানাসহ সব ধরনের সেবা একই কক্ষ থেকে দেওয়া হচ্ছে। এটার জন্য সিরিয়ালও একই। একেকটা সেবার জন্য আলাদা বিভাগ থাকলে দ্রুত সেবা গ্রহণ করে বাড়িতে চলে যেতে পারতেন গ্রাহকরা। এতে করে দীর্ঘ সময়ের সারিতে দাঁড়িয়ে যে ভোগান্তি সেটাতে কাউকে পড়তে হতো না।

সিলেট বিআরটিএ সূত্রে জানা যায়, সিলেট গত অক্টোবর মাসে মোট লার্নার আবেদন জমা পড়েছে ৩ হাজার ৫২০টি। চলতি মাসের ১৭ তারিখ পর্যন্ত মোট লার্নার আবেদন জমা পড়েছে ৩ হাজার ৩৬০টি। অর্থাৎ গত এক মাসে যে পরিমাণ আবেদন জমা পড়েছে তার সমপরিমাণ আবেদন জমা পড়েছে গত ১৭ দিনে।

সিলেট বিআরটিএ অফিসে বিভিন্ন সেবা নেওয়ার জন্য চালকদের ভিড় বাড়লেও ড্রাইভিং লাইসেন্স না পাওয়া নিয়ে বিস্তর অভিযোগ রয়েছে তাদের। তারিখের পর তারিখ ঘুরে এলেও লাইসেন্স পাচ্ছেন না তারা। ফলে এ নিয়ে অনেকটা ক্ষোভ রয়েছেন চালকদের মধ্যে। প্রতিদিনের সংবাদের কাছে এমনই এক অভিযোগ করেছেন সুনামগঞ্জের বিশ্বম্ভপুর থেকে লাইসেন্স নিতে আসা কফিল উদ্দিন। তিনি বলেন, ড্রাইভিং লাইসেন্স নেওয়ার জন্য এই নিয়ে চারবার তারিখ দেওয়া হয়েছে আমাকে। গত দুই মাস আগে তারিখ দেওয়া হয়েছিল আজ এসে সংগ্রহ করে নেওয়ার জন্য। আজ আসার পর আবার নতুন তারিখ দেওয়া হয়েছে। তাও ছয় মাস পর। বর্তমানে যে অবস্থা আমার কাছে যেসব কাগজ আছে এসব দিয়ে পুলিশ কোনোভাবেই মানতে চায় না। ড্রাইভিং লাইসেন্স ছাড়া পুলিশ মানতেই চায় না। আরো বেশ কয়েকজন এই বিষয়ে অভিযোগ করলেও নাম প্রকাশে কোনো মন্তব্য করতে রাজি হননি।

নির্ধারিত সময়ে ড্রাইভিং লাইসেন্স না পাওয়ার বিষয়ে বিআরটিএ কর্তৃপক্ষ জানিয়েছেন, সিলেট থেকে কোনো কিছু করার থাকে না। ঢাকা থেকে লাইসেন্স প্রিন্ট হয়ে আসছে না। ঢাকায় যেখানে লাইসেন্স প্রিন্ট করা হয় সেখানে সমস্যা থাকার কারণেই নির্ধারিত সময়ে ড্রাইভিং লাইসেন্স দেওয়া যাচ্ছে না। যার কারণে চালকদের বার বার তারিখ দেওয়া হচ্ছে। চলতি বছরের ফেব্রুয়ারি মাস থেকে সারা দেশেরই ড্রাইভিং লাইসেন্স প্রিন্ট হচ্ছে না বলেও জানা গেছে।

"

প্রতিদিনের সংবাদ ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন
আরও পড়ুন
  • সর্বশেষ
  • পাঠক প্রিয়
close