নিজস্ব প্রতিবেদক
বাংলাদেশ যাত্রীকল্যাণ সমিতির প্রতিবেদন
সিটিং সার্ভিস : ৯৬ শতাংশ বাস চলে দরজা বন্ধ করে
রাজধানীতে সিটিং সার্ভিসের নামে ৯৬ শতাংশ বাস-মিনিবাস দরজা বন্ধ করে যাতায়াত করছে। আর শতকরা ৯৪ শতাংশ অটোরিকশা চুক্তিতে চলাচল করছে। ৯৮ শতাংশ অটোরিকশা মিটারের চেয়ে অতিরিক্ত ভাড়া বা বকশিশ দাবি করছে। এ ছাড়া যাত্রীদের পছন্দের গন্তব্যে যেতে রাজি হয় না ৯০ শতাংশ অটোরিকশা। গতকাল শনিবার বাংলাদেশ যাত্রীকল্যাণ সমিতির মহাসচিব মো. মোজাম্মেল হক চৌধুরী স্বাক্ষরিত এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, গণপরিবহনের ভাড়ানৈরাজ্য পর্যবেক্ষণ উপকমিটির পাঁচটি টিম ছয় দিন ধরে নগরীর উল্লিখিত স্থানগুলোয় যাত্রী ভোগান্তি ও ভাড়ানৈরাজ্য পর্যবেক্ষণ করে। পর্যবেক্ষণকালে ৩১০টি বাস ও ৫৫৭ জন বাসযাত্রী, ২১৪টি অটোরিকশা, ১৮৫ জন অটোরিকশার যাত্রী, ৫৬ জন ট্যাক্সিক্যাব যাত্রীর সঙ্গে কথা বলে এই জরিপ পরিচালনা করে। রমজানে নগরীতে যাতায়াতকারী যাত্রী সাধারণের ভোগান্তি নিয়ে বাংলাদেশ যাত্রীকল্যাণ সমিতি পরিচালিত এক জরিপে এই চিত্র উঠে এসেছে। যাত্রীকল্যাণ সমিতির জরিপ পর্যবেক্ষণ প্রতিবেদনে বলা হয়, পবিত্র রমজানের শুরু থেকে পরিবর্তিত অফিস সময় অনুযায়ী যাতায়াতে নগরীর যাত্রীসাধারণ চরম ভোগান্তির শিকার হচ্ছেন।
রাজধানীর শনির আখড়া, গুলিস্তান, সায়েদাবাদ, যাত্রাবাড়ী, পোস্তগোলা, শাহবাগ, ফার্মগেট, মিরপুর-১০, মহাখালী, আগারগাঁও, ধানমন্ডি, বনানী, বারিধারাসহ নগরীর অনেক গুরুত্বপূর্ণ এলাকার রাস্তায় ঘণ্টার পর ঘণ্টা দাঁড়িয়ে থেকেও ট্যাক্সি ক্যাবের দেখা মেলে না। এতে পাঠাও, উবারসহ অ্যাপসভিক্তিক পরিবহনগুলো অসহায় যাত্রীদের কিছুটা স্বস্তি দিতে পাশে দাঁড়াচ্ছে।
এ ছাড়া প্রয়োজনীয়সংখ্যক যাত্রী ছাউনি না থাকায় বা যাত্রী ছাউনিগুলো বেদখলে থাকায় বৃষ্টিতে নাজুক পরিস্থিতিতে পড়ছে নগরীর যাত্রীসাধারণ। বিশেষত নারী, শিশু, বৃদ্ধ ও অসুস্থ রোগীরা এহেন পরিস্থিতিতে ভয়াবহ অবস্থার মুখোমুখি হচ্ছে।
যাত্রীসাধারণের অফিসযাত্রা এবং ছুটি শেষে ইফতারকে কেন্দ্র করে ঘরমুখো যাত্রাকে টার্গেট করে নগরীতে চলাচলকারী বেসরকারি সব কটি বাস এখন রাতারাতি সিটিং সার্ভিস বনে গেছে। এসব বাস বিশেষত ইফতারের সময় যাত্রীদের ধাক্কা দিয়ে নামিয়ে দ্রুত চলে যায়। একমাত্র বিআরটিসি বাস ও হাতেগোনা কয়েকটি কোম্পানির বাস মাঝপথের যাত্রীদের বাদুরঝোলা হয়ে যাতায়াতের একমাত্র ভরসা হয়ে উঠেছে। পর্যবেক্ষণে ৮২ শতাংশ যাত্রী রমজানে গণপরিবহন ব্যবস্থার এহেন কর্মকা-ে তীব্র অসন্তোষ প্রকাশ করেন। ৯২ শতাংশ যাত্রী প্রতিদিন যাতায়াতে দুর্ভোগের শিকার হন। ৯৮ শতাংশ যাত্রী অতিরিক্ত ভাড়া আদায়ের শিকার হন। ৬২ শতাংশ যাত্রী চলন্ত বাসে ওঠানামা করতে বাধ্য হন। সিটিং সার্ভিসের নামে অতিরিক্ত ভাড়া দিয়েও ২৮ শতাংশ যাত্রী দাঁড়িয়ে যেতে বাধ্য হন। হয়রানির শিকার হলেও অভিযোগ কোথায় করতে হয় জানেন না ৯৩ শতাংশ যাত্রী। তবে ৮৮ শতাংশ যাত্রী মনে করেন অভিযোগ করে কোনো প্রতিকার পাওয়া যায় না।
সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে আরো বলা হয়, নগরীতে চলাচলকারী অটোরিকশার ৯৪ শতাংশ চুক্তিতে চলাচল করছে। ৯৮ শতাংশ অটোরিকশা মিটারের অতিরিক্ত ভাড়া বা বকশিশ দাবি করছে। আগে ১০ টাকা বকশিশ চাইলেও রমজানে ৩০-৫০ টাকা বকশিশ দাবি করা হচ্ছে। যাত্রীদের পছন্দের গন্তব্যে যেতে রাজি হয় না ৯০ শতাংশ অটোরিকশা।
"