নিজস্ব প্রতিবেদক

  ০৫ মার্চ, ২০১৮

এখনো যাত্রীবান্ধব হয়নি রাজধানীর গণপরিবহন

রাজধানীর গণপরিবহন এখনো গণমুখী হয়নি। বাস রুট আর চলাচলকারী পরিবহন সংখ্যার মধ্যে ভারসাম্য নেই বলেই এমনটা মনে করছেন পরিবহন বিশেষজ্ঞরা। অতিরিক্ত গাড়ির চাপে যানজট এবং যানজটের কারণে সময়মতো গাড়ি না পাওয়ার ভোগান্তির চক্রে আবদ্ধ যাত্রীরা। বিশেষজ্ঞদের আশঙ্কা অতি দ্রুত কার্যকর ব্যবস্থা না নিলে সমস্যা আরো বাড়বে। দু-একটি বিচ্ছিন্ন রুটে আংশিক পরীক্ষা-নিরীক্ষার পরিবর্তে পুরো শহরে একযোগে পদক্ষেপ নেয়ারও পরামর্শ তাদের। সিটি করপোরেশন ও পরিবহন সমন্বয় কর্তৃপক্ষের আশ্বাস প্রয়াত মেয়র আনিসুল হকের অসমাপ্ত কাজ বাস্তবায়নের প্রক্রিয়া খুব শিগগিরই শুরু হবে।

ঢাকা শহরে ২৪৬টি রুটে বর্তমানে কমপক্ষে ৭ হাজার বাস চলাচল করছে। অভ্যন্তরীণ যাত্রীদের সেবা না দিলেও আশপাশের জেলা থেকে প্রতিদিন প্রায় ২ হাজার বাস চলে ঢাকার রাস্তায়।

যাত্রীরা বলেন, অনেক সময় রাস্তা ফাঁকা থাকলেও বাসগুলো রাস্তায়ই দাঁড়িয়ে থাকে। এতে আমাদের খুব ভোগান্তি হয়। চালকরা বলেন, যে পথ যেতে সাধারণত ৪০ মিনিট সময় লাগে সেখানে যেতে সময় লাগে ৩ থেকে ৪ ঘণ্টা।

সংকট সমাধানে ২০১৬ সালে উদ্যোগ নেয় কর্তৃপক্ষ। সব বাস কোম্পানিকে ৬টি প্রতিষ্ঠানের আওতায় এনে ২২টি রুট করার পরিকল্পনা করা হয়। এ সময় গুলশান-বনানীতে ‘ঢাকা চাকা’ প্রকল্পের পর উত্তরা, বিমানবন্দর ও কুড়িল থেকে যাত্রাবাড়ী পর্যন্ত বিচ্ছিন্ন কিছু প্রকল্প নেয়া হলেও এর কোনোটিই আলোর মুখ দেখেনি।

পরিবহন বিশেষজ্ঞ ড. সালেহউদ্দিন বলেন, ২০৩৫ থেকে ২০৪০ সাল পর্যন্ত বাসই ডমিনেটিং ফ্যাক্টর হয়ে থাকবে। সুতরাং তিন থেকে চারটি রুট বিবেচনায় নিলে হবে না। সব রুটকেই এর আওতায় আনতে হবে।

বিশেষজ্ঞরা বলছেন, প্রায় ২৫০ কোম্পানির গাড়ি চলছে মালিকানা প্রতিষ্ঠানের নিজস্ব নির্দেশনায়। একীভূত না হওয়ার কারণে কোনো সংস্থার পক্ষেই এগুলোকে নিয়ন্ত্রণ করা সম্ভব হয় না। তবে ঢাকা যানবাহন সমন্বয় কর্তৃপক্ষের নেতৃত্বে দুটি সিটি করপোরেশন গণপরিবহন নিয়ে শিগগিরই মাঠ পর্যায়ে কাজ শুরুর আশ্বাস দেন।

ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা খান মোহাম্মদ বিলাল বলেন, আমরা অল্প কিছু দিনের মধ্যেই মাঠ পর্যায়ে কাজ শুরু করব।

ঢাকা পরিবহন সমন্বয় কর্তৃপক্ষের নির্বাহী পরিচালক সৈয়দ আহমদ বলেন, আমরা যদি এ কাজটির ধারাবাহিকতা রক্ষা করতে পারি তাহলে আগামী ২ বছরের মধ্যেই যানজট নিরসনের নতুন ধারণাকে বাস্তবায়ন করা সম্ভব হবে।

রিকশাসহ অন্যান্য যানবাহন নিয়ন্ত্রণ এবং বাইরের গাড়িগুলো শহরের মধ্যে আসা বন্ধ করতে শহরতলীতে টার্মিনাল নির্মাণসহ কার্যকর পদক্ষেপ নেয়ার আহ্বান পরিবহন বিশেষজ্ঞদের।

এদিকে ফার্মগেট থেকে আসা গুলিস্তান, মতিঝিল, যাত্রাবাড়ী, সদরঘাটসহ বিভিন্ন রুটের বাস রাস্তার মাঝখানে দাঁড়িয়ে ঝুঁকিপূর্ণভাবে যাত্রী ওঠানামা করছে। কোনো কোনো গাড়ি মাঝপথে থামিয়েই যাত্রীদের ডাকতে শুরু করেছেন হেলপাররা। আবার সামনের বাস রাস্তা দখল করে এমন অবস্থায় দাঁড়িয়েছে যাতে পেছনের বাস আগে যেতে না পারে। এতে করে পেছনের দিকে বাসের লম্বা লাইন ও তীব্র যানজটের সৃষ্টি হচ্ছে। ঘটছে প্রাণহানিসহ অসংখ্য দুর্ঘটনা। ট্রাফিক পুলিশ, সার্জেন্ট ও আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যদের সামনেই চলছে এই চরম বিশৃঙ্খলা।

নিয়মনীতির তোয়াক্কা করছেন না রাজধানীর গণপরিবহনের মালিক-শ্রমিকরা। যাত্রীদের সুযোগ-সুবিধা ও নিরাপত্তা বিবেচনা না করে নিজেদের খেয়াল খুশিমতো চলছে বাস, কোচ, মিনিবাস, লেগুনা, হিউম্যান হলার, টেম্পো ও সিএনজি বেবিট্যাক্সিসহ নানা ধরনের যানবাহন।

বাংলাদেশ সড়ক পরিবহন মালিক সমিতির মহাসচিব খন্দকার এনায়েত উল্লাহ বলেন, পরিবহন খাতের বিশৃঙ্খল পরিবেশ দূর করতে নানা ধরনের কাজ চলছে এবং উদ্যোগ নেয়া হয়েছে। ঢাকায় ৩ হাজার নতুন বাস নামানোর পরিকল্পনা নেয়া হয়েছে। এর মধ্যে ১ হাজার এসি বাস থাকবে। এগুলো নামলে প্রাইভেট কারের সংখ্যা কমবে। যাত্রীদের বাসে উঠতে আগ্রহ বাড়বে।

"

প্রতিদিনের সংবাদ ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন
আরও পড়ুন
  • সর্বশেষ
  • পাঠক প্রিয়
close
Error!: SQLSTATE[42S02]: Base table or view not found: 1146 Table 'protidin_sangbad.news_hits_counter_2020_04_07' doesn't exist
Error!: SQLSTATE[42S02]: Base table or view not found: 1146 Table 'protidin_sangbad.news_hits_counter_2020_04_07' doesn't exist