নিজস্ব প্রতিবেদক

  ২৪ মে, ২০১৮

পরিবার পরিকল্পনা অধিদফতরে দুর্নীতি

অফিস সুপার থেকে কোটিপতি হেদায়েত

রাজধানী কাওরান বাজারে পরিবার পরিকল্পনা অধিদপ্তরের অফিস সুপার হেদায়েত হোসেন। ক্ষমতার দাপট, ঘুষ টেন্ডারবাজির মাধ্যমে কোটিপতি বনে গেছেন। একই সঙ্গে অধিদপ্তরের ড্রাইভার আজগর হোসেনও ব্যাপক অর্থের মালিক হয়েছেন। ক্ষমতার দাপট, ঘুষ, টেন্ডারবাজি,তদবির বাণিজ্য, নিয়োগ বাণিজ্য এবং বিভিন্ন জালিয়াতিসহ ব্যাপক অনিয়মের অভিযোগ উঠেছে সুপার হেদায়েতের বিরুদ্ধে।

সূত্রে জানা যায়, হেদায়েত হোসেন নোয়াখালীতে পরিবার পরিকল্পনা অধিদপ্তরে টাইপিস্ট হিসেবে কর্মরত থাকাকালীন মা ও শিশু কল্যাণ কেন্দ্রে ওষুধ কেনা দরপত্র পান। মেয়াদোত্তীর্ণ ওষুধ ক্রয় করে লাখ লাখ টাকা হাতিয়ে নেন। তৎকালীন পরিচালক (এমসিএইচ) জাফর আহমেদ হাকিম বিষয়টি তদন্তপূর্বক হেদায়েতকে দোষী সাব্যস্ত করে একটি প্রতিবেদন রিপোর্ট জমা দেন। সুচতুর হেদায়েত কৌশলে তদন্ত রিপোর্টটি গায়েব করে ফেলেন। বিএনপি সরকারের আমলে বাণিজ্য প্রতিমন্ত্রী বরকত উল্লাহ বুলু এমপির আশীর্বাদপুষ্ট হয়ে নোয়াখালী থেকে বদলি হয়ে ঢাকার কাওরান বাজারে প্রধান কার্যালয়ে সে পরিবার পরিকল্পনা অধিদপ্তর কর্মচারী সমিতির যুগ্ম সাধারন সম্পাদক হন। সরকারের পালাবদলে তিনি হয়ে যান আওয়ামী লীগ পন্থী শ্রমিক নেতা। আওয়ামী লীগের বিভিন্ন নেতা, এমপি ও মন্ত্রীদের নাম ভাঙিয়ে হয়ে ওঠেন বেপরোয়া ও হিংস্র ।

অধিদপ্তরের বিশ্বস্ত সূত্রে জানা যায়, লক্ষীপুর অজপাড়া গাঁয়ের হতদরিদ্র পরিবারের সদস্য হেদায়েত হোসেন ঘুষ, টেন্ডারবাজি,তদবির বাণিজ্য এবং নিয়োগ বাণিজ্যসহ নানা অপকর্মের সঙ্গে জড়িয়ে পড়েন। কর্মচারী নেতা হওয়ায় অধিদপ্তরের কেউ তার বিরুদ্ধে মুখ খুলতে সাহস পায়নি।

রাজধানীর মোহাম্মদপুরের আদাবর এলাকায় ম্যারীল্যান্ড নামে এপার্টমেন্ট প্রজেক্টের ৫ম তলা ও ৮ম তলায় তার রয়েছে ৩৩শ স্কয়ার ফিটের দুটি ফ্ল্যাট। যার মূল্য প্রায় দুই কোটি পঞ্চাশ লাখ টাকা। ঢাকার আদাবরে ৫ (পাঁচ) কাঠা জমির উপর ৯ (নয়) তলা ভবন বর্তমানে নির্মানাধীন। এছাড়াও শ্যামলী স্কয়ার মার্কেটে ৪টি দোকান। বুড়িগঙ্গা সিটিতে রয়েছে কয়েকটি ফ্লাট ও দোকান। তিনি শুধু দামি গাড়ীতে করে অফিস করেন তাই নয় রয়েছে পরিবারের সদস্যদেও জন্যও ৩টি দামি গাড়ী। চাকরি প্রার্থীদের প্রতিজনের কাছ থেকে ৫ লাখ থেখে ৭ লাখ টাকা পর্যন্ত ঘুষ বাণিজ্য করে কোটি কোটি টাকা হাতিয়ে নিয়েছেন তিনি। একজন ৩য় শ্রেণির কর্মচারীর মাসিক বেতনের আয়ের সঙ্গে সম্পদের মিল না থাকায় অভিযোগের ভিত্তিতে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক) প্রধান কার্যালয়ের রাম মোহন নাথ উপপরিচালক হেদায়েত হোসেনের বিরুদ্ধে একটি নোটিশ জারি করেন। ওই তদন্ত কর্মকর্তা বদলি হওয়ায় বিষটি ঝুলে যায়। ক্ষমতার দাপট দেখিয়ে অধিদপ্তরের টাকায় সংযুক্ত আরব আমিরাত, থাইল্যান্ড ও কম্বোডিয়া ও আজমীর শরিফ জিয়ারত করেন। তার নিয়োগ বানিজ্যের শিকার হয়ে ২০১৩ সালে কুড়িগ্রামের পরিবার পরিকল্পনা অফিসের সাঁট-মুদ্রাক্ষরীক মোশারফ হোনের মারা যাওয়ার পরও লাশ এলাকার লোকজন দুই দিন পর দাফন করে। অপরদিকে জালিয়াত চক্রের আরেক হোতা পরিবার পরিকল্পনা অধিদপ্তরের ড্রাইভার আজগর হোসেন স্বপদে রয়েছেন।

সূত্রে জানা যায়, অধিদপ্তরের ড্রাইভার মো: আজগর হোসেনের বিরুদ্ধে জালিয়াতির অভিযোগ পাওয়া গেছে। তিনি ড্রাইভার হলেও কাওরান বাজারে পরিবার পরিকল্পনা অফিসে সর্বোচ্চ পর্যায়ে সম্পর্ক আছে। মূলত নিয়োগ বাণিজ্য বদলি বিভিন্ন টেন্ডার নিয়ন্ত্রণ, গাড়ির তেল চুরি, নতুন নতুন প্রকল্পের কর্তা ব্যক্তিদের সুনজরে থাকায় দ্রুত অর্থের মালিকহন। তার একাউন্ট নং ৭৭১২ ইসলামী ব্যাংক কাওরান বাজার শাখায় কোটি কোটি টাকার লেনদেন হওয়ার তথ্য পাওয়া গেছে। আজগরের স্ত্রীসহ পরিবারের ১২সদস্য পরিবার পরিকল্পনা বিভাগে চাকুরি করেন।

"

প্রতিদিনের সংবাদ ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন
আরও পড়ুন
  • সর্বশেষ
  • পাঠক প্রিয়
close
Error!: SQLSTATE[42S02]: Base table or view not found: 1146 Table 'protidin_sangbad.news_hits_counter_2020_04_07' doesn't exist
Error!: SQLSTATE[42S02]: Base table or view not found: 1146 Table 'protidin_sangbad.news_hits_counter_2020_04_07' doesn't exist