জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ে (জাবি) দুই যুগেরও বেশি সময় ধরে অচল রয়েছে কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদ (জাকসু)। এ সময় বিশ্ববিদ্যালয়টির শিক্ষার্থীরা বিভিন্ন সময়ে নির্বাচনের দাবিতে নানা কর্মসূচিও পালন করেছে। সম্প্রতি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদ নির্বাচনের ঘোষণায় সরব হয়ে উঠেছে দেশের বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়। এরই ধারাবাহিকতায় জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্র সংসদ নির্বাচনের জোর দাবি তুলেছে বাম ছাত্র সংগঠনগুলো। গতকাল বুধবার জাকসু নির্বাচনের দাবিতে ছাত্র ইউনিয়ন জাবি সংসদের দেওয়া আলটিমেটাম দেয়। এরপর জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ে গণতান্ত্রিক পরিবেশ সৃষ্টি করে অবিলম্বে কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদ (জাকসু) নির্বাচনের দাবি জানিয়ে কর্মসূচি ঘোষণা করেছে শাখা সমাজতান্ত্রিক ছাত্রফ্রন্ট (মার্কসবাদী)। দাবি আদায়ে তারা আগামী ৪ ফেব্রুয়ারি সংহতি সমাবেশ ও তারপর গণস্বাক্ষর সংগ্রহ কর্মসূচি পালন করবে। গতকাল বুধবার বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র-শিক্ষক কেন্দ্রের কমন রুমে এক সংবাদ সম্মেলনে এ দাবি জানান সংগঠনটির সাধারণ সম্পাদক মাহাথির মোহাম্মদ।

লিখিত বক্তব্যে মাহাথির মোহাম্মদ বলেন, বিশ্ববিদ্যালয় একটি গণতান্ত্রিক প্রতিষ্ঠান। বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক-শিক্ষার্থী, কর্মকর্তা-কর্মচারীসহ সবার মতামতের ভিত্তিতে পরিচালিত হওয়ার কথা। কিন্তু প্রতি বছর শিক্ষক, কর্মকর্তা ও কর্মচারীদের নির্বাচন অনুষ্ঠিত হলেও ২৬ বছর ধরে ছাত্রদের প্রতিনিধি নির্বাচন হচ্ছে না। ফলে শিক্ষার্থীদের বিরুদ্ধে গিয়ে প্রশাসন অবৈধ উন্নয়ন ফি চালু করেছে। এ ছাড়া শিক্ষার্থীদের ক্লাসে উপস্থিতি নম্বর চালু, ছাত্রবৃত্তি না বাড়ানো, আবাসন সংকট, শিক্ষা ও গবেষণা খাতে বরাদ্দ বাড়ানো হচ্ছে না। এ জন্য অনতিবিলম্বে জাকসু নির্বাচনের গণতান্ত্রিক পরিবেশ সৃষ্টি করে নির্বাচনের দাবি জানানো হয় সংবাদ সম্মেলনে।

সংবাদ সম্মেলনে পাঁচ দফা দাবি উপস্থাপন করে নেতাকর্মীরা। দাবিগুলো হলো গণতান্ত্রিক পরিবেশ নির্মাণ করে সুষ্ঠু পরিবেশে জাকসু নির্বাচন, হলের গেস্টরুম প্রথা বন্ধ করে আবাসন সুবিধা নিশ্চিত করা, পরিবহন সংকট নিরসন, বিভাগ উন্নয়ন ফি ও বাণিজ্যিক কোর্স বন্ধ, সেশনজট নিরসন ও উপস্থিতি নম্বর বাতিল এবং শিক্ষা ও গবেষণা খাতে বরাদ্দ বৃদ্ধি করা।

এর আগে মঙ্গলবার তিন মাসের মধ্যে ভোটার তালিকা হালনাগাদপূর্বক জাকসু নির্বাচনের দাবি জানিয়েছে ছাত্র ইউনিয়ন জাবি সংসদ। মঙ্গলবার ছাত্র ইউনিয়নের জাবি সংসদের দফতর সম্পাদক হাসান জামিল স্বাক্ষরিত গণমাধ্যমে পাঠানো এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ দাবি জানান তারা। সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে উল্লেখ করেন, ‘১৯৭৩ সালের পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয় অধ্যাদেশ দ্বারা পরিচালিত জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের পরিচালনায় অধ্যাদেশের বাধ্যবাধকতা থাকা সত্ত্বেও বিশ্ববিদ্যালয়ের সর্বোচ্চ নীতিনির্ধারণী ফোরাম সিনেট ও সিন্ডিকেটে শিক্ষার্থীদের প্রত্যক্ষ মত ও ভোট দেওয়ার সুযোগটি বন্ধ দুই যুগেরও বেশি সময় ধরে।

"