নিজস্ব প্রতিবেদক
পুরান ঢাকা থেকে এখনো সরেনি কেমিক্যাল ব্যবসা
পুরান ঢাকা থেকে এখনো সরেনি কেমিক্যালের ব্যবসা। ওই এলাকার নিমতলীতে ২০১০ সালের ৩ জুন রাসায়নিক গুদামে অগ্নিকা-ে ১২৮ জন দগ্ধ হয়ে মারা যান। এ ছাড়া দগ্ধ হয় আরো শতাধিক মানুষ। এ ঘটনার পর নিমতলী থেকে কিছু গুদাম ও কারখানা সরানো হলেও পুরান ঢাকার অন্য এলাকা এখনো রয়ে গেছে কেমিক্যালের গোডাউন।
বাসা-বাড়িতেই এখনো মজুদ রাখা হচ্ছে রাসায়নিক দাহ্যবস্তু। এতে যেকোনো সময় ভয়াবহ অগ্নিকা-ের কারণ হয়ে দাঁড়াতে পারে। এসব কারখানায় অগ্নিকা- ঘটলে নিমতলীর চেয়েও ভয়াবহ পরিস্থিতির আশঙ্কা করছেন পরিবেশবিদরা। তাই কারখানাগুলোকে চিহ্নিত করে দ্রুত সরিয়ে ফেলার পরামর্শ দিয়েছেন তারা।
বাংলাদেশ পরিবেশ আন্দোলনের (বাপা) এক হিসাবে দেখা গেছে, পুরান ঢাকায় রয়েছে ২৫ হাজার কেমিক্যাল গোডাউন বা রাসায়নিক দাহ্য বস্তুর গুদাম। এসবের মধ্যে ১৫ হাজার আছে বাসাবাড়িতেই। মাত্র আড়াই হাজার গুদামকে ট্রেড লাইসেন্স দিয়েছে সিটি করপোরেশন। বাকি ২২ হাজারের বেশি গুদামই অবৈধ। ২০০ ধরনের ক্ষতিকর ও ঝুঁকিপূর্ণ রাসায়নিকের ব্যবসা রয়েছে এলাকায়।
অনুসন্ধানে দেখা গেছে, রাজধানীর লালবাগ, ইসলামবাগ, হাজারীবাগ, কোতোয়ালি, চকবাজার, বংশাল, কামরাঙ্গীরচর, শ্যামপুর ও কদমতলীসহ বিভিন্ন এলাকায় অলিগলিতেই গড়ে উঠেছে হাজার হাজার কারখানা। অবৈধ কারখানার মধ্যে রয়েছে, ব্যাটারি তৈরি, নকল ওষুধ, নিষিদ্ধ পলিথিন ব্যাগ, প্লাস্টিক সরঞ্জাম, নকল বৈদ্যুতিক কেব্ল, ঝালাই, খেলনা ও জুতা-স্যান্ডেলসহ শতাধিক পণ্য তৈরির কারখানা। এসব পণ্য উৎপাদনে বেশির ভাগ কারখানায় ব্যবহার করা হয় দাহ্য কেমিক্যাল। বিশেষ করে জুতা তৈরির ফ্যাক্টরিতে যে সল্যুশন ব্যবহার করা হয়, সেগুলো খুবই বিপজ্জনক বলে জানান সংশ্লিষ্টরা। ফায়ার সার্ভিসের কর্মকর্তারা জানান, পুরান ঢাকার বাসাবাড়িতে অপরিকল্পিতভাবে গড়ে উঠেছে জুতা কারখানা। এসব জুতা কারখানার সল্যুশনে আগুন লাগলে তা খুবই দ্রুত ছড়ায়। তাই ঘনবসতি এলাকা ও বাড়িঘরে কারখানা গড়া ঠিক নয়। নিমতলীর ঘটনার পর কেমিক্যাল গোডাউনগুলো সরানোর উদ্যোগ নেওয়া হলেও অবৈধ কারখানার বিষয়ে কোনো পদক্ষেপ নেয়নি ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশন।
দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের প্রধান নির্বাহী খান মোহাম্মদ বিলাল জানান, পুরান ঢাকায় কেমিক্যাল কারখানার পাশাপাশি অনেক কারখানা গড়ে উঠেছে। ব্যবসায়ীরা তাদের ও নগরবাসীর নিরাপত্তার কথা চিন্তা করে অন্য স্থানে স্থানান্তর করা উচিত।
"