চট্টগ্রাম ব্যুরো
চট্টগ্রামে আচমকা গ্যাস বন্ধ, ভোগান্তি চরমে
গ্যাস না থাকার সুযোগে রেস্তোরাঁর মালিকরা খাবারের দাম বেশি রাখেন বলে অভিযোগ কয়েকজনের
চট্টগ্রাম নগরের মানুষ শুক্রবার সকালে ঘুম থেকে উঠেই দেখেন, গ্যাস নেই, চুলা জ্বলছে না। এতে নাশতার আয়োজন করতে না পেরে অনেক মানুষের সকালটাই মাটি। ভাটা পড়েছে ছেলে-বুড়ো সবার রোজকার ব্যস্ততায়। গতকাল শুক্রবার ভোর থেকে পূর্বঘোষণা ছাড়াই নগরজুড়ে গ্যাস সরবরাহ বন্ধ। এতে বিপাকে পড়েছে মানুষ।
এদিকে সিলিন্ডার গ্যাসে রান্না হয়-এমন রেস্টুরেন্টগুলোতে সকাল থেকে লম্বা লাইন পড়তে শুরু করে। পাউরুটি কিনতে ছোটাছুটি করতে দেখা যায় অনেককে। সকাল নয়টা-সাড়ে নয়টার দিকে খোলা দোকানগুলোর গতকালের পুরোনো পাউরুটি দ্রুত শেষ হয়ে যায়।
এ বিষয়ে কর্ণফুলী গ্যাস ডিস্ট্রিবিউশন কোম্পানি লিমিটেডের (কেজিডিসিএল) ব্যবস্থাপনা পরিচালক প্রকৌশলী খায়েজ আহম্মদ মজুমদার বলেন, ফৌজদারহাট থেকে পুরো চট্টগ্রামে প্রধান সংযোগস্থলে কাজ চলছে। তাই শুক্রবার থেকে ২৯ জুলাই পর্যন্ত গ্যাস সংকট থাকবে। বিষয়টি জানিয়ে চারটি দৈনিক পত্রিকায় বিজ্ঞাপন দেওয়া হয়েছে। গ্যাস সরবরাহ চালু করার চেষ্টা চলছে।
এদিকে কর্ণফুলী গ্যাস ডিস্ট্রিবিউশন কোম্পানির দেয়া সে বিজ্ঞাপনে বাসা-বাড়িতে পুরোপুরি গ্যাস বন্ধ করার কথা বলা হয়নি। সেখানে বলা হয়েছে, রক্ষণাবেক্ষণ কাজের অংশ হিসেবে কেডিজিসিএল অধিভুক্ত এলাকায় গ্যাস সরবরাহ সাময়িক বিঘিœত হবে। এতে আরও উল্লেখ করা হয়, বাসা-বাড়িতে গ্যাস সরবরাহ অব্যাহত রাখার লক্ষ্যে সিএনজি ফিলিং স্টেশন ও সকল ধরনের শিল্প কারখানায় গ্যাস ব্যবহার সীমিত রাখার জন্য অনুরোধ করা যাচ্ছে।
এ বিষয়ে নগরের আসকারদিঘী এলাকার বাসিন্দা জহিরুল ইসলাম বলেন, স্পষ্ট ঘোষণা ছাড়া এভাবে গ্যাস সরবরাহ বন্ধ করে গ্রাহকদের ভোগান্তিতে ফেলা ঠিক হয়নি। এ ছাড়া গ্যাস বন্ধের যে বিজ্ঞাপন পত্রিকায় দেওয়ার কথা বলা হচ্ছে, তা আমরা দেখিনি। তারা গ্রাহকদেরকে এসএসএস ও মাইকিং করতে পারতো।
শুলকবহর এলাকার বাসিন্দা ইকবাল হোসেন বলেন, গ্যাস সরবরাহ বন্ধ থাকায় বাসায় দুপুরে রান্না হয়নি। খাবারের দোকানে এসেও অনেকে খাবার কিনতে পারেননি। গ্যাস না থাকায় রেস্তোরাঁগুলোকে লাকড়ির চুলায় রান্না করতে হয়।
নগরের বহদ্দারহাটের বাসিন্দা রেশমি আক্তারের শাশুড়ি অসুস্থ, চিকিৎসকের পরামর্শ অনুযায়ী বাইরের খাবার খাওয়া নিষেধ। শেষ পর্যন্ত তাকে রেস্তোরাঁ থেকে খাবার কিনে এনে শাশুড়িকে খাওয়াতে হলো। রেশমি আক্তারের পরিবারও খাবার কিনে খেয়েছে। কেউ অপেক্ষা করেছেন গ্যাস আসার জন্য। তবে পানি কিনতে সজীব রহমানের ৯০ টাকা খরচ হওয়ায় মহাবিরক্ত তিনি। গ্যাস না থাকার সুযোগে রেস্তোরাঁর মালিকেরা খাবারের দাম বেশি রাখেন বলে অভিযোগ কয়েকজনের। বেশি ঝামেলায় পড়েন বাকলিয়ার রাহাত্তারপুল এলাকার বাসিন্দা বেসরকারি প্রতিষ্ঠানের কর্মী জসিম। সীমিত আয় তার। বাড়তি খরচের সুযোগ নেই। তার পরিবারে সদস্যসংখ্যা ৭। গ্যাস না থাকায় শুক্রবার খাবারের পেছনে তার খরচ হয়েছে ৫৭০ টাকা। সাতজনের জন্য হোটেল থেকে ভাত, ডাল, ভাজি কিনেছেন তিনি। জসিম বলেন, আগে থেকে জানতে পারলে ভোগান্তির পরিমাণ কম হতো। আগে থেকে কিছু রান্না সেরে রাখা যেত।
"