চট্টগ্রাম ব্যুরো
চট্টগ্রামে চোখ উপড়ানোর মামলায় ৮ জনের কারাদন্ড
বাদীর দাবি ন্যায়বিচার পাননি
২৭ বছর আগে চট্টগ্রামে দুই ভাইয়ের চোখে এসিড নিক্ষেপের পর তুলে ফেলার মামলায় রায় দিয়েছেন আদালত। দুইজনকে ১০ বছর এবং ছয়জনকে সাত বছর করে কারাদন্ড দিয়েছেন আদালত। খালাস পেয়েছেন চার আসামি। গতকাল বৃহস্পতিবার অতিরিক্ত জেলা ও দায়রা জজ স্বপন কুমার সরকার এ রায় প্রদান করেন। তবে এ মামলার রায়ে ন্যায়বিচার বঞ্চিত হয়েছেন বলে দাবি করেছেন বাদী।
রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবী লোকমান হোসেন জানান, মামলায় অভিযুক্ত ১৩ আসামির মধ্যে রাঙ্গুনিয়ার আইয়ুব বাহিনীর প্রধান আইয়ুব এবং উপজেলার পারুয়া ইউনিয়নের সাবেক চেয়ারম্যান মো. ইব্রাহিমকে ১০ বছর করে সশ্রম কারাদন্ড ও ১০ হাজার টাকা অর্থদন্ড প্রদান করা হয়। এ রায়ে সাত বছর করে দন্ডপ্রাপ্ত ছয় আসামিরা হলেন- সোলায়মান, আবদুল হক, ইউসুফ, জাফর, দুলা মিয়া ও গোলাম কাদের। তাদের প্রত্যেককে পাঁচ হাজার টাকা করে অর্থদন্ড প্রদান করা হয়। এ মামলায় অভিযোগ প্রমাণিত না হওয়ায় চারজনকে খালাস দেওয়া হয়। এরা হলেন- আবদুস সালাম, আবুল হাশেম, জাহাঙ্গীর আলম ও আবুল হাশেম। এছাড়া এ মামলায় দন্ডপ্রাপ্ত দুই আসামিসহ তিনজন দুলা মিয়া, গোলাম কাদের ও রশিদ আহমদ মারা গেছেন।
এদিকে, রায় ঘোষণার সময় আদালতে এসিড সন্ত্রাসের শিকার ছবুর আহমেদসহ তার পরিবারের স্বজনরা উপস্থিত ছিলেন। রায় শুনে ছবুর আহমেদও স্বজনরা কান্নায় ভেঙে পড়েন। মামলার রায়ে ন্যায়বিচার বঞ্চিত হয়েছেন বলে দাবি করে এসিড সন্ত্রাসের শিকার ছবুর আহমেদ বলেন, আমার দুই চোখ খুঁচিয়ে এসিড ঢেলে দেওয়ার ২৭ বছর যন্ত্রণা নিয়ে কাটিয়েছি প্রতিটি মুহূর্ত। আশা করেছিলাম আদালত আসামিদের সর্বোচ্চ শাস্তি দেবেন। রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবী লোকমান হোসেন বলেন, আমরা এ মামলার রায়ে আসামিদের সর্বোচ্চ শাস্তি মৃত্যুদন্ড আশা করেছিলাম। রায়ের কপি হাতে পাওয়ার পর পরবর্তী পদক্ষেপ নেওয়া হবে।
প্রসঙ্গত, ১৯৯১ সালের ১৮ ফেব্রুয়ারি চট্টগ্রামের রাঙ্গুনিয়া মুক্তিযোদ্ধা আবদুস সোবহানের দুই সন্তান কবির আহমদ ও সবুর আহমদের ওপর চোখে খেজুর কাটা ও এসিড ঢেলে নৃশংস নির্যাতন চালায় রাঙ্গুনিয়ায় দুর্ধর্ষ আইয়ুব বাহিনী; এই বাহিনীর প্রধান আইয়ুব যুদ্ধাপরাধে মৃত্যুদন্ডপ্রাপ্ত সালাউদ্দিন কাদেরের ক্যাডার হিসেবে পরিচিত। বিচার চেয়ে মামলা করায় ওই বছরের ৩০ অক্টোবর যাত্রীবাহী জীপ গাড়ী থেকে মুক্তিযোদ্ধা সোবহানকে ধরে নিয়ে যায় আইয়ুব বাহিনী। ১২ দিন পর দেহ থেকে বিচ্ছিন্ন হাত পা গলা কাটা অবস্থায় লাশ পাওয়া যায় মুক্তিযোদ্ধা সোবহানের।
"