রংপুর ব্যুরো

  ২১ নভেম্বর, ২০১৯

তামাকমুক্ত রংপুর নগরী গড়ার ক্ষেত্রে তরুণদের ভূমিকা জরুরি

তরুণদের সঙ্গে এসিডির মতবিনিময় সভায় বক্তারা

রংপুর মহানগরীসহ পুরো দেশ আজ তামাকের ভয়াল ছোবলে মারাত্মকভাবে আক্রান্ত। সমাজের যেকোনো অন্যায়-অসংগতি দূর করার ক্ষেত্রে যুবসমাজের গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রয়েছে। রংপুর সিটি করপোরেশন ও স্থানীয় প্রশাসনের পাশাপাশি রংপুর নগরীকে তামাকমুক্ত নগরী হিসেবে গড়ে তোলার ক্ষেত্রে তরুণ কিংবা যুবসমাজের ভূমিকা অত্যন্ত জরুরি।

গতকাল বুধবার সকালে অনুষ্ঠিত সভায় ‘তামাকমুক্ত নগরী গড়ার ক্ষেত্রে জনসমর্থন বাড়াতে যুবসমাজ, তামাকবিরোধী কোয়ালিশন ও এন্টি টোব্যাকো মিডিয়া এলায়েন্স-আত্মা’র সদস্যদের নিয়ে এক মতবিনিময় সভায় বক্তারা এসব কথা বলেন বক্তারা।

রাজশাহীর উন্নয়ন সংস্থা ‘অ্যাসোসিয়েশন ফর কমিউনিটি ডেভেলপমেন্ট-এসিডি’র আয়োজনে ও ‘ক্যাম্পেইন ফর টোব্যাকো ফ্রি কিড্স-সিটিএফক’র সহযোগিতায় অনুষ্ঠিত সভায় প্রধান অতিথি ছিলেন ‘সিটিএফক’র গ্র্যান্ট্স ম্যানেজার আবদুস সালাম মিয়া। ‘এসোড’র রংপুর কার্যালয়ের সম্মেলন কক্ষে আয়োজিত সভায় বিশেষ অতিথি ছিলেন সরকারি বেগম রোকেয়া কলেজের বাংলা বিভাগের সাবেক বিভাগীয় প্রধান প্রফেসর মোহাম্মদ শাহ আলম। তামাক নিয়ন্ত্রণ কোয়ালিশনের রংপুর অঞ্চলের ফোকাল পার্সন সুশান্ত ভৌমিকের সভাপতিত্বে ও ‘এসিডি’র মিডিয়া ম্যানেজার আমজাদ হোসেন শিমুলের উপস্থাপনায় এ সময় রংপুরের বিভিন্ন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের রোভার স্কাউট, গার্লস গাইড ও রেড ক্রিসেন্ট সোসাইটির সদস্য, আইনজীবীসহ বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার মানুষ উপস্থিত ছিলেন।

প্রধান অতিথির বক্তব্যে ‘সিটিএফকে’র গ্র্যান্টস ম্যানেজার আবদুস সালাম মিয়া বলেন, ‘তামাকমুক্ত রংপুর নগরী গড়তে এখন থেকেই যুবসমাজকে তামাকবিরোধী আন্দোলন গড়ে তুলতে হবে। বিভিন্ন সভা-সমাবেশে তামাক সেবনের ও পাবলিক প্লেসে ধূমপানের ক্ষতিকর দিকগুলো উল্লেখ করে যুবসমাজকে কথা বলতে হবে। বর্তমানে ই-সিগারেটের প্রতি তরুণ ও যুবসমাজকে আকৃষ্ট করতে নানা অপকৌশল চালানো হচ্ছে। ই-সিগারেটকে ধূমপান ছেড়ে দেওয়ার উপায় হিসেবে বলা হচ্ছে। কিন্তু সিগারেটের চেয়ে এই ইলেকট্রনিক সিগারেট আরো ভয়াবহ। এটির ক্ষতির দিক সম্পর্কে আলোচনা ও ই-সিগারেট বন্ধে যুবসমাজকেই ভূমিকা পালন করতে হবে।’

বিশেষ অতিথির বক্তব্যে প্রফেসর মোহাম্মদ শাহ আলম বলেন, ‘তামাক নিয়ন্ত্রণে আইন রয়েছে কিন্তু এর বাস্তবায়ন নেই। তামাকের অবৈধ বিজ্ঞাপনের পাশাপাশি রংপুর মহানগরীর পাবলিক প্লেসগুলোতে দেদার ধূমপান হচ্ছে। তাই আমরা যুবসমাজকে সঙ্গে নিয়ে সিটি করপোরেশন কর্তৃপক্ষ ও স্থানীয় প্রশাসনের কাছে যাব, যাতে করে তারা পাবলিক প্লেস ধূমপানমুক্ত রাখতে বিভিন্ন স্থানে স্মোকিং জোন করে দেওয়ার ব্যবস্থা করেন।’

সভাপতির বক্তব্যে তামাক নিয়ন্ত্রণে যুবসমাজের অগ্রগণ্য ভূমিকার কথা উল্লেখ করে সুশান্ত ভৌমিক বলেন, ‘যুবসমাজ ধূমপান থেকেই আস্তে আস্তে মাদকের ভয়াল ছোবলে আক্রান্ত হচ্ছে। কাজেই তোমরা তরুণরাই রংপুর নগরীকে স্বাস্থ্যসম্মত সুন্দর ও ধূমপানমুক্ত নগরী হিসেবে গড়ে তুলতে পারো। আমাদের সবার সম্মিলিত প্রচেষ্টায় অদূর ভবিষ্যতে রংপুর নগরীকে একটি ধূমপানমুক্ত নগরী হিসেবে গড়ে তুলতে পারব বলে আশাবাদী।’

মতবিনিময় সভায় ‘ধূমপান ও তামাকজাত দ্রব্য ব্যবহার (নিয়ন্ত্রণ) আইন বাস্তবায়নে এবং তামাকমুক্ত রংপুর নগরী গড়তে যুবসমাজের ভূমিকা’ শীর্ষক পাওয়ার পয়েন্ট প্রেজেন্টেশন দেন এসিডির প্রোগ্রাম ম্যানেজার মো. শাহীনুর রহমান। পরে রংপুর নগরীকে শতভাগ তামাকমুক্ত নগরী হিসেবে গড়ে তোলার লক্ষ্যে স্থানীয় পর্যায়ের যুব ও সুশীলসমাজ এবং ‘আত্মা’র রংপুর বিভাগীয় সদস্যদের সমন্বয়ে একটি কমিটি গঠন করা হয়। কমিটিতে সরকারি বেগম রোকেয়া কলেজের বাংলা বিভাগের সাবেক বিভাগীয় প্রধান প্রফেসর মোহাম্মদ শাহ আলমকে সভাপতি এবং ‘চ্যানেল আই’র রংপুর অফিসের ব্যুরোপ্রধান ও ‘আত্মা’র সদস্য মেরিনা লাভলীকে সাধারণ সম্পাদক করা হয়েছে। এ ছাড়া বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের গণযোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগের শিক্ষার্থী মুবাশ্বিরা মুনাওয়ারা নাহিয়ান এবং রংপুর সরকারি কলেজের শিক্ষার্থী মো. মিন্টু মিয়াকে ইয়ূথ গ্রুপের সমন্বয়কারীর দায়িত্ব দেওয়া হয়।

মতিবিনিয়ম সভায় অন্যদের মধ্যে পরিবেশ আন্দোলন-বাপার সদস্য অ্যাডভোকেট মো. ইসহাক আলী, এসিডির অ্যাডভোকেসি অফিসার মো. তুহিন ইসলাম, প্রোগ্রাম অফিসার মো. তৌফিকুল ইসলাম প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।

"

প্রতিদিনের সংবাদ ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন
আরও পড়ুন
  • সর্বশেষ
  • পাঠক প্রিয়
close