নিজস্ব প্রতিবেদক

  ২০ নভেম্বর, ২০১৮

নির্বাচনী পোস্টার ব্যানার নামাচ্ছে দুই সিটি

আসন্ন একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে ঘিরে রাজধানীর অলিগলি ছেয়ে গেছে মনোনয়নপ্রত্যাশীদের পোস্টার-ফেস্টুনে। নির্বাচন কমিশনের কড়া নির্দেশনার পরও কারোই টনক নড়েনি। তাই বাধ্য হয়ে পোস্টার অপসারণে নেমেছে ঢাকা দক্ষিণ ও উত্তর সিটি করপোরেশন।

এর আগে গত ১৬ নভেম্বর ইসির এক নির্দেশনায় বলা হয়, ১৮ নভেম্বর মধ্য রাত থেকে সব ধরনের প্রচার সামগ্রী সরিয়ে ফেলতে হবে। ওই নির্দেশনায় আরো বলা হয়, মার্কেট, রাস্তা, যানবাহন, সরকারি-বেসরকারি স্থাপনাসহ বিভিন্ন জায়গায় যাদের নামে ব্যানার, পোস্টার, ফেস্টুন, লিফলেটসহ প্রচার সামগ্রী রয়েছে, নির্ধারিত সময়ে মধ্যে নামিয়ে ফেলতে বলা হয়।

দুই সিটি করপোরেশনের কর্মীদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, ইসির নির্দেশনা অনুযায়ী রোববার মধ্য রাতের আগেই রাজধানীর বিভিন্ন স্থানে থাকা নির্বাচনী প্রচার সামগ্রী সরিয়ে ফেলতে শুরু করেন তারা। কিন্তু ভোর রাতের দিকে বিভিন্ন প্রার্থীর সমর্থকরা আবার দেয়ালে এসব লাগান। ফলে সোমবার সকাল থেকে সংস্থা দুটির প্রায় ৪ হাজার পরিচ্ছন্নতাকর্মী এসব প্রচার সামগ্রী অপসারণে কাজ চালিয়ে যাচ্ছেন। বিকেলের মধ্যে অপসারণ কাজ শেষ হবে। তবে এরপর যদি কেউ ফের ব্যানার, ফেস্টুন ইত্যাদি লাগায় তাহলে তাদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেবে সিটি করপোরেশন।

এদিকে গতকাল সোমবার সকাল থেকে রাজধানীর বিভিন্ন এলাকার অলিগলিতে লাগানো পোস্টার ফেস্টুন নামিয়ে ফেলে ডিএসসিসির ভ্রাম্যমাণ টিম। নির্বাচনী পোস্টার নামাচ্ছেন ডিএসসিসির কর্মচারীরা, করপোরেশনের নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট মাসুদ রানার নেতৃত্বে পরিচালিত এ অভিযানে অতিরিক্ত প্রধান বর্জ্য ব্যবস্থাপনা কর্মকর্তা খন্দকার মিল্লাতুল ইসলামসহ সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তা-কর্মচারীরা উপস্থিত ছিলেন।

এ টিম নগরীর সুরিটোলা, ইংলিশ রোড, পুরানা পল্টন, আজিমপুর, খিলগাঁও, মতিঝিলসহ বিভিন্ন এলাকা পরিদর্শন করেন। পরিদর্শনকালে কোনো এলাকা পোস্টার লিফলেট চোখে পড়লেই তাৎক্ষণিকভাবে তা অপসারণ করে ফেলা হয়েছে। তবে অধিকাংশ এলাকায়ই এসব তেমন একটা চোখে পড়েনি।

অভিযান প্রসঙ্গে খন্দকার মিল্লাতুল ইসলাম বলেন, আমরা সোমবার (গতকাল) অপসারণ করেছি, এরপর কেউ পোস্টার লাগালে জরিমানা করা হবে। যেহেতু অপসারণের সময় কাউকে পাওয়া যাচ্ছে না তাই নমুনা সংগ্রহ করে রাখছি, প্রয়োজনে পরে জরিমানা করা হবে।

পোস্টার লিফলেট অপসারণকালে নির্বাচন কমিশনের নির্দেশনা পাওয়ার আগে থেকেই অতীত অভিজ্ঞতার আলোকে ডিএসসিসি কর্তৃপক্ষ এসব অপসারণে সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তা-কর্মচারীদের নির্দেশনা দেন। একইসঙ্গে ওয়ার্ড কাউন্সিলরদের ও এ কাজে শরিক হওয়ার আহ্বান জানানো হয়। নির্বাচিত ওয়ার্ড কাউন্সিলররা এ আহ্বানে সাড়া দিয়ে নিজ নিজ এলাকায় করপোরেশনের স্টাফ ও নিজ নেতাকর্মীদের সঙ্গে নিয়ে পোস্টার লিফলেট অপারেশন কাজে আন্তরিকভাবে অংশ নেবেন।

সর্বাত্মকভাবে এ অপারেশন কার্যক্রম পরিচালিত হওয়ার ফলে নগরীর অধিকাংশ এলাকার পোস্টার লিফলেট অপসারণ করা সম্ভব হয়েছে। চলমান এ কার্যক্রমের অংশ হিসেবে সোমবার নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেটের নেতৃত্বে এটি তদারকির জন্য অভিযান পরিচালনা করা হয়। এটি এখনো চলছে।

ডিএসসিসির নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট মাসুদ রানা বলেন, ‘গত দুই সপ্তাহ ধরে চলছিল এ অপসারণের কাজ। এরই মধ্যে আমরা ব্যানার, ফেস্টুন এবং পোস্টারসহ নানা নির্বাচনী সামগ্রী অপসারণ করেছিলাম। কিন্তু ভোর রাতের দিকে ফের নেতাকর্মীরা শহরের বিভিন্ন স্থানের দেয়ালে কিছু পোস্টার লাগায়। যা আমরা আজকে সকাল থেকে অপসারণ করার কাজ করছি। বিকেল নাগাদ আশা করছি কাজ শেষ হবে। তবে আজকের পর যারা ফের এগুলো স্থাপন করবে কিংবা চেষ্টা করবে তাদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেয়া হবে।’

অন্যদিকে ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনের পাঁচটি অঞ্চলে চলে পোস্টার ব্যানার অপসারণের কাজ। এর জন্য পাঁচ আঞ্চলিক নির্বাহী কর্মকর্তাকে প্রধান করে টিম গঠন করেছে সংস্থাটি। এর আগে গত রোববার পর্যন্ত ১ লাখ ৩০ হাজার পোস্টার ব্যানার সরাতে সক্ষম হয়েছে বলে জানিয়েছে সংস্থাটি।

এ প্রসঙ্গে ডিএনসিসির নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট সাজিদ আনোয়ার বলেন, সকাল থেকে শুরু হয়েছে নতুন করে লাগানো ব্যানার, পোস্টার অপসারণের কাজ। এরপর আবার যদি কোথায় এসব লাগানো হয় তাহলে সংশ্লিষ্টদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে। প্রয়োজনে জরিমানা ও কারদন্ড দেওয়া হবে।

"

প্রতিদিনের সংবাদ ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন
আরও পড়ুন
  • সর্বশেষ
  • পাঠক প্রিয়
close