মুহাজিরুল ইসলাম রাহাত, সিলেট
মাদক আস্তানা তারাপুর চা বাগান
সন্ধ্যায় মাদকসেবীদের আড্ডা
তারাপুর চা বাগান। সিলেট নগরের রাগীব রাবেয়া মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল রোড ঘেঁষে এটি অবস্থিত। বাগানের টিলায় বসবাস করে শতাধিক চা শ্রমিক। সন্ধ্যা হলেই প্রতিদিন সেখানে বেড়ে যায় মাদকসেবীদের আনাগোনা। হাত বাড়ালে মেলে গাঁজা, ইয়াবা, হারিয়া, বাংলা মদ, ফেনসিডিল। সন্ধ্যা হলেই সেখানে মাদক সেবনের খেলায় মেতে ওঠে নেশাগ্রস্তরা। কেউ নিয়ে যাচ্ছেন কেউবা আবার সেখানে বসেই সেবন করছেন। মাদক সেবনের এমন আড্ডা প্রতিদিনই বসে সেখানে। মাদকসেবীদের মধ্যে স্কুল, কলেজ ও বিশ্ববিদ্যালয় পড়–য়া শিক্ষার্থীদের সংখ্যা বেশি। উঠতি বয়সের ছেলেরা মাদক সেবনে জড়িয়ে পড়ায় চিন্তিত ও উদ্বিগ্ন অভিভাবক মহল।
জানা গেছে, স্থানীয় কতিপয় রাজনৈতিক নেতার ছত্রছায়ায় ও প্রশাসনের অসাধু কিছু কর্মকর্তাদের নীরবতায় চলছে মাদকের এ অবৈধ ব্যবসা।
সরেজমিনে দেখা যায়, তারাপুর চা বাগানের টিলায় বসবাস করে শতাধিক চা শ্রমিক। সেখানে রয়েছে কয়েকটি ঝুঁপড়ি ঘর, সাজানো রয়েছে চেয়ার টেবিল।
সন্ধ্যা নামলে সেই ঘরেই বসে মাদকসেবীদের আড্ডা, চলে নাচ-গানও। ঘরের মেঝেতে ছড়িয়ে ছিটিয়ে আছে গাঁজা, ইয়াবাসহ বিভিন্ন ধরনের নেশা সেবনের উপকরণ। এমনকি মেঝেতে খালি ইনজেকশনের সিরিঞ্জও পড়ে থাকতে দেখা যায়।
জানা যায়, প্রতিদিন বিকেল ৪টার পর থেকেই সেখানে শুরু হয় মাদকসেবীদের আনাগোনা। বেলা বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে শুরু হয় দলবদ্ধ আসা-যাওয়া। যা সময়ে সময়ে ভয়াবহ হয়ে ওঠে। আর এর সঙ্গে জড়িত রয়েছে কতিপয় রাজনৈতিক নেতা ও একটি প্রভাবশালী চক্র। যে কারণে কেউই তাদের ভয়ে মুখ খুলতে নারাজ।
বিষয়টি নিয়ে বিভন্ন সামাজিক সংগঠনের নেতারা জেলা প্রশাসন ও পুলিশ প্রশাসনকে অবহিত করলে তারা মাদকসেবীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার আশ্বাস দিলেও কার্যত তেমন কোনো উদ্যোগ নেয়নি পুলিশ প্রসাশন। এক মুদি দোকানি জানান, স্থানীয়রা একাধিকবার মাদকবিক্রেতাদের বাধা দিলেও উল্টো নাজেহাল হতে হয়। এমনকি প্রাণনাশের হুমকিও দেয় তারা। তিনি জানান, মাদকসেবীদের কাছে অনেকটা জিম্মি হয়ে আছে এলাকার বাসিন্দারা। এ অবস্থা থেকে উত্তরণে কয়েকবার জেলা প্রশাসনে ধরনা দিয়েছেন এলাকাবাসী। কিন্তু তাতে কোনো সমাধান আসেনি।
সিলেট মেট্রোপলিটন পুলিশের অতিরিক্ত উপকমিশনার মুহম্মদ আব্দুল ওয়াহাব বলেন, মাদকসেবীদের ধরতে পুলিশ নিয়মিত অভিযান চালাচ্ছে। রাতে ওই এলাকায় পুলিশি টহল জোরদার করা হয়েছে।
এ ব্যাপারে র্যাব-৯ এর পুলিশ সুপার মো. মনিরুজ্জামানের বলেন, মাদকের আস্তানা শিক্ষার্থী ও যুবসমাজের জন্য হুমকি ও ক্ষতির কারণ। জড়িতদের বিরুদ্ধে অচিরেই র্যাব ব্যবস্থা নেবে বলেও জানান র্যাবের এই কর্মকর্তা।
"