এস এইচ এম তরিকুল, রাজশাহী

  ০৬ জানুয়ারি, ২০১৯

রাজশাহীতে সংরক্ষিত আসনের এমপি হচ্ছেন কে?

একাদশ জাতীয় সংসদের সংরক্ষিত আসনে রাজশাহীর কে হচ্ছেন নারী এমপি? ইতোমধ্যেই এ নিয়ে শুরু হয়েছে জল্পনা-কল্পনা। তবে রাজশাহী থেকে সংরক্ষিত আসনের সাবেক এমপি ও সাবেক প্রতিমন্ত্রী জিনাতুন নেসা তালুকদার, বর্তমান এমপি আক্তার জাহান ছাড়াও নতুন মুখ হিসেবে মহানগর আওয়ামী লীগের সহসভাপতি শাহীন আক্তার রেণী ও নিঘাত পারভীন মনোনয়ন চাইবেন বলে জানা গেছে।

তাদের মধ্যে ১৯৯৬ সালে আওয়ামী লীগ সরকার ক্ষমতায় এলে সংরক্ষিত আসনের এমপি হন জিনাতুন নেসা তালুকদার। পরে তিনি প্রতিমন্ত্রী হন। এরপর ২০০৮ সালে আবার আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় এলে দ্বিতীয়বারের মতো এমপি হন তিনি। আর ২০১৪ সালে তৃতীয় দফায় আওয়ামী লীগ সরকার গঠন করলে রাজশাহী সংরক্ষিত আসনে প্রথম এমপি হন জেলার সহসভাপতি আক্তার জাহান। তবে এবার নতুন মুখ হিসেবে সংরক্ষিত আসনে মনোনয়নপ্রত্যাশী মহানগর আওয়ামী লীগের সহসভাপতি শাহীন আক্তার রেণী ও নিঘাত পারভীন রাজশাহীর বিশিষ্ট সমাজসেবক হিসেবে ইতোমধ্যেই পরিচিতি পেয়েছেন। এর মধ্যে শাহীন আক্তার রেণী হচ্ছেন মহানগর আওয়ামী লীগের সভাপতি রাজশাহী সিটি করপোরেশনের (রাসিক) মেয়র এ এইচ এম খায়রুজ্জামান লিটনের সহধর্মিণী। আর নিঘাত পারভীন প্রয়াত আওয়ামী লীগ নেতা জাহাঙ্গীর আলম হারানের সহধমির্ণী। প্রয়াত জাহাঙ্গীর আলম ১৯৮৪ থেকে ২০১০ পর্যন্ত (মৃত্যুর আগ মুহূর্ত পর্যন্ত) রাজশাহী মহানগর আওয়ামী লীগের সহসভাপতির দায়িত্ব পালন করেন। আওয়ামী লীগের রাজনীতিতে তার রয়েছে বড় অবদান। যার আদর্শ বুকে ধারণ করে নিঘাত পারভীন ইতোমধ্যেই রাজশাহীতে সমাজসেবক হিসেবে খ্যাত হয়েছেন।

রাজশাহী মহানগর আওয়ামী লীগে নারীদের সুসংগঠনিত করতে বড় অবদান রয়েছে এই দুই মনোনয়নপ্রত্যাশীর। এ ছাড়া গত সিটি ও সংসদ নির্বাচনে নারীদের নৌকা পক্ষে ঐক্যবদ্ধ করতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেন তারা। যে কারণেই এই দুজনের মধ্যে সংরক্ষিত আসনের এমপি করার জন্য ইতোমধ্যেই জোরালো দাবি উঠেছে রাজশাহী নগর আওয়ামী লীগ থেকে। শুধু তা-ই নয়, এ দুজনের মধ্য থেকেই এবার সংরক্ষিত আসনের এমপি করা হবে বলেও দলীয় সূত্রে অনেকটাই নিশ্চিত হওয়া গেছে। তবে গত দুটি জাতীয় সংসদ নির্বাচনে রাজশাহী-৩ (পবা-মোহনপুর) আসন থেকে মনোনয়ন চেয়ে বঞ্চিত জেলা মহিলা লীগের সভাপতি মর্জিনা পারভীনও সংরক্ষিত নারী আসনের প্রার্থী হবেন বলেও গুঞ্জন শোনা যাচ্ছে।

নির্বাচন কমিশন সূত্রে জানা যায়, জাতীয় সংসদের সংরক্ষিত নারী আসন রয়েছে ৫০টি। এসব আসনের নির্বাচনের জন্য নবনির্বাচিতদের ফলাফল গেজেট আকারে প্রকাশের পরবর্তী ২১ কার্যদিবসের মধ্যে নির্বাচন কমিশনে দল বা জোটগুলো বা স্বতন্ত্র প্রার্থীরা তাদের জোটের অবস্থান নির্বাচন কমিশনকে জানাবে। সে মোতাবেক ৩০ জানুয়ারির মধ্যে তাদের এ-সংক্রান্ত তথ্য নির্বাচন কমিশনকে জানাতে হবে। আর নির্বাচিতদের গেজেট প্রকাশের ৯০ কার্যদিবসের মধ্যে সংরক্ষিত মহিলা আসনের নির্বাচন অনুষ্ঠিত হওয়ার বাধ্যবাধকতা রয়েছে। নির্বাচন কমিশন সেই তথ্যের ভিত্তিতে দল বা জোটের দেওয়া তথ্য অনুযায়ী দল বা জোট বা স্বতন্ত্র প্রার্থীদের তালিকা প্রস্তুত করে ফলাফলের গেজেট প্রকাশের পরবর্তী ৩০ কার্যদিবসের মধ্যে সংরক্ষিত আসন বণ্টন করবে। অর্থাৎ আগামী ১২ ফেব্রুয়ারির মধ্যে নির্বাচন কমিশন এ তালিকা প্রস্তুত করতে হবে। তালিকা প্রস্তুতের পরের কার্যদিবসে অর্থাৎ ১৩ ফেব্রুয়ারি সেই তালিকা নির্বাচন কমিশনের প্রকাশ্য কোনো স্থানে টাঙ্গিয়ে দিতে হবে।

আইন অনুযায়ী কোনো জোট বা দল বা স্বতন্ত্র প্রার্থীরা কে কত আসন পাবে তার ব্যাখ্যায় বলা হয়েছে, জাতীয় সংসদের সংরক্ষিত নারী আসন হবে আনুপাতিক। এ ক্ষেত্রে মোট সংরক্ষিত আসনকে জাতীয় সংসদের আসন সংখ্যা দিয়ে ভাগ করে, সেই ভাগফলের সঙ্গে সংশ্লিষ্ট দল বা জোট বা স্বতন্ত্র প্রার্থীদের প্রাপ্ত আসন সংখ্যার গুণফলই হবে ওই দল বা জোট বা স্বতন্ত্র প্রার্থীদের সংরক্ষিত মহিলা আসন সংখ্যা।

জাতীয় সংসদের সংরক্ষিত নারী আসন রয়েছে ৫০টি। একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে আওয়ামী লীগের নেতৃত্বাধীন মহাজোট ২৮৮টি আসন পেয়েছে। তবে জাতীয় পার্টি ২২ আসন নিয়ে বিরোধী দলে থাকার ঘোষণা দেওয়ায় সংসদে ১৪ দলীয় জোটের এমপি দাঁড়িয়েছে ২৬৬টি। এ ক্ষেত্রে ১৪ দলীয় জোট পাবে ৪৪টি সংরক্ষিত নারী আসন। এর মধ্যে আওয়ামী লীগ ২৫৭ আসনে জয়লাভ করায় দলটি পাবে ৪২টি আসন এবং ১৪ দলের শরিকরা পাবে ২টি। আর জাতীয় পার্টি পাবে ৩টি সংরক্ষিত আসন।

"

প্রতিদিনের সংবাদ ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন
আরও পড়ুন
  • সর্বশেষ
  • পাঠক প্রিয়
close