মাসুদ রানা, বরিশাল

  ২৪ জানুয়ারি, ২০১৯

গোডাউন চক্রের ফাঁদে বরিশাল বিসিক নগরী

ভূমি বরাদ্দ আইনকে তোয়াক্কা না করে শিল্প এলাকায় হরদমে চলছে অবৈধ গোডাউন বাণিজ্য। একটি চক্র বিসিক নগরীতে প্লট বরাদ্দ নিয়ে কোনো কিছু উৎপাদন না করে গোডাউন বানিয়ে ভাড়া দিচ্ছে বিভিন্ন কোম্পানির কাছে। অধিকাংশ প্লট মালিকরা এ কাজটি করছেন। চক্রটির বিরুদ্ধে কোনো ব্যবস্থা নিচ্ছে না বিসিক কর্তৃপক্ষও। ফলে যেসব প্রতিষ্ঠান উৎপাদন করে থাকে তারা পাচ্ছে না অনুকূল পরিবেশ।

এ ব্যাপারে বিসিকি শিল্প নগরীর স্টেট অফিসার খাইরুল বাশার প্রতিদিনের সংবাদকে বলেন, আমরা সরেজমিনে অনুসন্ধান করে সতর্ক করছি। এরপরও কাজ না হলে তালিকা তৈরি করে আইনানুযায়ী ব্যবস্থা গ্রহণ করব।

প্লট বরাদ্দ নেওয়ার পর উৎপাদনমুখী কাজ না করে গোডাউন বাণিজ্য করলে মালিকদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার ব্যাপারে তিনি আরো বলেন, ২০১০ সালের আইনানুযয়ী প্লট মালিকরা কোনোভাবেই উৎপাদন বন্ধ রেখে গোডাউন ভাড়া দিতে পারবে না। আর এ আইন ভঙ্গ করলে প্রথমে নোটিশ করা হবে। এরপর পুনরায় নোটিশ করা হবে এবং তৃতীয়বার সংশ্লিষ্ট প্লট মালিকের বিরুদ্ধে বিসিক আইন অমান্য করার অপরাধে মামলা করা হবে। সবশেষে বরাদ্দকৃত প্লট বাতিল হতে পারে। চলতি বছরে কোনো প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে নোটিশ দেওয়া হয়েছে কিনা জানতে চাইলে স্টেট অফিসার বলেন, সেটা প্রক্রিয়াধীন আছে।

বিসিক শিল্প নগরী এলাকার মালিক সমিতির সভাপতি সুন্দর আলম বলেন, বিসিকের অবকাঠামো যেমন সড়ক, বিদ্যুৎ ও পানির এত বেহাল দশা যে- ধকলের কারণে উৎপাদনমুখিতা হারিয়ে যায়। যে কারণে মালিকরা উৎপাদনে যেতে পারছেন না। আর কিছু অসাধু মালিকও আছেন যাদের টার্গেট থাকে একটা প্লট হাতানো, এরপর তা অন্যত্র ভাড়া দিয়ে নিরিবিলি ভাড়া গুনবে।

সরেজমিনে দফতরটির নিকটবর্তী দূরত্বেও বছরজুড়ে গোডাউন ভাড়া বাণিজ্য চলতে দেখা যাচ্ছে। এরই মধ্যে আশা পাস্টিক, দেশ ফুড, গাওসিয়া অ্যালমুনিয়াম, সেজান গ্রুপসহ আরো একাধিক প্রতিষ্ঠান উৎপাদন বন্ধ করে দিয়ে বহুজাতিক কোম্পানিগুলোর কাছে স্থানীয় অফিসগুলোর গোডাউন ভাড়া দেয়। এর মধ্যে রয়েছে আইসক্রিম, বেভারেজ, বিস্কুট, প্লাস্টিক পণ্য।

গোডাউন ভাড়া দেওয়ার ব্যাপারে দেশ ফুড প্রতিষ্ঠানের স্বত্ব¡াধিকারী এ কে আজাদ জুয়েল বলেন, বিসিকের সড়কগুলোর বেহাল দশা হওয়ায় কোনো পরিবহন আসা-যাওয়া করতে চায় না। শুধু তাই নয়, বর্ষাকালে সড়ক পানির নিচে ডুবে থাকে। এ কারণে উৎপাদন খরচ বেড়ে যায়। তাই গোডাউন ভাড়া দিলে লাভ বেশি। আর প্রতিমাসে শুধু ঘর ভাড়া দিয়েই কয়েক লাখ টাকা ভাড়া পাওয়া যায়। অবকাঠামোগত সমস্যা নিয়ে বিসিক দফতরের সঙ্গে কোনো কথা হয়েছে কিনা জানতে চাইলে তিনি বলেন, কতবার যে বলেছি, স্মারকলিপি দিয়েছে তার কোনো ইয়ত্তা নেই।

প্রতিষ্ঠানও রয়েছে। প্রতিষ্ঠানটি স্পোর্টস জুতা তৈরি করে। স্থানীয় কিংবা দেশীয় বাজারে কোম্পানির পণ্য বাজারজাতকরণ হয় না বরং চায়নাতে রপ্তানি করা হয়। এ কোম্পানির চেয়ারম্যান মিজানুর রহমান বলেন, ‘ব্যবসার পরিবেশ তৈরি করার জন্য যারা প্লট মালিক আছেন তাদের সবার ব্যবসা করা উচিত। তাহলে শিল্প এলাকায় রুপ নেবে বিসিক নগরী।

"

প্রতিদিনের সংবাদ ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন
আরও পড়ুন
  • সর্বশেষ
  • পাঠক প্রিয়
close