নিজস্ব প্রতিবেদক

  ২৬ অক্টোবর, ২০১৮

ইউজিসির বার্ষিক প্রতিবেদন

পাস কোর্সে আগ্রহ নেই শিক্ষার্থীদের

জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের অধীন বিভিন্ন কলেজে পাস কোর্সে ভর্তি হতে চান না শিক্ষার্থীরা। অধিকাংশ কলেজে পাস কোর্সের আসনও শূন্য থাকছে। আর তাই কলেজে পাস কোর্সের সিট কমানো প্রয়োজন বলে মত দিয়েছে বাংলাদেশ বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশন (ইউজিসি)। একইসঙ্গে ডিগ্রি কোর্সের পরিবর্তে দেশের কর্মক্ষেত্রের জন্য প্রয়োজনীয় বিষয়ে গ্র্যাজুয়েট তৈরি করে মানবসম্পদ বাড়ানোর প্রতি গুরুত্বারোপ করা হয়েছে। বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশনের (ইউজিসি) সর্বশেষ বার্ষিক প্রতিবেদনে এসব তথ্য তুলে ধরা হয়েছে।

গত ১৮ অক্টোবর ইউজিসির বার্ষিক প্রতিবেদনটি রাষ্ট্রপতি আবদুল হামিদের কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে। চলতি সংসদ অধিবেশনে এটি উপস্থাপনের কথা আছে। প্রতিবেদনে পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি পরীক্ষায় প্রশ্নফাঁস বন্ধে বিশেষ নজরদারি পদ্ধতি প্রবর্তনেরও সুপারিশ করা হয়েছে। এ লক্ষ্যে দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার দেশগুলোর মতো উন্নত প্রযুক্তি, কঠিন নিরাপত্তা ও গোপনীয়তা রক্ষা করে ভর্তি পরীক্ষা আয়োজনের কথা বলা হয়েছে। প্রতিবেদনে দেশের উচ্চ শিক্ষার সমস্যা, সীমাবদ্ধতা, সংকট, সম্ভাবনাসহ বিভিন্ন দিক তুলে ধরা হয়। বলা হয়, শিক্ষকদের জন্য পৃথক বেতন স্কেল নেই। উচ্চ শিক্ষার মান উন্নয়নে পৃথক বেতন স্কেল ও অন্যান্য সুযোগ-সুবিধা দেওয়া দরকার।

প্রতিবেদন অনুযায়ী, সার্বিকভাবে উচ্চ শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলোতে শিক্ষক সংকট প্রকট। অনেক নতুন ও বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ে অধ্যাপক ও সহযোগী অধ্যাপক নেই। পাঠদান করেন জুনিয়র শিক্ষকরা। সরকারি প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় ছাড়া অন্যান্য সরকারি বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়, সাধারণ বিশ্ববিদ্যালয় ও বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ে উচ্চ শিক্ষিত শিক্ষক-শিক্ষিকার অভাব রয়েছে। বিশেষ করে জাতীয়, উন্মুক্ত ও বিজ্ঞান প্রযুক্তিবিষয়ক নতুন সরকারি ও অধিকাংশ বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ে বিজ্ঞান ও প্রযুক্তিভিত্তিক উচ্চতর ডিগ্রিধারী শিক্ষক সংকট বিরাজ করছে। এসব বিশ্ববিদ্যালয়ে প্রধানত প্রভাষক ও জুনিয়র শিক্ষকদের দিয়ে শিক্ষা কার্যক্রম পরিচালিত হচ্ছে।

শিক্ষক সংকটের বিভিন্ন কারণ উল্লেখ করে প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, নতুন সরকারি ও বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের উচ্চতর পদগুলোতে স্থায়ীভাবে শিক্ষক নিয়োগ নিশ্চিতকরণের প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ গ্রহণ করা যেতে পারে। অভিজ্ঞ শিক্ষকরা যেন অপেক্ষাকৃত নবীন বিশ্ববিদ্যালয়ে পাঠ দানে আগ্রহী হন, সে জন্য প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ গ্রহণ করতে হবে। এ লক্ষ্যে প্রয়োজনীয় নীতিমালা তৈরির তাগিদ দেওয়া হয়েছে।

প্রতিবেদন প্রসঙ্গে ইউজিসি চেয়ারম্যান অধ্যাপক আবদুল মান্নান বলেন, ইউজিসি দেশের উচ্চ শিক্ষা পরিস্থিতি সারা বছর পরিবীক্ষণ ও পর্যবেক্ষণ করে থাকে। সেই দৃষ্টিকোণ থেকে উচ্চ শিক্ষা পরিস্থিতির ওপর একটি প্রতিবেদন তৈরি করা হয়ে থাকে। তার আলোকে সব সমস্যা এবং তার সমাধানের চেষ্টা করা হয়। তিনি বলেন, গত কয়েক বছরে উচ্চ শিক্ষায় বড় ধরনের ইতিবাচক পরিবর্তন হয়েছে। প্রায় চার মিলিয়ন ছাত্রছাত্রী উচ্চ শিক্ষা নিচ্ছে। একটি জাতির এগিয়ে যাওয়ার বড় নিদর্শন এটি। তবে এই এগিয়ে যাওয়ার পথে নানা ধরনের প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি হয়ে থাকে, তা দূর করা দরকার। এসব বিষয় বার্ষিক প্রতিবেদনে তুলে ধরা হয়েছে। এর মধ্যে মানসম্মত শিক্ষক সংকটের দিকটা বেশি গুরুত্ব দেওয়া হয়েছে।

প্রতিবেদনে আরো বলা হয়, দেশের বেশির ভাগ বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ে শিক্ষকদের জন্য এখনো সার্ভিস রুল প্রণীত হয়নি। ফলে শিক্ষকদের চাকরির স্থায়িত্ব নিয়ে অনিশ্চয়তায় থাকতে হয়। এসব কারণে মেধাবী ও দক্ষ শিক্ষকরা সুযোগ পেলেই দেশত্যাগ অথবা অন্য প্রতিষ্ঠানে চলে যাচ্ছে। এতে দক্ষ ও অভিজ্ঞ শিক্ষকের অভাব দেখা দিচ্ছে উচ্চ শিক্ষাস্তরে। এতে বলা হয়, বেশির ভাগ বিশ্ববিদ্যালয়ে গবেষণার পর্যাপ্ত সুযোগ-সুবিধা নেই। নেই গবেষণার জন্য পর্যাপ্ত ল্যাবরেটরি।

"

প্রতিদিনের সংবাদ ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন
আরও পড়ুন
  • সর্বশেষ
  • পাঠক প্রিয়
close