চট্টগ্রাম ব্যুরো

  ১৫ নভেম্বর, ২০১৯

চট্টগ্রামে প্রতিদিন শনাক্ত ৮০ ডায়াবেটিস রোগী

বিশ্বজুড়ে ডায়াবেটিস সম্পর্কে সচেতনতা বৃদ্ধির লক্ষ্যে প্রতি বছর ১৪ নভেম্বর বিশ্ব ডায়াবেটিস দিবস পালিত হয়েছে। বিশ্বজুড়ে ডায়াবেটিস রোগ ব্যাপক হারে বেড়ে যাওয়ায়, বিশ্ব ডায়াবেটিস ফেডারেশন (আইডিএফ) ও বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা ১৯৯১ সালের ১৪ নভেম্বরকে ডায়াবেটিস দিবস হিসেবে ঘোষণা করে। এ দিন বিজ্ঞানী ফ্রেডরিক বেনটিং জন্ম নিয়েছিলেন এবং তিনি বিজ্ঞানী চার্লস বেস্টের সঙ্গে একত্রে ইনসুলিন আবিষ্কার করেছিলেন।

চট্টগ্রামে দিনদিন নারী-পুরুষ সমানুপাতে বাড়ছে ডায়াবেটিস আক্রান্ত রোগীর সংখ্যা। চট্টগ্রাম ডায়াবেটিক সমিতির তথ্যমতে বর্তমানে চট্টগ্রাম নগরীতে ২ লাখ ৬৬ হাজারের বেশি মানুষ ডায়াবেটিস আক্রান্ত। প্রতিদিন গড়ে নতুনভাবে শনাক্ত হচ্ছেন ৮০ জন রোগী। এ ছাড়াও প্রতি সাতজন গর্ভবতীর মধ্যে একজন ডায়াবেটিস আক্রান্ত হচ্ছেন।

চিকিৎসকরা বলছেন, গর্ভবতী মায়েদের অপুষ্টি থাকলে তাদের সন্তানদের ভবিষ্যতে ডায়াবেটিস হওয়ার ঝুঁকি অনেক বেশি। ফলে গর্ভবতী অবস্থায় চিকিৎসা নিলে মা ও নবজাতক উভয়েই ডায়াবেটিস আক্রান্ত হয়। বিয়ের সময় মেয়েদের এ ব্যাপারে সচেতন করতে পারলে ডায়াবেটিস প্রতিরোধে অনেক ভালো ফল পাওয়া যাবে বলে মনে করছেন চিকিৎসকরা।

বৈশ্বিক গবেষণায় বলা হয়েছে, বাংলাদেশে মৃত্যুর সপ্তম প্রধান কারণ ডায়াবেটিস। ২০৪০ সালে মৃত্যু বেড়ে দ্বিগুণেরও বেশি হতে পারে। আর সরকারি পরিসংখ্যানে দেখা গেছে, দেশে ডায়াবেটিসে আক্রান্ত মানুষের সংখ্যা বাড়ছে। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, রোগটি এখন প্রায় প্রতিটি পরিবারের উদ্বেগের বিষয়। ২০১৮ সালের ইন্টারন্যাশনাল ডায়াবেটিস ফেডারেশনের (আইডিএফ) পরিসংখ্যান অনুযায়ী, বর্তমানে দেশে ৭৩ লাখেরও বেশি লোক ডায়াবেটিসে আক্রান্ত। প্রায় ৪৫ লাখ (৬২ শতাংশ) ডায়াবেটিক রোগীকে সেবার আওতায় আনা সম্ভব হয়েছে। আর ৩৮ শতাংশ রোগী এখনো সেবার বাইরে। দিবসটির এ বছরের প্রতিপাদ্য ছিল ‘আসুন পরিবারকে ডায়াবেটিসমুক্ত রাখি’।

এদিকে চট্টগ্রামসহ সারা দেশে নানা আয়োজনে দিবসটি পালন করেছে বাংলাদেশ ডায়াবেটিক সমিতি। এছাড়া স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় ও বাংলাদেশ ডায়াবেটিক সমিতি যৌথভাবে সারা দেশের মেডিকেল কলেজ, সিভিল সার্জন কার্যালয়, সব জেলা সদর হাসপাতাল, উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে সামাজিক সচেতনতার কার্যক্রম হিসেবে দিবসটি উপলক্ষে র‌্যালি ও আলোচনা সভার আয়োজন করে।

স্বাস্থ্য অধিদফতর চট্টগ্রামের পরিচালক ডা. হাসান শাহারিয়ার কবির বলেন, এই রোগ একবার হলে আর ভালো হয় না। রোগ নিয়ন্ত্রণে রেখে সুস্থ মানুষের মতো জীবনযাপন করা সম্ভব। গর্ভবতী মায়েদের অপুষ্টি থাকলে তাদের সন্তানদের ভবিষ্যতে ডায়াবেটিস হওয়ার ঝুঁকি অনেক বেশি। ফলে বিয়ের সময় মেয়েদের এ ব্যাপারে সচেতন করতে পারলে ডায়াবেটিস প্রতিরোধে অনেক ভালো ফল পাওয়া যাবে।

তিনি আরো বলেন, চট্টগ্রামসহ সারা দেশে ডায়াবেটিস রোগীদের চিহ্নিত বা শনাক্ত করতে কাজ করছে স্বাস্থ্য বিভাগ। এটি জীবনব্যাপী রোগ বলে এর জন্য খরচ অনেক বেশি হয়। সব পরিবারের পক্ষে সেই খরচ বহন করা সম্ভব নয়। সরকার কমিউনিটি ক্লিনিকে বিনামূল্যে ডায়াবেটিস পরীক্ষার ব্যবস্থা করেছে। সরকারের ইনসুলিন প্রাপ্যতা সহজ করা হয়েছে।

চট্টগ্রাম ডায়াবেটিক সমিতির সাধারণ সম্পাদক অধ্যাপক জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী বলেন, ডায়াবেটিস প্রতিরোধ সচেতনতা বাড়াতে চট্টগ্রামে ধর্মীয় প্রতিষ্ঠানে ও ধর্মীয় নেতাদের সম্পৃক্ত করা হয়েছে। এছাড়াও সারা বছর ডায়াবেটিস সম্পর্কে গণসচেতনতা সৃষ্টির লক্ষ্যে সারা বছর নানা ধরনের বিভিন্ন কর্মসূচির পালন করা হয়ে থাকে।

"

প্রতিদিনের সংবাদ ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন
আরও পড়ুন
  • সর্বশেষ
  • পাঠক প্রিয়
close