খুলনা প্রতিনিধি

  ০৮ মার্চ, ২০১৮

নানা সংকটে খুলনার রাষ্ট্রায়ত্ত ৯ পাটকল

নানা সংকটে খুলনা অঞ্চলের রাষ্ট্রায়ত্ত নয়টি পাটকল। ৫০ থেকে ৬৫ বছর আগে প্রতিষ্ঠিত এ পাটকলগুলোতে আজও স্থাপন হয়নি নতুন যন্ত্রপাতি। সংস্কার হয়নি পুরনোগুলোও। এসব যন্ত্রপাতি দিয়ে পণ্য উৎপাদন করতে গিয়ে নানা সমস্যায় পড়তে হচ্ছে শ্রমিকদের। তারা বলছেন, আধুনিক যন্ত্রের অভাবে যেমন সম্ভব হচ্ছে না পণ্যের বহুমুখীকরণ, তেমনি পিছিয়ে পড়তে হচ্ছে আন্তর্জাতিক মানের পণ্য উৎপাদনের ক্ষেত্রে। তবে বিজেএমসি লিয়াজোঁ কর্মকর্তা জানান, যন্ত্রপাতি আধুনিকায়নের ফলে উৎপাদন শতভাগ না হলেও ৯০ শতাংশ আশা করা যায়। খুলনা অঞ্চলে ১৯৫২ থেকে ১৯৬৮ সালের মধ্যে গড়ে ওঠে নয়টি পাটকল। কিন্তু দীর্ঘদিনেও সংস্কার না করায় পাটকলের স্পিনিং, সফটনার, ব্রেকার ও ফিনিশার কার্ড, ড্রয়িং মেশিনের অবস্থা বেহাল।

গত বছর প্রতিদিন ৩৭২ মেট্রিক টন পাটজাত পণ্য উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রার বিপরীতে উৎপাদক হতো ২২৮ টন। আর এখন প্রতিদিন ২৭২ টন লক্ষ্যমাত্রার বিপরীতে উৎপাদন হচ্ছে ১৮৩ টন। পুরাতন যন্ত্রপাতি দিয়ে কাজ করতে হাঁপিয়ে উঠছেন শ্রমিকরা। এ ছাড়া, পাঁচ হাজার ১১৪টি তাতের মধ্যে এখন চালু আছে দুই হাজার ৮০০টি। দেশে এবং আন্তর্জাতিক বাজারে পাটের বহুমুখী পণ্যের চাহিদা থাকলেও আধুনিক যন্ত্রপাতির অভাবে উৎপাদন ব্যাহত হচ্ছে। তাছাড়া খুলনা অঞ্চলের পাটকলগুলো উৎপাদন করছে শুধুমাত্র পাটের বস্তা, চট, কার্পেট ও সুতা। বর্তমানে বিক্রির অপেক্ষায় পড়ে আছে ২৩২ কোটি টাকা মূল্যের ২৩ হাজার মেট্রিক টন পণ্য। পাটকলগুলো বছরে লোকসান দিচ্ছে ২২০ কোটি টাকা। সমস্যার কথা স্বীকার করে বিজেএসসি বলছে, প্লাটিনাম ও জেজেআই জুট মিলের যন্ত্রপাতি আধুনিকায়নের পরিকল্পনা রয়েছে।

খুলনায় রাষ্ট্রায়ত্ত ক্রিসেন্ট, প্লাটিনামসহ নয়টি পাটকলে কর্মকর্তা-কর্মচারী ও শ্রমিক রয়েছেন প্রায় ২৬ হাজার। বেহাল যন্ত্রে পণ্য উৎপাদন করতে গিয়ে প্রতিদিন যাদের কাহিল হতে হয়।

রাষ্ট্রয়ত্ত পাটকল সিবিএ-নন সিবিএ পরিষদের যুগ্ম আহবায়ক খলিলুর রহমান বলেন, ব্যাক্তি মালিকানায় পাটকলের মেশিনের কার্যক্ষমতা ১০০ শতাংশ আর সরকারি উৎপান পাটকলের মেশিনের কার্যক্ষমতা ৪৫ শতাংশ। উৎপাদনের ক্ষেত্রে বেসরকারি পাটকলে যেখানে এক টন উৎপাদন করতে ৩০ জন শ্রমিক লাগে, সেখানে আমাদের এখানে শ্রমিক লাগে ৬০ জন শুধুমাত্র মেশিনের কারণেই। ক্রিসেন্ট জুট মিল সিবিএর সাধারণ সম্পাদক সোহরাব হোসেন বলেন, আমাদের শ্রমের টাকা আদায় হাত-পা ধরতে হয়, আন্দোলন-বিক্ষোভ করতে হয়। সরকার যদি পাটের জন প্রতি বছর দুই থেকে তিন কোটি টাকা বাজেটে রাখে তাহলে আর্থিক সংকটও কাটবে।

দেশে এবং আন্তর্জাতিক বাজারে পাটের বহুমুখী ব্যবহার থাকলেও আধুনিক যন্ত্রপাতির অভাবে উৎপাদন ব্যাহত হচ্ছে। তাছাড়া খুলনা অঞ্চলের পাটকলগুলো উৎপাদন করছে শুধুমাত্র পাটের বস্তা, চট, কার্পেট ও সুতা। বর্তমানে বিক্রির অপেক্ষায় পড়ে আছে ২৩২ কোটি টাকা মূল্যের ২৩ হাজার মেট্রিকটন পণ্য। পাটকলগুলো বছরে লোকসান দিচ্ছে ২২০কোটি টাকা। সমস্যার কথা স্বীকার করে বিজেএসসি বলছে, প্লাটিনাম ও জেজেআই জুট মিলের যন্ত্রপাতি আধুনিকায়নের পরিকল্পনা রয়েছে।

প্লাটিনাম জুট মিল সিবিএর সহ-সম্পাদক মনিরুল ইসলাম শিকদার বলেছেন, মিলে অনেক মেশিন বন্ধ রয়েছে, সেখানে অনেক জায়গাও খালি পড়ে আছে। ইচ্ছে করলে বিভিন্ন পণ্য চালু করার অনুমোতি দিলে কাজ করা সম্ভব।

খুলনা বিজেএমসি লিয়াজোঁ কর্মকর্তা গাজী শাহাদাৎ হোসেন বলেছেন, প্লাটিনাম ও জেজেআই জুট মিলের যন্ত্রপাতি আধুনিকায়নের ফলে শতভাগ না হলেও ৯০ শতাংশ আশা করা যায় হবে। একি মেশি ও একি জনবল দিয়ে উৎপাদন ২৪ শতাংশ বৃদ্ধি পাবে।

"

প্রতিদিনের সংবাদ ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন
আরও পড়ুন
  • সর্বশেষ
  • পাঠক প্রিয়
close
Error!: SQLSTATE[42S02]: Base table or view not found: 1146 Table 'protidin_sangbad.news_hits_counter_2020_04_07' doesn't exist
Error!: SQLSTATE[42S02]: Base table or view not found: 1146 Table 'protidin_sangbad.news_hits_counter_2020_04_07' doesn't exist