নিজস্ব প্রতিবেদক

  ২৩ মে, ২০১৯

আমের আড়তে র‌্যাবের অভিযান

১২ হাজার কেজি আম ধ্বংস

অপরিপক্ব আম কার্বাইড দিয়ে পাকিয়ে বাজারে তোলার কারণে ১২ হাজার কেজি অর্থাৎ ৩২১ মণ আম ধ্বংস করেছেন র‌্যাবের ভ্রাম্যমাণ আদালত। একই সঙ্গে তিন ব্যবসায়ীকে ১২ লাখ টাকা জরিমানাও করা হয়েছে। গতকাল বুধবার সকাল থেকে দুপুর পর্যন্ত রাজধানীর যাত্রাবাড়ী এলাকায় অভিযান চালিয়ে অপরিপক্ব এসব আম ধ্বংস করা হয়।

এর আগে রাজধানীর ফল ব্যবসায়ীদের সঙ্গে র‌্যাবের এক বৈঠক হয়। সেখানে ফল ব্যবসায়ীরা প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন, নির্দিষ্ট সময়ের আগে অপরিপক্ব আম তারা বাজারে তুলবেন না। তবে প্রতিশ্রুতির পরও বেশি মুনাফার লোভে বাজারে আম বিক্রি করতে শুরু করেছেন ব্যবসায়ীরা।

অভিযানের নেতৃত্বে থাকা র‌্যাবের নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট সারোয়ার আলম গণমাধ্যমকে জানান, ‘বাজারে এখন শুধু গুটি আম থাকার কথা। ব্যবসায়ীরা ক্যালসিয়াম কার্বাইড মিশিয়ে অপরিপক্ব হিমসাগর আমকে পরিপক্ব করে তুলছেন, যা মানবদেহের জন্য ক্ষতিকর হতে পারে। আরো ১৫ দিন আগে থেকে বাজারে হিমসাগর আম দেখা যাচ্ছে। ল্যাংড়া আসতে আরো আট দিন বাকি। এগুলো সব কেমিক্যাল দিয়ে পাকানো। এ বিষয়ে মহামান্য হাইকোর্ট একটি আদেশও দিয়েছেন। তাই বাজার মনিটরিংয়ের অংশ হিসেবে এই অভিযান।’

সারোয়ার আলম আরো জানান, রাজশাহীর বাগান থেকে হিমসাগর আম পাড়ার কথা আগামী ২৮ মে। এরপর তা ঢাকায় আনার কথা। এমন নির্দেশনা ছিল রাজশাহীর জেলা প্রশাসনের। এ ছাড়া সাতক্ষীরার ল্যাংড়া ৬ জুনের পর বাজারে আসার কথা। কিন্তু এই হিমাসগর ও ল্যাংড়া আম এখনই ঢাকায় পাওয়া যাচ্ছে।

অভিযানে র‌্যাবের সঙ্গে ছিলেন কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতরের উপপরিচালক কৃষিবিদ রফিকুল ইসলাম ভূঁইয়া ও বিএসটিআইয়ের প্রতিনিধিরা। তারা জানান, ক্যালসিয়াম কার্বাইড ব্যবহার করে আমগুলো পাকানো হয়েছে। তাদের মতামত পেয়েই মোট ১২ হাজার কেজি অর্থাৎ ৩২১ মণ আম জব্দ করা হয়। পরে একটি পিকআপ ভ্যানের চাকার নিচে পিষ্ট করা হয় আমগুলো।

সকালে যাত্রাবাড়ীর বিভিন্ন আড়তে অভিযান চলার খবর টের পেয়ে অনেক ব্যবসায়ী দোকান বন্ধ করে পালিয়ে যান। তবে তিনজনকে আটক করে র‌্যাব।

সাদ্দাম হোসেন নামে অভিযুক্ত এক আম ব্যবসায়ী আমে কেমিক্যাল মেশানোর কথা স্বীকার করে বলেন, ‘আমাদের সাতক্ষীরা থেকে ফোন দিয়ে বলেছে, এখানে আম পেকে গেছে, দ্রুত নিয়ে যাও। আমরা নিজেরাও জানি আম পাকে নাই, কিন্তু তাদের চাপাচাপিতে আমাদের আম কিনতে হয়েছে। আম এনে দেখি এগুলো পাকেনি। তাই কার্বাইড দিয়ে পাকানো হয়েছে।’

অভিযান শেষে সংবাদ সম্মেলনে ম্যাজিস্ট্রেট সারোয়ার আলম বলেন, ‘যারা আমের ব্যবসা করে তারা কেউ চাষি না, তারা ব্যবসায়ী। তারা এরই মধ্যে আমের বাগান কিনে ফেলেছে। তাদের মধ্যে আগে বাজারে আম নেওয়ার একটি প্রতিযোগিতা কাজ করে। তাই তারা মনে করেছিল আম এখন বাজারে এনে ১৫০ টাকায় বিক্রি করবে। তাই এগুলো এনে বিক্রি করছিল।’

বাজারের অন্যান্য ফলে কেমিক্যালের ব্যবহারের বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি বলেন, সব মিলে বাজারে ফলের অবস্থা ভালো। আগে ফরমালিন মেশানোর মতো ঘটনা ঘটত, সেটা এখন নেই। এ বছর শুধু আমরা মেয়াদোত্তীর্ণ খেজুর পেয়েছি। হাইকোর্টের নির্দেশনা অনুযায়ী রাজশাহী জেলা প্রশাসনের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী, গুটি আম ১৫ মে, গোপালভোগ ২০ মে, রানীপছন্দ ও লক্ষ্মা বা লক্ষ্মণভোগ ২৫ মে, হিমসাগর বা ক্ষিরসাপাত ২৮ মে, ল্যাংড়া আম আগামী ৬ জুন এ ছাড়া আ¤্রপালি, ফজলি ও সুরমা ১৬ জুন এবং আগামী ১ জুলাই থেকে আশ্বিনা আম পাড়া যাবে।

"

প্রতিদিনের সংবাদ ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন
আরও পড়ুন
  • সর্বশেষ
  • পাঠক প্রিয়
close