নিজস্ব প্রতিবেদক

  ০৩ মে, ২০১৮

ক্যাবলের জঞ্জাল রাজধানী ঢাকা : বাড়ছে দুর্ঘটনা

গতকালও বিদ্যুৎস্পৃষ্ট হয়ে মারা গেছেন একজন

রাজধানীর সড়ক থেকে শুরু করে অলিগলি সব জায়গায় ঢাকার বিভিন্ন সংস্থার ক্যাবল। ডিশ ক্যাবল, ইন্টারনেট ক্যাবল ও বিদ্যুতের তার সবমিলিয়ে এ নগরী যেন এক তারের জঞ্জাল। কোথাও ফুটপাত বা রাস্তায় নেমে এসেছে তারের লাইন। বৃষ্টিতে এসব তার পানির সংস্পর্শে আসার পর ঘটছে দুর্ঘটনা। জঞ্জালের মতো এসব তার নষ্ট করছে ঢাকার সৌন্দর্যও। কিন্তু এসব তার অপসারণে সংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠানের কোনো পদক্ষেপই কাজে আসছে না। যদিও রাজধানীতে ইন্টারনেট আর ক্যাবল টিভির তার মাটির নিচ দিয়ে সরবরাহের কথা, কিন্তু তা মানছেন না ব্যবসায়ীরা। ফলে ঝুঁকি নিয়ে চলাচল করছে সাধারণ পথচারী। ডিপিডিসির নির্বাহী পরিচালক মো. রমিজ উদ্দিন সরকার বলেন, আমরা কোনো পুল বাইরে রাখব না, সব অ্যান্ডারগ্রাউন্ডে নিয়ে যাব।’

গতকাল রাজধানীর ওয়ারিতে পানিতে পড়ে থাকা বিদ্যুতের তারে স্পৃষ্ট হয়ে মারা গেছে একজন। আহত হয়েছেন আরো একজন। তারের এমন অবস্থা শুধু ওয়ারীতে নয়, রাজধানীর খিলগাঁও, গোড়ান, বাসাবো, শাহজাহানপুর, ফকিরাপুল, নয়াপল্টন, পুরানাপল্টন, কাকরাইল, নিউমার্কেট, ফার্মগেট, কারওয়ানবাজার, বাংলামটর, মগবাজার, মৌচাক, বাড্ডাসহ বিভিন্ন এলাকায় বিদ্যুতের খুঁটিতে তারের জটলা লেগে থাকার এমন দৃশ্য চোখে পড়েছে। রাজধানীর অভিজাত এলাকা ধানমন্ডি, বনানী, গুলশান, বারিধারা, নিকুঞ্জতেও একই দৃশ্য দেখা গেছে। রাস্তার পাশে মাথার ওপর ইন্টারনেট, ডিস, টেলিফোন লাইনগুলো জড়িয়ে আছে একসঙ্গে। কোথাও কোথাও তারের ভারে কাত হয়ে পড়েছে খুঁটি। তারের জটলা হাঁটার সময় পথচারীদের মাথাও ছুঁয়ে যায়। এতে করে বাড়ছে দুর্ঘটনা।

জানা যায়, ২০০৯ সাল থেকেই সরকার রাজধানীতে ঝুলে থাকা বিদ্যুৎ, ডিশ ক্যাবল, ইন্টারনেট সার্ভিস প্রোভাইডার (আইএসপি), মোবাইল কোম্পানি, বিটিসিএলের ল্যান্ড ফোনের তারসহ সব ধরনের তারকে বিশ্বের অনেক আধুনিক শহরের মতো মাটির নিচ দিয়ে স্থাপনের জন্য পরিকল্পনা গ্রহণ করে। এ লক্ষ্যে ন্যাশনওয়াইড টেলিকমিউনিকেশন ট্রান্সমিশন নেটওয়ার্ক (এনটিটিএন) প্রকল্পের আওতায় দুটি প্রতিষ্ঠান ফাইবার অ্যাট হোম এবং সামিট কমিউনিকেশনকে মাটির নিচ দিয়ে তার পরিচালনার জন্য অবকাঠামো স্থাপনের লাইসেন্স দেওয়া হয়। পরে ২০১৪ সালের মধ্যেই বিদ্যুতের খুঁটি থেকে এসব ঝুলন্ত তার অপসারণ করার সময়সীমা বেঁধে দেওয়া হয়। প্রকল্প মোতাবেক সরকারি সংস্থাগুলোর প্রায় বেশির ভাগ তারই মাটির নিচে চলে গেলেও বেশির ভাগ ডিশ অপারেটর আর ইন্টারনেট সেবা প্রদানকারী প্রতিষ্ঠানের তার এখনো মাটির ওপরেই রয়ে গেছে। বৈদ্যুতিক খুঁটি কিংবা সড়কবাতির খুঁটির সঙ্গে পেঁচিয়ে পরিস্থিতি আরো বিপজ্জনক আকার ধারণ করেছে।

তারা বলছেন, সামিট কমিউনিকেশন ও ফাইবার অ্যাট হোমকে এলডিপির দায়িত্ব দেওয়া হলেও তারা নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে কাজ শেষ না করতে পারায় সকল দায়-দায়িত্ব অভিযোগ আমাদের ওপরেই এসে পড়ছে।

লোকাল ব্রডব্যান্ড নেটওয়ার্ক ওনার্স অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি ফুয়াদ মুহাম্মদ শরফুদ্দীন বলেন, আমরা যে পদ্ধতি মেনে চলি তা বজায় রাখতে গেলে ক্যাবল রাস্তায় ঝুলবে। ডিশে সুবিধা যেটা তা হচ্ছে, একটি এলাকায় একজন ব্যবসা করে। কিন্তু ইন্টারনেটে সেটা নেই। যে কারণে ক্যাবলের পরিমাণ বাড়ছে এবং আরো বাড়বে।’

সামিট সেন্টারের ম্যানেজিং ডিরেক্টর মো. আরিফ আল ইসলাম বলেন, বেশি আইএসপি না থেকে যদি বড় আইএসপিগুলো মিলে আমাদের কাছ থেকে যে পয়েন্ট থেকে নিচ্ছেন সেখান থেক বিল্ডিং সংযোগ পর্যন্ত তারা অ্যান্ডারগ্রাউন্ডে করে নিতে পারেন।’

২০১৪ সালে এক বছরের মধ্যে সব তার মাটির নিচ দিয়ে নিয়ে যাওয়ার পরিকল্পনা বাস্তবায়নে সরকারের সংশ্লিষ্ট সব মন্ত্রণালয়ের সদস্য নিয়ে একটি কমিটি গঠন করা হয়। সে পরিকল্পনা ব্যর্থ হওয়ার কোনো সুনির্দিষ্ট কারণ বলতে না পারলেও আগামী ৭-৮ মাসের মধ্যে আবার এ কাজ শুরু করবে বলে জানিয়েছে ডিপিডিসি।

"

প্রতিদিনের সংবাদ ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন
আরও পড়ুন
  • সর্বশেষ
  • পাঠক প্রিয়
close
Error!: SQLSTATE[42S02]: Base table or view not found: 1146 Table 'protidin_sangbad.news_hits_counter_2020_04_07' doesn't exist
Error!: SQLSTATE[42S02]: Base table or view not found: 1146 Table 'protidin_sangbad.news_hits_counter_2020_04_07' doesn't exist