গাজীপুর প্রতিনিধি
দ্বৈত ভর্তি
জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের ৫ হাজার শিক্ষার্থী বিপাকে
জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রায় পাঁচ হাজার শিক্ষার্থী ‘অন্যায়ভাবে’ দ্বৈত ভর্তির ফলে নিবন্ধনপত্র না পেয়ে বিপাকে পড়েছেন। সম্প্রতি সফটওয়্যার ব্যবহার করে দুই বিভাগে ভর্তি হওয়া শিক্ষার্থীদের শনাক্ত করার পর কর্তৃপক্ষ তাদের বিশেষ বিবেচনায় জরিমানা নিয়ে নিবন্ধনপত্র দিচ্ছে। শিক্ষার্থীদের অভিযোগ, জরিমানার পরিমাণ অস্বাভাবিক রকমের বেশি। এটা দেওয়ার মতো সামর্থ্য নেই বলে শিক্ষার্থীরা জানিয়েছেন।
বিশ্ববিদ্যালয়ের স্নাতক-পূর্ব-শিক্ষা বিষয়ক ভারপ্রাপ্ত ডিন মো. নাসির উদ্দিন বলেন, প্রথমবার ভর্তির পর যারা পরীক্ষায় অংশ নেননি তারা ৮ হাজার ২০০ টাকা জরিমানা ও একটা ভর্তি বাতিলের ফি জমা দিলে নিবন্ধন পাচ্ছেন। আর ভর্তির পর যারা পরীক্ষায় অংশ নিয়েছেন তাদের জরিমানা ১০ হাজার ৭০০ টাকা; সঙ্গে ভর্তি বাতিলের ফি।
গত সোমবার সকাল থেকে বিকাল পর্যন্ত গাজীপুরে বিশ্ববিদ্যালয়ের একাডেমিক ভবনের সামনে বেশ কিছু শিক্ষার্থীকে সমস্যা সমাধানের আশায় ভিড় জমাতে দেখা গেছে।
মো. আবদুল্লাহ আল মাউন নামে একজন শিক্ষার্থী বলেন, ২০১৬-১৭ শিক্ষাবর্ষে তিনি রাজশাহী সরকারি সিটি কলেজে গণিত (সম্মান) বিভাগে ভর্তি হন। পরের বছর ভর্তি হন সরকারি ঈশ্বরদী কলেজে রসায়ন বিভাগে। ‘আমি গণিত পড়তে চাই না। কিন্তু বিশ্ববিদ্যালয় আমাকে রসায়ন বিভাগের নিবন্ধনপত্র দিচ্ছে না। তারা প্রজ্ঞাপন জারি করেছে, যাদের একবার নিবন্ধনপত্র দেওয়া হয়েছে তাদের দ্বিতীয়বার আর দেবে না। তবে জরিমানা দিলে নিবন্ধনপত্র দেবে।’ এই নিয়ম আগে ছিল না বলে তার দাবি।
মো. মেহেদী হাসান নামে এক শিক্ষার্থী জানান, তিনি গত বছর কুমিল্লার নওয়াব ফয়জুন্নেছা সরকারি কলেজ বিবিএস এবং এ বছর লাঙ্গলকোট হাসান মেমোরিয়াল কলেজে ব্যবস্থাপনা বিভাগে ভর্তি হয়ে এই বিপদে পড়েছেন।
তাদের অভিযোগ, বিশ্ববিদ্যালয় হঠাৎ করে এই নিয়ম চালু করায় তাদের এখন ভোগান্তি পোহাতে হচ্ছে। অধ্যক্ষের প্রত্যয়ন ও সুপারিশ নিয়ে গেলেও সমস্যার সমাধান হচ্ছে না। তবে বিষয় পরিবর্তনের সুযোগ থাকা সত্ত্বেও কেন দ্বৈত ভর্তি হন সে বিষয়ে তারা কিছু বলতে চাননি।
এ বিষয়ে ডিন নাসির উদ্দিন বলেন, ‘দ্বৈত ভর্তি কখনও গ্রহণযোগ্য নয়। এটা অন্যায়। ভর্তির বিজ্ঞপ্তিতে তাদের নিরুৎসাহিত করা হয়। কিছু শিক্ষার্থী এর আগে দ্বৈত ভর্তি হয়ে সুকৌশলে পার পেয়ে গেছে। বর্তমানে সফটওয়্যারে পরীক্ষিত হওয়ায় তা ধরা পড়ছে। এটা বন্ধ করতে ক্রাশ প্রোগ্রাম হাতে নেওয়া হয়েছে। বর্তমানে এমন শিক্ষার্থীর সংখ্যা ৫ হাজারের মতো। এছাড়া জরিমানা মওকুফের সুযোগ রয়েছে জানিয়ে তিনি বলেন, ‘যারা দরিদ্র তাদের আবেদন পেলে জরিমানা মওকুফ করে সমস্যা সমাধান করা হচ্ছে। তারা যদি অধ্যক্ষের মাধ্যমে সুপারিশসহ ওয়ানস্টপ সার্ভিস সেন্টারে আবেদন নিয়ে আসেন তাহলে বিষয়টির সুরাহা হবে। কারো কোনো হয়রানি বা ভোগান্তির কারণ নেই।’
"