নারায়ণগঞ্জ প্রতিনিধি

  ২২ আগস্ট, ২০১৯

মশা নিধনে নারায়ণগঞ্জ সিটির উদ্যোগ

ঢাকা-নারায়ণগঞ্জ লিংক রোডের দুই পাশে ময়লা ফেলা হচ্ছে। ময়লা বাড়তে বাড়তে বিশাল স্তূপে পরিণত হচ্ছে। ময়লার কারণে পুরো ঢাকা-নারায়ণগঞ্জ লিংক রোড মশার প্রজনন কেন্দ্র হয়ে উঠেছে। মশার উপদ্রবে অতিষ্ঠ লিংক রোডের নিকটবর্তী এলাকাবাসী। লিংক রোডে ময়লা ফেলা নিষিদ্ধ হলেও সদর উপজেলার ফতুল্লা, কুতুবপুর, এনায়েতনগর তিনটি ইউনিয়ন ও সিটি করপোরেশনের ময়লা ফেলা হচ্ছে এ সড়কে।

স্থানীয়দের মতে, অতিরিক্ত ময়লার কারণে মশার উপদ্রব দিন দিন বেড়েই চলছে। আর অতিরিক্ত মশার কারণে সবার মাঝে ডেঙ্গুর আতঙ্ক বিরাজ করছে। অনেকেই ভয়ে দিনেও মশারি ও কয়েল ব্যবহার করছে।

সরেজমিন দেখা যায়, সড়কটি এখন ময়লার ভাগাড়ে পরিণত হয়েছে। নম পার্কের বিপরীতে গরুর পচা চামড়া পড়ে আছে। পুরোপুরিভাবে চামড়া এখনো অপসারণ করা হয়নি। অধিকাংশ চামড়া পানি নিষ্কাশনের খালে ফেলে দেওয়া হয়েছে। ময়লার দুগর্ন্ধে সড়কে দাঁড়ানো দায়। লিংক রোডের বিভিন্ন স্থানে ময়লা ফেলে রাখা হয়েছে। লামাপাড়া মোড়ে, ফতুল্লা স্টেডিয়ামের পাশে, নম পার্কের বিপরীতে, জালকুড়িতে বর্ডার গার্ড বাংলাদেশ (বিজিবি) ক্যাম্পের বিপরীতে, ভূঁইগড় থেকে সাইনবোর্ড পর্যন্ত আরো চারটি স্থানে ময়লা আবর্জনার স্তূপ রয়েছে। ময়লার স্তূপে মশা-মাছি ভন ভন করছে।

লিংক রোডে ফতুল্লা খান সাহেব ওসমান আলী স্টেডিয়াম, পরিবেশ অধিদফতর, মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদফতর, কল-কারখানা পরিদর্শকের কার্যালয়সহ বিভিন্ন সরকারি-বেসরকারি প্রতিষ্ঠান রয়েছে। লিংক রোডে ময়লা আবর্জনা ফেলতে ফেলতে পানি নিষ্কাশনের খাল মশার প্রজনন কেন্দ্রে পরিণত হয়েছে। ফলে আশপাশের বাড়ির মানুষ ডেঙ্গু জ্বরের আতঙ্ক নিয়ে আছে।

লামাপাড়া এলাকার একজন বাসিন্দা কবির হোসেন। তার বাড়ির সামনেই রয়েছে ময়লা আবর্জনার স্তূপ। নিজেদের দুর্ভোগের বিষয় জানিয়ে তিনি বলেন, চারদিকে মানুষ ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হচ্ছে। আর আমি থাকি মশা জন্মানোর স্থানে। অতিরিক্ত মশা হয়ে গেছে। রাতে তো কয়েল ছাড়া ঘুমানো যায় না দিনেও মশারি টানিয়ে রাখতে হয়।

একই এলাকার বাসিন্দা লিয়াকত। লিংক রোডের পাশেই রয়েছে তার মুদি দোকান। ময়লার ভোগান্তি নিয়ে বলেন, ময়লার দুর্গন্ধে রাস্তা দিয়ে চলাচল করাই কষ্টকর। চলাচল করার সময় মানুষের দম বন্ধ হয়ে যায়। তাহলে এখানে বসে দোকান চালাই কেমনে বলেন? অনেক কষ্ট হয় এখানে বসে থাকতে।

কুতুবপুর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মনিরুল আলম সেন্টু বলেন, ইউনিয়নের ময়লা ফেলার জন্য ফতুল্লা রেলস্টেশনের পাশে জাবেদুল্লা ফ্যাক্টরির পেছনে ময়লা ফেলার কথা ছিল। কিন্তু এলাকাবাসী মামলা করে বন্ধ করে দিয়েছে। এখন সংগ্রাহকেরা যেখানে সুযোগ পাচ্ছেন সেখানেই ময়লা বিক্ষিপ্তভাবে ফেলছেন।

এ বিষয়ে নারায়ণগঞ্জ সিটি করপোরেশনের বর্জ্য ব্যবস্থাপনা বিভাগের পরিচ্ছন্নতা কর্মকর্তা আলমগীর হিরণ বলেন, অস্থায়ীভাবে আর বেশি দিন ময়লা ফেলা হবে না। মামলা নিষ্পত্তি হলেই খুব স্বল্প সময়ের মধ্যে বর্জ্য ব্যবস্থাপনায় শৃঙ্খলা ফিরে আসবে।

সদর উপজেলার নির্বাহী কর্মকর্তা নাহিদা বারিক এ বিষয়ে বলেন, দীর্ঘদিনে লিংক রোডে ময়লার স্তূপের সৃষ্টি হয়েছে। তাই তাৎক্ষণিকভাবে এই সমস্যার সমাধান করা যাবে না। পর্যায়ক্রমে এর ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।

সড়ক ও জনপদের অধিদফতরের নারায়ণগঞ্জের বিভাগীয় প্রকৌশলী আলীউল হোসেন বলেন, আমরা নোটিস বোর্ড টানিয়ে দিয়েছি সচেতনতার জন্য। এর চেয়ে বেশি আমরা কি করতে পারি? প্রশাসনের বিভিন্ন কর্মকর্তাদের বিষয়টি জানানো হয়েছে, কিন্তু কোথাও থেকে কোনো ধরনের ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে না।

"

প্রতিদিনের সংবাদ ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন
আরও পড়ুন
  • সর্বশেষ
  • পাঠক প্রিয়
close