নিজস্ব প্রতিবেদক

  ১৪ এপ্রিল, ২০১৮

পুরান ঢাকায় হালখাতা ঘিরে উৎসবের আমেজ

দুয়ারে বৈশাখ, এলো নতুন বাংলা বছর ১৪২৫। ব্যস্ত নগর জীবনে বাংলা সাল বা মাসের খুব একটা প্রচলন কিংবা ব্যাবহার না থাকলেও শত বছর ধরে ঐতিহ্যগতভাবে পালন করে আসা পুরান ঢাকার মানুষের কাছে পহেলা বৈশাখ ঘিরে হালখাতা আয়োজন উৎসবের আমেজ সৃষ্টি করে। দীর্ঘদিনের ঐতিহ্য ধরে রাখতে এবারও প্রস্তুতির কোনো কমতি রাখেননি এখানকার দোকানিরা।

সরেজমিনে ঘুরে দেখা যায়, হালখাতা উৎসবের আমেজ সৃষ্টি হয়েছে। যেসব দোকানে হালখাতা আয়োজন করা হচ্ছে তাদের আয়োজন প্রায় শেষের দিকে। পুরাতন জরাজীর্ণ বছর ও তার হিসাবপত্রকে বিদায় জানিয়ে নতুন বছরে নতুনভাবে এগিয়ে যেতে তাদের আয়োজন চলছে জোরেশোরে। দোকানপাট ধুয়ে মুছে পরিষ্কার করে তাতে রং দিয়ে নতুনত্ব আনার চেষ্টা চোখে পড়ার মতো। ফুল বেলুন দিয়ে সাজানো হচ্ছে দোকান। এ ছাড়া পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতার পাশাপাশি তারা পুরাতন খাতার সব লেনদেনের হিসাবও করছেন।

এদিকে নতুন টালি খাতা কেনার ধুম পড়েছে দোকানগুলোতে। হালখাতায় পুরাতন খাতার হিসাব-নিকাশ সব নতুন খাতায় তুলে রাখবেন। তাই টালি খাতা বিক্রেতাও দোকানে দোকানে ঢুঁ মেরে খাতার দাম ও আকৃতির জানান দিয়ে যাচ্ছেন। এ ছাড়া এক সময় ক্রেতার এলাকায় গিয়ে কার্ড দিয়ে দাওয়াত দেওয়ার রেওয়াজ থাকলেও এখন ডাকযোগে কার্ড পাঠানো ও সেটা না হলে বেশির ভাগ ক্ষেত্রে ফোনেই দাওয়াত পৌঁছে দিচ্ছেন দোকানিরা। আর গত কয়েক বছর ধরে অনেক ক্রেতাও মোবাইল ব্যাংকিংয়ের মাধ্যমে টাকা পাঠিয়ে তাদের ঋণ পরিশোধ করছেন। দূরের ক্রেতাদের আগেভাগে কার্ড বিতরণ করা শেষ। এখন চলছে কাছের ক্রেতাদের কার্ড বিতরণ। ফলে এসব কাজে সময় ব্যয় করে বেচাবিক্রি কমেছে অনেকাংশ। তবুও সুষ্ঠুভাবে সম্পন্ন করতে পারলেই খুশি তারা।

এ ছাড়া এক সময় হালখাতায় ক্রেতাদের নিজ আয়োজনে গরম মিষ্টি, জিলেপি ও অন্যান্য উপায়ে খাবার দিয়ে আপ্যায়ন করলেও এখন তা বদলেছে। বেশির ভাগ দোকানি হোটেল বুকিং করে রেখেছেন। এর ফলে ক্রেতারা ব্যবসা প্রতিষ্ঠানে দেনা চুকিয়ে একটি টোকেন দেখিয়ে হোটেলগুলো থেকে খাবার নিয়ে নিচ্ছেন। রাখা হচ্ছে উপহারের ব্যবস্থাও। বিভিন্ন ধরনের দামি ও আকর্ষণীয় উপহার রাখা হচ্ছে ক্রেতাদের জন্য।

কথা হয় শ্যামবাজার বিসমিল্লাহ্? আড়তের মালিক ইদ্রিস আলমের সঙ্গে। তিনি বলেন, ‘আমাদের এই রীতি বাবা-দাদাদের আমল থেকে চলে আসছে। আমাদের এই বাজারে কৃষিপণ্য নিয়েই ব্যবসা চলে। তাই একেক ক্রেতার কাছে আমাদের পাওনা দু-তিন কোটি টাকার মতো হয়ে থাকে। যেহেতু আমাদের ব্যবসার পরিধি বড়, তাই আমাদের হালখাতাও চলে ১৫ দিন। দূর-দূরান্তের ক্রেতাদের জন্য আবাসিক হোটেল ও খাবার হোটেলের ব্যবস্থা করা হয়েছে। আসা-যাওয়ার জন্য বাস ও প্লেন টিকেটও পাঠানো হয়েছে অনেক ক্রেতাকে। এ ছাড়া নতুন বছরে ব্যবসায়ের সমৃদ্ধি কামনায় দোয়ার আয়োজন করেছি।’

"

প্রতিদিনের সংবাদ ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন
আরও পড়ুন
  • সর্বশেষ
  • পাঠক প্রিয়
close
Error!: SQLSTATE[42S02]: Base table or view not found: 1146 Table 'protidin_sangbad.news_hits_counter_2020_04_07' doesn't exist
Error!: SQLSTATE[42S02]: Base table or view not found: 1146 Table 'protidin_sangbad.news_hits_counter_2020_04_07' doesn't exist