রাজধানীর মোহাম্মদপুরে সৈয়দ রোডে গৃহকর্মী জান্নাতীকে (১২) হত্যার কথা স্বীকার করে আদালতে জবানবন্দি দিয়েছেন বাড়ির গৃহকর্ত্রী রোকসানা পারভিন। গতকাল শুক্রবার ঢাকার একটি আদালতে রোকসানা পারভিন জবানবন্দি দেন। মোহাম্মদপুর থানার ওসি জি জি বিশ্বাস এই তথ্য নিশ্চিত করেন।

ওসি বলেন, রোকসানা পারভিন হত্যার কথা স্বীকার করে আদালতে স্বীকারোক্তি দিয়েছেন। তিনি গত মঙ্গলবার শিশুটিকে মারধর করেছেন। এ সময় দেয়ালের সঙ্গে আঘাত পেয়ে শিশুটি অজ্ঞান হয়ে যায়। গৃহকর্ত্রীর মারধরের কারণেই শিশুটির মৃত্যু হয়েছে। গত বৃহস্পতিবার রাতে জিজ্ঞাসাবাদের পর গতকাল সকালে রোকসানা পারভিন আদালতে স্বীকারোক্তি দেওয়ার কথা জানান। এরপর মামলার তদন্ত কর্মকর্তা আদালতে ১৬৪ ধারায় জবানবন্দি দেওয়ার আবেদন করেন। আদালত গতকাল দুপুরের পর তার স্বীকারোক্তি লিপিবদ্ধ করেন।

ওসি বলেন, আসামিকে রিমান্ডে নেওয়ার আগেই তিনি স্বীকারোক্তি দিতে রাজি হয়। তার স্বীকারোক্তি দেওয়ার পর আদালত তাকে কারাগারে পাঠানোর নির্দেশ দিয়েছেন। এই মামলায় অপর আসামি রোকসানা পারভিনের স্বামী পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী মো. সাইদ আহমেদ পলাতক রয়েছেন। তাকে গ্রেফতারের চেষ্টা চলছে। গত বৃহস্পতিবার দুপুরে জান্নাতীর বাবা জানু মোল্লা মোহাম্মদপুর থানায় হত্যা মামলা করেন।

ওসি জানান, গত মঙ্গলবার রাত সাড়ে ১২টার দিকে হাসপাতাল থেকে আমাকে ফোনে জানানো হয়, ১২ বছরের এক কিশোরীকে নিয়ে আসা হয়েছে। আমার অফিসার ও আমি নিজে গিয়ে শিশুটির লাশ দেখে আসি। তার গায়ে আঘাতের চিহ্ন দেখে সন্দেহ হয়। পরে আমরা শিশুর পরিবারকে খবর দেই। তারা গত বৃহস্পতিবার এসে অভিযোগ দিয়েছেন। এর আগে গৃহকর্ত্রীকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য রোকসানা পারভিনকে আটক করা হয়। মামলার পর রোকসানা পারভিনকে গ্রেফতার দেখানো হয়। নিহত গৃহকর্মী জান্নাতীর বাড়ি বগুড়ার গাবতলীতে। তেজগাঁও বিভাগের একজন ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা বলেন, রোকসানা জানান মারধরের পর জান্নাতী অজ্ঞান হয়ে রান্নাঘরে পড়ে যায়। ওই অবস্থাতেই দুই ঘণ্টার মতো ঘরে পড়েছিল। এরপর হাসপাতালে নিয়ে গেলে চিকিৎসকরা জানায় আগেই সে মারা গেছে। রোকসানা পারভিন স্বীকারোক্তিতে তার স্বামীর সম্পৃক্ততা সম্পর্কে তথ্য দেননি। আরো অনেক কিছুই চেপে গেছেন বলে ধারণা করছে পুলিশ।

এর আগে সোহরাওয়ার্দী মেডিকেল কলেজ মর্গ সূত্র জানায়, জান্নাতীর শরীরের নতুন-পুরোনো অসংখ্য আঘাতের চিহ্ন আছে। তারা ধারণা করছেন মৃত্যুর আগে জান্নাতী ধর্ষণের শিকার হয়েছিল।

"