সিলেট প্রতিনিধি
সিলেটে পাসপোর্টের জন্য হাহাকার
সিলেটের গোলাপগঞ্জ উপজেলার রেনি দেব প্রায় আড়াই মাস আগে মেশিন রিডেবল পাসপোর্ট (এমআরপি) এর জন্য আবেদন করেছিলেন। সাধারণ পাসপোর্ট এক মাসের মধ্যে পাওয়ার কথা। অথচ আড়াই মাসেও পাসপোর্ট পাননি রেনি দেব। ভুক্তভোগী শুধু রেনি দেবই নন। সময়মতো পাসপোর্ট পাচ্ছেন না সিলেটের শত শত মানুষ। পাসপোর্টের জন্য মানুষ এখন হাহাকার করছেন।
সিলেট বিভাগীয় পাসপোর্ট অফিস সূত্র জানায়, মেশিন রিডেবল পাসপোর্ট (এমআরপি) বইয়ের সংকট থাকায় আবেদনকারীদের যথাসময়ে পাসপোর্ট সরবরাহ করা সম্ভব হচ্ছে না। সারা দেশেই এই সমস্যা বিরাজ করছে বলে জানানো হয়।
সূত্র জানায়, বর্তমানে দেশে পর্যাপ্ত পাসপোর্ট বই নেই। পাসপোর্ট বইয়ের সংকটে প্রায় মাসতিনেক ধরে সিলেটে ভোগান্তি পোহাচ্ছেন আবেদনকারীরা। নির্ধারিত সময় পেরিয়ে গেলেও হাতে আসছে না কাক্সিক্ষত পাসপোর্ট।
নির্ধারিত সময়ে পাসপোর্ট না পাওয়ায় অনেকের বিদেশযাত্রাও বাধাগ্রস্ত হচ্ছে। নানা দরকারে মানুষ বিদেশমুখী হয়। কেউ কেউ কাজের জন্য, কেউ আবার উচ্চশিক্ষার্থে কিংবা চিকিৎসার জন্য বিদেশমুখী হন। সময়মতো পাসপোর্ট না পেয়ে ভোগান্তির শিকার হন তারা। এ সময় পাসপোর্ট তৈরির আবেদন করে দীর্ঘ অপেক্ষায় পড়েছেন অনেকে।
পাসপোর্টের জন্য আবেদন করেছিলেন বিশ্বনাথের নিজাম উদ্দিন। এ প্রতিবেদককে তিনি বলেন, ‘আমার ভাইকে বিদেশ পাঠাতে তার পাসপোর্টের আবেদন করেছিলাম। কিন্তু নির্ধারিত সময়ের মাসখানেক পরেও পাসপোর্ট পাইনি।’ পাসপোর্ট আবেদনকারীরা বলছেন, সাধারণ পাসপোর্ট পেতে যেখানে সর্বোচ্চ এক মাস সময় লাগার কথা, সেখানে দুই-আড়াই মাসেও মিলছে না। আর জরুরি (আর্জেন্ট) পাসপোর্ট এক সপ্তাহের মধ্যে পাওয়ার কথা থাকলেও সেটিতে তিন-চার সপ্তাহ লেগে যাচ্ছে।
আরো কয়েকজন আবেদনকারী জানান, ডেলিভারির নির্ধারিত তারিখে তারা পাসপোর্ট অফিসে গিয়েও তা হাতে পাননি। অফিস থেকে জানানো হয়েছে, পাসপোর্ট পেতে দেরি হবে।
পাসপোর্ট অফিসের একটি সূত্র জানিয়েছে, পাসপোর্ট বই সংকট কাটানোর উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। জরুরি ভিত্তিতে ইংল্যান্ড থেকে ৫০ লাখ পাসপোর্ট বই ছাপিয়ে আনা হচ্ছে। তন্মধ্যে ১০ লাখ বই ইতোমধ্যেই বাংলাদেশের পথে রয়েছে। এসব বই পৌঁছানোর পর চলমান সংকট কাটিয়ে ওঠা সম্ভব হবে।
সিলেট বিভাগীয় পাসপোর্ট ও ভিসা অফিসের পরিচালক একেএম মাজহারুল ইসলাম বলছেন, পাসপোর্ট আবেদন পাওয়ার পর প্রক্রিয়া সম্পন্ন করে সাত-আট দিনের মধ্যে ঢাকায় পাঠিয়ে দেওয়া হয়। ঢাকা থেকে পাসপোর্ট বই এলে আমরা তা আবেদনকারীর হাতে পৌঁছে দেই। ঢাকা থেকে বই আসতে দেরি হলে সিলেট অফিসে কিছু করার থাকে না।
তিনি জানান, বিশ্বের বিভিন্ন দেশে যেসব বাংলাদেশি অবৈধভাবে ছিলেন তারা এখন বৈধ হচ্ছেন। এজন্য বিশেষ করে মধ্যপ্রাচ্য ও মালয়েশিয়ার বাংলাদেশ হাইকমিশন থেকে প্রচুর পরিমাণে পাসপোর্ট প্রিন্টের জন্য আসছে, এ কারণেই দেশে পাসপোর্ট পেতে কিছুটা বিলম্ব হচ্ছে। তার পরও যাদের বেশি জরুরি তাদের আমরা ঢাকা থেকে পাসপোর্ট বই কালেক্ট করার জন্য লিখে দিচ্ছি।
"