চট্টগ্রাম ব্যুরো

  ০৪ ডিসেম্বর, ২০১৮

চট্টগ্রাম-কক্সবাজার ট্রেন ২০২২ সালে

চারপাশে সবুজের সমারোহ। কখনো দুই গ্রামের মাঝখানে আবার কখনো দুই পাহাড়ের মধ্য দিয়ে চলছে ট্রেন। চোখ ধাঁধানো এসব মনোরম দৃশ্য দেখা যাবে ট্রেনে বসেই। থাকবে সাজানো-গোছানো রেলওয়ে স্টেশনও। চট্টগ্রাম থেকে কক্সবাজার রেল প্রকল্পের ভিডিও গ্রাফিকসে এমন চিত্রই তুলে ধরা হয়েছে। প্রকৃতি ও জীববৈচিত্র্যের ওপর ভিত্তি করে সাতকানিয়া, লোহাগাড়া, চকরিয়া, ডুলাহাজারা, রামু, ঈদগাহ ও উখিয়ার রেলস্টেশনের নকশা করা হয়েছে ওই ভিডিওচিত্রে।

কক্সবাজারবাসীর এই স্বপ্নের ট্রেনযাত্রা বাস্তবায়ন হচ্ছে ২০২২ সালের মধ্যে। এরই মধ্যে প্রকল্পের কাজ ১৫ ভাগ শেষও হয়েছে। আর কক্সবাজার অংশে শেষ হয়েছে ১৭ ভাগ।

রেলওয়ে সূত্রে জানা যায়, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা দোহাজারী থেকে কক্সবাজার পর্যন্ত রেললাইন সম্প্রসারণ কাজের ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করেন ২০১১ সালের ৩ এপ্রিল। এ প্রকল্পের আওতায় দোহাজারী থেকে রামু হয়ে কক্সবাজার পর্যন্ত ১০০ কিলোমিটার এবং রামু থেকে ঘুমধুম পর্যন্ত ২৮ কিলোমিটার নতুন রেললাইন স্থাপন করার কথা ছিল। কিন্তু মিয়ানমারের সঙ্গে বাংলাদেশের রোহিঙ্গা ইস্যু নিয়ে সৃষ্ট জটিলতার কারণে রামু থেকে ঘুমধুম পর্যন্ত প্রকল্পের কাজ এখন হচ্ছে না। পুরো প্রকল্পের ব্যয় ধরা হয়েছিল ১৮ হাজার ৩৪ কোটি ৪৮ লাখ টাকা। এর মধ্যে দোহাজারী থেকে রামু হয়ে কক্সবাজার পর্যন্ত প্রকল্পের ব্যয় ধরা হয় ১৫ হাজার ৪৭৬ কোটি আর ঘুমধুম পর্যন্ত প্রকল্পের ব্যয় ধরা হয় ২ হাজার ৫৫৮ কোটি টাকা।

চলতি বছরের জুলাইয়ে চীনের বৃহত্তম ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান চায়না রেলওয়ে ইঞ্জিনিয়ারিং করপোরেশন (সিআরইসি) ও দেশীয় তমা কন্সট্রাকশন কোম্পানি যৌথভাবে কাজ শুরু করে। এ প্রকল্পের কাজ ৩ বছরের মধ্যে শেষ করার নির্দেশনা আছে।

চট্টগ্রাম ও কক্সবাজার রেললাইন প্রকল্পটি বাস্তবায়ন করতে চন্দনাইশে ১০ একর, সাতকানিয়ায় ১৭৬ একর, লোহাগাড়ায় ১৭৭ একর, চকরিয়ায় ৫১৪ একর, কক্সবাজার সদরে ২১০ একর ও রামুতে ২৭৯ একরসহ মোট ১ হাজার ৩৬৬ একরের মধ্যে বন বিভাগের ১৬৫ একর ছাড়া বাকি সব জমি অধিগ্রহণ সম্পন্ন হয়েছে। এর মধ্যে চকরিয়ার ৫১৪ একর জমি চলতি মাসে পেলেও বন বিভাগ থেকে ১৬৫ একর জমি না পাওয়ায় পুরোদমে কাজ করতে পারছে না এ প্রকল্পের সংশ্লিষ্টরা। ভূমি অধিগ্রহণের কাজ পুরোপুরি সম্পন্ন হলেই রেলপথ ও অন্যান্য অবকাঠামো নির্মাণে অর্থ বরাদ্দ দিতে প্রস্তুত রয়েছে এশিয়ান ডেভেলপমেন্ট ব্যাংক (এডিবি)।

প্রকল্প পরিচালক মফিজুর রহমান বলেন, চলতি বছরের মার্চের দিকে বৈরী আবহাওয়ার মধ্যেও কাজ শুরু হয়। তবে জুলাই থেকে পুরোদমে কাজ চলছে। চট্টগ্রাম থেকে রামু হয়ে কক্সবাজার পর্যন্ত প্রকল্পের ১৫ ভাগ কাজ শেষ হয়েছে। তবে ঘুমধুম পর্যন্ত রেললাইনের কাজ এখন হচ্ছে না। আবহাওয়া অনুকূলে থাকলে ৩ বছরের মধ্যে প্রকল্পের কাজ শেষ হবে। বন বিভাগের জমি এখনও না পাওয়ায় তা বড় সমস্যা উল্লেখ করে তিনি বলেন, চলতি মাসে চকরিয়ায় জমি পেলেও বন বিভাগ থেকে ১৬৫ একর জমি এখনো পাইনি। ওই জায়গাটা পেলে পুরোদমে প্রকল্পের কাজ চালিয়ে নেওয়া যেত।

"

প্রতিদিনের সংবাদ ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন
আরও পড়ুন
  • সর্বশেষ
  • পাঠক প্রিয়
close