নিজস্ব প্রতিবেদক
ই-কমার্স থেকে ভ্যাট প্রত্যাহার দাবি
২০১৮-১৯ অর্থবছরের প্রস্তাবিত বাজেটে তথ্যপ্রযুক্তি-নির্ভর সেবার ৫ শতাংশ ভ্যাট আরোপের সিদ্ধান্ত প্রত্যাহারের দাবি জানিয়েছে ই-কমার্সভিত্তিক উদ্যোক্তা ও ব্যবসায়ীদের সংগঠন ই-ক্যাব। বর্তমানে এখাতের ওপর ৪ দশমিক ৫ শতাংশ ভ্যাট বিদ্যমান রয়েছে।
গতকাল জাতীয় প্রেস ক্লাবের কনফারেন্স লাউঞ্জে বাজেট পরবর্তী সংবাদ সম্মেলনে এই প্রতিক্রিয়া জানায় ই-ক্যাব। সংবাদ সম্মেলনে ই-ক্যাবের সভাপতি শমী কায়সার, সহসভাপতি রেজওয়ানুল হক জামী, অর্থ সম্পাদক আবদুল হক, যুগ্মসম্পাদক নাসিমা আক্তার (নিশা) প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।
সংগঠনের সাধারণ সম্পাদক আবদুল ওয়াহেদ তমাল বলেন, ভার্চুয়াল ই-কমার্স খাতে মূসক আরোপিত হলে এ খাতের উন্নয়ন নিশ্চিতভাবে বাধাগ্রস্ত হবে। মূসকের প্রভাব পড়বে সরাসরি ভোক্তার ওপর। তাই আগামী ১০-১৫ বছরের জন্য এই তথ্যপ্রযুক্তি খাত, ই-কমার্স খাতকে মূসকের আওতামুক্ত রাখা একান্ত সমীচিন হবে।
এবার বাজেট প্রস্তাবে কৃষি, শিল্প, ভারী প্রকৌশলে দেশীয় শিল্পের বিকাশ, প্রতিরক্ষণের লক্ষ্যে পণ্য ও সেবার বিভিন্ন পর্যায়ে নতুনভাবে অব্যাহতি প্রদান, ক্ষেত্রবিশেষে অব্যাহতির মেয়াদ বাড়ানোর প্রস্তাব এসেছে। বাজেটের এই অংশে ই-কমার্স খাতকে অন্তর্ভুক্ত করার দাবিও জানান ই-ক্যাব নেতারা। ২০১৮-১৯ অর্থবছরের বাজেট উপস্থাপনকালে অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আবদুল মুহিত তথ্যপ্রযুক্তি খাতে ‘ভার্চুয়াল বিজনেস’ সেবা নামে নতুন একটি সংজ্ঞা সৃষ্টি করেন। অনলাইনভিত্তিক যেকোনো পণ্য বা সেবার ক্রয়-বিক্রয় বা হস্তান্তরকে এ সেবার আওতাভুক্ত করে ‘ভার্চুয়াল বিজনেস’ সেবার ওপর ৫ শতাংশ মূসক আরোপ করার প্রস্তাবও রেখেছেন তিনি। অনলাইনে পণ্য বিক্রয় বলতে বোঝানো হয়েছে- ইলেকট্রনিক নেটওয়ার্ক ব্যবহার করে সেসব পণ্য ও সেবার ক্রয়-বিক্রয়কে বোঝাবে যা ইতোপূর্বে কোনো উৎপাদনকারী বা সেবা সরবরাহকারীর কাছ হতে মূসক পরিশোধ করে গৃহীত হয়েছে এবং যাদের নিজস্ব কোনো বিক্রয় কেন্দ্র নেই। এই ব্যাখ্যার পরিবর্তন চেয়ে ই-ক্যাব বলেছে, ‘নিজস্ব বিক্রয় কেন্দ্র থাকলেও যারা অনলাইনে সেবা প্রদান ও অর্থ বিনিময় করে, তারাও অনলাইনে পণ্য বিক্রেতা হিসেবে বিবেচিত হবেন।
গত শুক্রবার বাজেট পরবর্তী সংবাদ সম্মেলনে এনবিআর চেয়ারম্যান মোশাররফ হোসেন ভূঁইয়া জানান, অনলাইনে কেনাবেচার ওপর কোনো কর বসানো হয়নি। তিনি বলেছেন, আমরা ভার্চুয়াল বিজনেস যেমন-ইউটিউব, ফেসবুক এগুলোর ওপর ট্যাক্স ধার্য করার প্রক্রিয়া শুরু করেছি। কিন্তু অনলাইন বিজনেস আমরা আলাদা করেছি, এটার ওপর ভ্যাট বসাইনি। এনবিআর চেয়ারম্যানের এই বক্তব্যের পর ‘ভার্চুয়াল বিজনেস’ সেবা নিয়ে বিভ্রান্তি দেখা দিয়েছে বলেও উল্লেখ করেন তমাল।
তমাল বলেন, অনেক ক্ষুদ্র উদ্যোক্তা শুধু ফেসবুক কেন্দ্রিক ব্যবসা করছেন, তাদের সংখ্যা প্রায় ২৫ হাজার। তারপর অনেকেই আবার এই অনলাইন প্ল্যাটফর্মকে কেন্দ্র করে ই-কমার্স প্রশিক্ষণ দিচ্ছে। ভার্চুয়াল বিজনেস নামে যে নতুন সংজ্ঞা এসেছে, তাতে ই-কমার্সের এই উদ্যোক্তাদের বিষয়ে কোনো সুস্পষ্ট বক্তব্য আসেনি।
"