চট্টগ্রাম ব্যুরো
রাইফার মৃত্যু
মামলা না নিলে আমরণ অনশনে যাবেন বাবা
চট্টগ্রামে সাংবাদিক কন্যা রাইফা খানের মৃত্যুর ঘটনায় থানায় জমা দেওয়া অভিযোগটি মামলা হিসেবে নথিভুক্ত না করা হলে আমরণ অনশন করবেন বলে রাইফার বাবা রুবেল খান জানিয়েছেন। গতকাল বৃহস্পতিবার বিকালে দৈনিক সমকালের সাংবাদিক রুবেল খান বলেন, তদন্ত প্রতিবেদন মতে কর্তব্যরত চিকিৎসকদের অবহেলায় এবং ভুল চিকিৎসায় আমার মেয়ের মৃত্যু হয়েছে। এ পরিপ্রেক্ষিতে দায়ীদের বিরুদ্ধে বুধবার এজাহার জমা দেওয়া হলেও মামলা হিসেবে নেওয়া হচ্ছে না। গত বুধবার ভুল চিকিৎসা ও অবহেলায় রাইফার মৃত্যুর অভিযোগ এনে ম্যাক্স হাসপাতালের এমডি ডা. লিয়াকত আলী ও তিন চিকিৎসকের বিরুদ্ধে মামলা গ্রহণের জন্য চকবাজার থানায় এজাহার করা হয়।
তিনি বলেন, শুক্রবারের মধ্যে থানায় করা অভিযোগ মামলা হিসেবে নথিভুক্ত না হলে আমি শনিবার থেকে পুলিশ কমিশনারের কার্যালয়ের সামনে আমরণ অনশনে যাব।
এদিকে রাইফার মৃত্যুর ঘটনায় দায়ের করা মামলার আসামিরা হলেন ডা. বিধান রায় চৌধুরী, ডা. দেবাশীষ সেনগুপ্ত, ডা. শুভ্রদেব ও ডা. লিয়াকত আলী। এদের মধ্যে প্রথম তিন শিশু রাইফার চিকিৎসায় নিয়োজিত ছিল সরাসরি আর লিয়াকত আলী ম্যাক্স হাসপাতালের এমডি। তাদের প্রত্যেকের ঠিকানা দেওয়া হয়েছে ম্যাক্স হাসপাতাল। আসামিদের বিরুদ্ধে অবহেলা ও ভুল চিকিৎসায় ২ বছর চার মাস বয়সী শিশু রাইফার মৃত্যুর অভিযোগ আনা হয়েছে।
এর আগে বেসরকারি ম্যাক্স হাসপাতালে শিশু রাইফার মৃত্যুর ঘটনায় তদন্ত কমিটি যাদের অবহেলার প্রমাণ পেয়েছে, সেই চিকিৎসকদের বিরুদ্ধে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিতে বাংলাদেশ মেডিকেল অ্যান্ড ডেন্টাল কাউন্সিলকে (বিএমডিসি) নির্দেশ দিয়েছিলেন স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণমন্ত্রী মোহাম্মদ নাসিম।
প্রসঙ্গত দৈনিক সমকালের চট্টগ্রাম ব্যুরোর সাংবাদিক রুবেল খানের আড়াই বছর বয়সী মেয়ে রাইফা গলায় ব্যথা নিয়ে গত ২৮ জুন বিকালে ম্যাক্স হাসপাতালে ভর্তি হওয়ার পর ২৯ জুন রাতে তার মৃত্যু হয়। ভুল চিকিৎসায় তার মৃত্যু হয়েছে অভিযোগ করে বিক্ষোভ করেন সাংবাদিকরা। পরে ঘটনা তদন্তে স্বাস্থ্য অধিদফতর থেকে একটি কমিটি করে দেওয়া হয়। পাশাপাশি চট্টগ্রামের সিভিল সার্জনের নেতৃত্বে তিন সদস্যের একটি কমিটি এ ঘটনার তদন্ত করে। সিভিল সার্জনের নেতৃত্বাধীন কমিটি গত বৃহস্পতিবার রাতে তাদের প্রতিবেদন দেয়, যাতে কর্তব্যরত চিকিৎসক, নার্স ও হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের দায়িত্বে অবহেলা এবং গাফিলতির প্রমাণ পাওয়ার কথা জানিয়ে তিন চিকিৎসকের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার সুপারিশ করা হয়। এই তিন চিকিৎসক হলেন ডা. বিধান রায় চৌধুরী, ডা. দেবাশীষ সেন গুপ্ত এবং ডা. শুভ্র দেব। তাদের মধ্যে দেবাশীষ ও শুভ্রকে ইতোমধ্যে চাকরিচ্যুত করা হয়েছে বলে ম্যাক্স কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে।
"