নিজস্ব প্রতিবেদক
রাজধানীতে স্কুলের মাঠ দখল করে ‘মাদক ব্যবসা’
ঢাকার রমনার সিদ্ধেশ্বরী বালক উচ্চ বিদ্যালয়ের মাঠের জায়গা দখল করে মাদক ব্যবসা চালানোর অভিযোগ এসেছে তিন ব্যক্তির বিরুদ্ধে। ওই তিন জন নিজেদের যুবলীগ নেতা হিসেবে পরিচয় দিয়ে দখল করা জায়গায় ঘর তুলে ‘টর্চার সেল’ গড়ে তুলেছেন বলেও অভিযোগ করেছে বিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ।
গতকাল বুধবার সংবাদ সম্মেলন করে এসব অভিযোগ এনে বিদ্যালয় পরিচালনা পর্ষদের চেয়ারম্যান স্থানীয় কাউন্সিলর মুন্সী কামরুজ্জামান কাজল বলেছেন, দখলের প্রতিবাদ করতে গিয়ে তাকে হত্যার হুমকিও পেতে হয়েছে। যে যুবকদের বিরুদ্ধে অভিযোগ এসেছে, তারা হলেন গোলাম মোস্তফা শিমুল (৪২), দেওয়ান আলীমউদ্দিন শিশির (৩৮) ও মাসুদ রানা (৩৮)। বাংলাদেশ ক্রাইম রিপোর্টার্স অ্যাসোসিয়েশনে সংবাদ সম্মেলনে বেসরকারি এই শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের অধ্যক্ষ শেখ ফরিদুজ্জামান, বিদ্যালয়ের অন্যান্য শিক্ষক, কর্মচারীরা উপস্থিত ছিলেন।
সংবাদ সম্মেলনে জানানো হয়, ‘অবৈধ কর্মকা-’ ও শিক্ষকদের মারধরের অভিযোগে ওই তিন যুবকের নাম উল্লেখ করে অজ্ঞাতনামা আরও ৭/৮ জনকে আসামি করে গত সোমবার রমনা থানায় মামলা করেছেন অধ্যক্ষ। ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের ১৯ নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলর কামরুজ্জামান জানিয়েছেন, হুমকি পাওয়ার পর সোমবার থানায় একটি সাধারণ ডায়েরি (জিডি) করেছেন তিনি।
সংবাদ সম্মেলনে অধ্যক্ষ ফরিদুজ্জামান বলেন, ‘শিমুল, শিশির ও মাসুদ চিহ্নিত সন্ত্রাসী ও মাদক ব্যবসায়ী। তারা দীর্ঘদিন ধরে এলাকায় সন্ত্রাসী কর্মকা- ও মাদকের ব্যবসা করে আসছে।’ ‘বিদ্যালয়ের বিভিন্ন কক্ষ দখল করে রাতে মাদক ব্যবসা পরিচালনা, বিদ্যালয়ের মাঠে অবৈধভাবে গাড়ি পার্কিং করে চাঁদা উত্তোলন, মাঠে টর্চারসেল স্থাপন, বিদ্যালয়ের জায়গায় দোকান করে তারা ভাড়া তুলছে।’ এসব কর্মকা-ের প্রতিবাদ করায় গত রোববার দুপুরে আগ্নেয়াস্ত্রসহ ওই বিদ্যালয়ে ঢুকে তিন শিক্ষক আমিনুল ইসলাম, মোশাররফ হোসেন ও রুহুল আলমকে মারধর করেন বলে অধ্যক্ষ জানান। মৌচাকের আনারকলি মার্কেট, বিদ্যালয়ের মাঠ ও স্থানীয় মসজিদের আশপাশে কয়েকশ ছোট-বড় দোকান বসিয়ে এসব থেকে প্রতিদিন ৬০ হাজার টাকার চাঁদা তোলে তারা। এছাড়া স্কুল মাঠে গাড়ি পার্কিং করে সেখান থেকে টাকা তোলা হয়। এসবের প্রতিবাদ করলে আমাকে মেরে ফেলার হুমকি দেয় তারা।’ ‘তারা সুবিধামতো রাজনৈতিক পরিচয় দেয়। যখন সেই সরকার ক্ষমতায় থাকে, তখন তারা সেই দলের হয়ে ক্ষমতার প্রভাব দেখায়। তাদের বিরুদ্ধে স্থানীয়রা মুখ খুলতে সাহস পায় না।’ অভিযোগের বিষয়ে জানতে চাইলে শিশির বলেন, “আমার বিরুদ্ধে এমন কোনো মামলা হয়েছে কি না, আমারা জানা নেই। এছাড়া বিদ্যালয়ে শিক্ষকদের মারধরের মতো কোনো ঘটনাই ঘটেনি।’ কাউন্সিলরকে হত্যার হুমকির বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি বলেন, “কউন্সিলর হচ্ছেন আমাদের জনপ্রতিনিধি, তাকে কে মারবে? আমার বিরুদ্ধে এমন অভিযোগ করে থাকলে এটা মিথ্যা-বানোয়াট।’ অন্য দুই আসামি গোলাম মোস্তফা শিমুল ও মাসুদ রানার মোবাইল ফোন বন্ধ পাওয়া যায়।
"