নিজস্ব প্রতিবেদক

  ২০ জানুয়ারি, ২০১৮

ভরা মৌসুমে নাগালে নেই সবজির দাম

সাধের লাউ ১০০ টাকা

ভরা মওসুমে ঢাকার বাজারে সবজির দাম নেই ক্রেতাদের নাগালে। আবার কোনো পণ্যের দাম আরো বেড়েছে; একটি লাউয়ের জন্য গুনতে হচ্ছে ১০০ টাকা। দাম বাড়ার কারণ সম্পর্কে স্পষ্ট কিছু বলতে পারছেন না বিক্রেতারা। তাদের ভাষ্য, মাসের শুরু থেকেই একটু একটু করে সবজির দাম বাড়ছে। তবে সপ্তাহের ব্যবধানে নতুন দেশি পেঁয়াজের দাম কেজিতে প্রায় ১০ টাকা করে কমেছে। গতকাল শুক্রবার মিরপুর, কারওয়ান বাজার, শান্তিনগর, রামপুরা, মালিবাগ হাজীপাড়া, খিলগাঁও অঞ্চলের বিভিন্ন বাজার ঘুরে এবং ব্যবসায়ী ও ক্রেতাদের সঙ্গে কথা বলে এসব তথ্য পাওয়া গেছে।

ব্যবসায়ীরা জানিয়েছেন, টঙ্গীতে শুরু হওয়া বিশ্ব ইজতেমার প্রভাবে গত সপ্তাহে সবজির দাম কিছুটা বেড়ে যায়। সেই অবস্থা এখনো বিদ্যমান। বিশ্ব ইজতেমার কারণে সবজির গাড়ি আসতে কিছুটা সমস্যা হচ্ছে। এ ছাড়া কিছু সবজি জমিতে নষ্ট হয়ে গেছে। যে কারণে পণ্যটির দাম হঠাৎ বেড়েছে। দাম বাড়লেও বাজারে শীতের সবজির কোনো কমতি নেই। টমেটো, শিম, লাউ, কাঁচা-পাকা মিষ্টিকুমড়া, ফুলকপি, বাঁধাকপি, ওলকপি (শালগম), পেঁয়াজের কলি, বেগুন, মুলা, লালশাক, পালনশাক ও লাউশাক সবকিছুই বাজারে ভরপুর।

মিরপুর ৬ নম্বর ঈদগাঁ মাঠ কাঁচাবাজারে প্রতিটি লাউয়ের দাম চাওয়া হচ্ছে ১০০ টাকা। অধিকাংশ ক্রেতাই দাম জানতে চেয়ে লাউ না কিনেই ফিরে যান। মাছ ও অন্যান্য শাকসবজি কিনে চলে যাচ্ছেন তারা। আমেনা নামের পঞ্চাশোর্ধ্ব এক গৃহবধূ বলেন, যেভাবে প্রতিটি সবজির দাম বেড়েছে তাতে কেনাকাটা প্রায় অসম্ভব হয়ে পড়েছে। মিরপুর ৬ নম্বর বাজারে প্রতি কেজি শিম ৬০ টাকা, টমেটো ৬০, বেগুন ৬০ টাকা দরে বিক্রি হতে দেখা যায়। মাঝারি ধরনের ফুলকপি বিক্রি হয় ৪০ টাকায়। অধিকাংশ সবজির দাম গত দুই সপ্তাহে কেজিতে অন্তত ২০-৩০ টাকা পর্যন্ত বেড়েছে বলে জানান তারা। শীতকালীন বাজারে সবচেয়ে কম দামি সবজি মুলা ও শালগমও এখন বিক্রি হচ্ছে প্রতি কেজি ২৫ ও ৩০ টাকায়। তবে কাঁচামরিচের দাম কিছুটা কমে এসেছে। প্রতি কেজি ৬০ থেকে ৮০ টাকায় মিলছে।

এদিকে রাজধানীর যাত্রাবাড়ীর সবজি আড়ত ঘুরে দেখা যায়, প্রতি কেজি বেগুন রাজধানীর অন্য বাজারের তুলনায় ২০ টাকা কমে ৪০ টাকা করে, শিম ২০-১০ টাকা কমে ৩০-৫০, পেঁপে ৫-১০ টাকা কমে ১৫-২০, আলো ৩-৪ টাকা কমে ১৬-২২, মুলা ৫ টাকা কমে ২০, কাঁচামরিচ ২০ টাকা কমে ৬০, ধনেপাতা ১০ টাকা কমে ৭০, গাজর ১০ টাকা কমে ৩০ টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে।

আড়তের খুচরা সবজি বিক্রেতা নেছার উদ্দিন বলেন, সরবরাহ কম থাকায় সবজির দাম বেশি চলছে। তবে ঠান্ডা কিছুটা কমে যাওয়ায় সরবরাহ স্বাভাবিক হচ্ছে। ট্রাকে ট্রাকে সবজি রাজধানীতে প্রবেশ করছে। আশা করা যায়, আগামী সপ্তাহে সবজির বাজার স্থিতিশীল হয়ে যাবে। মিরপুরের ঈদগাঁ মাঠ কাঁচাবাজারের সবজি বিক্রেতা মোস্তফা বলেন, এই বাজারে মাছ, মুরগি, হাঁস সরাসরি ঢাকার বাইরের জেলাগুলো থেকে আসে। আর সবজি আসে মিরপুর-১ নম্বর কাঁচাবাজার ও কারওয়ান বাজার থেকে। এসব বাজারে সবজির দাম বেড়ে গেলে এখানেও বেড়ে যায়। বেশ কিছুদিন ধরে পাইকারিতে দাম বেড়ে যাওয়ায় খুচরায় সবজির দাম অস্বাভাবিকভাবে বেড়েছে।

মিরপুর-১ নম্বর বাজারে সবজির পাইকার সোলায়মান বলেন, কাঁচামালের (শাকসবজি) দাম সব সময় ওঠানামার মধ্যে থাকে। দাম আজ একটু বেশি তো কাল কম। আবার মাল আসতে দেরি হলেও দাম বাড়ে। অনেক মাল জমা হয়ে গেলে হঠাৎ দাম কমে যায়। সম্প্রতি সবজির উৎপাদন কিছুটা কমে যাওয়ায় বাজারে সরবরাহও কমে গেছে। এর প্রভাব পড়েছে সামগ্রিকভাবে সবজির দামের ওপর। এদিন কারওয়ান বাজারে কেনাকাটা করতে আসা মুন্না রায়হান জানান, এই বাজারেও অধিকাংশ সবজির দাম বাড়তি। প্রায় সব ধরনের সবজি প্রতি কেজি ৪৫ থেকে ৫০ টাকা। গাজর, করলা, শিমসহ প্রায় সব সবজি ৫০ টাকা কেজি। কেবল পেঁপে-মুলা পেলাম ২০ টাকা করে। বাজারে নতুন আসা পেঁয়াজের দাম এক সপ্তাহ আগে কিছুটা কমেছে। ভারতীয় পেঁয়াজ ৬০-৬৫ টাকা আর দেশীয় ৬৫-৭০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। নতুন আলুর দামও রয়েছে প্রতি কেজি ২০-২৫ টাকা।

তুলনামূলক স্থিতিশীল দামে বিক্রি হচ্ছে সাগর ও মিঠাপানির মাছ। মিরপুর বাজারে কেজি ২২০ টাকা থেকে ৩০০ টাকায় বিভিন্ন আকারের রুই মাছ পাওয়া যাচ্ছে। আবার ৪০০ থেকে ৬০০ টাকার মধ্যে টেংরা, বোয়াল, শিং, কোরাল মাছসহ নদী ও খালবিলের মাছ পাওয়া যাচ্ছে।

"

প্রতিদিনের সংবাদ ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন
আরও পড়ুন
  • সর্বশেষ
  • পাঠক প্রিয়
close
Error!: SQLSTATE[42S02]: Base table or view not found: 1146 Table 'protidin_sangbad.news_hits_counter_2020_04_07' doesn't exist
Error!: SQLSTATE[42S02]: Base table or view not found: 1146 Table 'protidin_sangbad.news_hits_counter_2020_04_07' doesn't exist