নিজস্ব প্রতিবেদক
সড়ক বিভাজকে ফুল ফোটাতে ভিন্ন চিন্তা
রাজধানীর সড়ক বিভাজকে লাগানো গাছে ফুল ফোটাতে এবার ভিন্ন সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। এর আগে সড়ক বিভাজকে (ডিভাইডার) বিভিন্ন প্রজাতির ফুলগাছ দিয়ে সৌন্দর্য বৃদ্ধির প্রকল্প নিয়ে আর সামনের দিকে এগোচ্ছে না ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশন (ডিএসসিসি)। ১২ কোটি টাকা ব্যয়ে প্রায় দুই বছর আগে হাতে নেওয়া প্রকল্পটিতে আশানুরূপ সফলতা না আসায় এ সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। একই সঙ্গে আগের মতো বিভিন্ন বেসরকারি প্রতিষ্ঠানের অর্থায়নে সড়ক বিভাজকের সৌন্দর্য বাড়ানোর সিদ্ধান্তও নেওয়া হয়েছে। এরই মধ্যে বিষয়টি সংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠানগুলোকে চিঠি দিয়ে জানিয়ে দেওয়া হয়েছে। সংশ্লিষ্ট সূত্র এসব নিশ্চিত করেছে।
চিঠিতে বলা হয়, ডিএসসিসি নাগরিক সুবিধাদি নিশ্চিত করাসহ বিশেষত সড়ক মিডিয়ানের (বিভাজক) সৌন্দর্যবর্ধনের বিষয়টি অত্যন্ত গুরুত্বের সঙ্গে করে থাকে। তাছাড়া রাষ্ট্রের সর্বোচ্চ পর্যায় ও বিদেশ থেকে আগত মেহমানদের পক্ষ থেকেও দৃষ্টিনন্দন ও মননশীলভাবে সড়ক মিডিয়ান সজ্জিতকরণের বিষয়টি লক্ষ করা হয়ে থাকে। এসব কাজে বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান/সংস্থা সামাজিক দায়িত্ববোধ থেকে করপোরেশনকে সহায়তা করে থাকে।
এতে আরো বলা হয়, করপোরেশন এলাকায় অধিকতর সৌন্দর্যমন্ডিত করার লক্ষ্যে সৃজনশীল ধ্যানধারণায় সড়ক মিডিয়ানগুলোর সৌন্দর্যবর্ধন কাজ আপনার প্রতিষ্ঠানসহ বিভিন্ন ব্যাংক, বীমা, টেলিকম অপারেটর, ইলেকট্র্রনিক মিডিয়া, প্রিন্ট মিডিয়া ইত্যাদির মাধ্যমে করানোর বিষয়ে মেয়র অভিপ্রায় ব্যক্ত করেছেন। সে অনুযায়ী প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তার সভাপতিত্বে আগামী ২৮ ফেব্রæয়ারি বেলা ২টা ৩০ মিনিটে নগর ভবনে মতবিনিময় সভা অনুষ্ঠিত হবে।
প্রকল্প সূত্র জানিয়েছে, প্রকল্পটি শুরুর আগে বিশেষজ্ঞদের মাধ্যমে পরীক্ষা-নিরীক্ষা করে প্রায় আট কিলোমিটার সড়কের বিভাজকে বাগানবিলাস ফুলগাছ লাগানোর সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। সড়কগুলোর মধ্যে রয়েছে গোলাপশাহ মাজার থেকে কাকরাইল নাইটেঙ্গেল মোড়, বঙ্গবাজার থেকে শেরাটন হোটেল, মৎস্য ভবন থেকে শাহবাগ মোড়, রমনা থানার সামনে থেকে সবজি বাগান এলাকা এবং মতিঝিলের বলাকা চত্বর এলাকা।
ডিএসসিসি সূত্র জানায়, প্রকল্পের আওতায় গুরুত্বপূর্ণ সড়কগুলোর বিভাজকে বাগানবিলাস ফুলগাছ লাগানোর সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। আগে এসব সড়কের সৌন্দর্যবর্ধন করা হতো বেসরকারীভাবে। বিনিময়ে সংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠানগুলো তাদের নিজস্ব দু-চারটি বিজ্ঞাপন প্রচার করত। এতে সড়ক বিভাজকের সৌন্দর্যবর্ধনের পাশাপাশি এ খাতে রাজস্ব ব্যয় থেকে মুক্তি পেত সিটি করপোরেশন। কিন্তু মেয়র নির্বাচিত হয়ে নগর ভবনে আসার এক বছরের মাথায় এ-সংক্রান্ত সব চুক্তি বাতিল করে এ প্রকল্প হাতে নেন ডিএসসিসির মেয়র মোহাম্মদ সাঈদ খোকন।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক নগর ভবনের সংশ্লিষ্ট শাখার এক কর্মকর্তা বলেন, ‘মূলত সড়ক বিভাজকের সৌন্দর্যবর্ধনের প্রকল্পটিতে কোনো সফলতা না আসায় এ সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।’
জানতে চাইলে ডিএসসিসির প্রধান রাজস্ব কর্মকর্তা ইউসূফ আলী সরদার বলেন, ‘আমরা সিদ্ধান্ত নিয়েছি আগের মতো বেসরকারি প্রতিষ্ঠানের মাধ্যমে সড়ক বিভাজকের সৌন্দর্যবর্ধন করব। বিয়য়টি জানিয়ে আমরা শতাধিক প্রতিষ্ঠানকে চিঠি দিয়েছি। তাদের উপস্থিতিতে আগামী ২৮ ফেব্রæয়ারি নগর ভবনে একটি বৈঠক অনুষ্ঠিত হবে।’
উল্লেখ্য, যানবাহনের অতিরিক্ত ধোঁয়া, ধুলাবালিসহ বৈরী পরিবেশের কারণে এ সমস্যা সৃষ্টি হয়েছে। প্রকল্প হাতে নেওয়ার আগে সংশ্লিষ্ট পরামর্শক প্রতিষ্ঠান বিষয়গুলো ভালো করে বিবেচনায় নেয়নি। ফলে গাছে সময়মতো ফুল আসছে না। আর তাই ফুলগাছ পরিচর্যার জন্য বিশেষজ্ঞ নিয়োগ দিয়েও লাভ হচ্ছে না।
"