রাজশাহী প্রতিনিধি
রাজশাহীতে দখলবাজ চক্র বেপরোয়া
পাউবোর জায়গায় সাইকেল গ্যারেজ!
কেউ গ্যারেজে মোটরসাইকেল না রাখতে চাইলে তাকে নানাভাবে হয়রানি করা হয়
রাজশাহী মহানগরীতে পানি উন্নয়ন বোর্ডের (পাউবো) জায়গা দখল করে সাইকেল-মোটরসাইকেলের গ্যারেজ করা হয়েছে। অথচ নগরীর শ্রীরামপুরে পাউবোর টি-গ্রোয়েনের পাশের ওই এলাকাটি দর্শনার্থীদের কাছে খুব প্রিয়। জায়গাটি দখল হয়ে যাওয়ায় সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের প্রতি ক্ষোভ প্রকাশ করছেন স্থানীয়রা।
জায়গাটি দখলমুক্ত রাখতে পাউবোর পক্ষ থেকে কাঁটাতারের বেড়াও হয়েছে। কিন্তু পাউবোর সেই কাঁটাতারের বেড়ার ভেতরেই সাইনবোর্ড টাঙিয়ে চলছে গ্যারেজের কার্যক্রম। দখলকারীরা বলছেন, পাউবোর সঙ্গে মৌখিক চুক্তি করে তারা জায়গাটিতে গ্যারেজ করেছেন। এ জন্য কিছু টাকাও দিতে হয়। তবে পাউবো বলছে, অবৈধ এই গ্যারেজের বিষয়ে তারা কিছুই জানে না।
গতকাল মঙ্গলবার সকালে দেখা গেছে, সাজানো-গোছানো সুন্দর ওই জায়গাটিতে থাকা কয়েকটি গাছে ‘গাড়ি পার্কিং’ লেখা সাইনবোর্ড টাঙানো হয়েছে। ‘সাইকেল-মোটরসাইকেলের গ্যারেজ’ নামে টাঙানো হয়েছে আরেকটি সাইনবোর্ড। সেই গ্যারেজে দর্শনার্থীদের প্রতি মোটরসাইকেলের জন্য তাদের কাছ থেকে আদায় করা হচ্ছে ১০ টাকা।
স্থানীয়রা জানান, সম্প্রতি রাষ্ট্রপতির আগমনকে ঘিরে শ্রীরামপুরের ওই এলাকাটি পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন করা হয়। রাষ্ট্রপতির ওই ভ্রমণের এক দিন পরই সেখানে গ্যারেজটি করা হয়। শ্রীরামপুরের মাবুদ হোসেন, জিবলু শেখ ও ইয়াসিন আলী নামের তিন যুবক গ্যারেজটি চালাচ্ছেন। পুলিশ প্রশাসনের সঙ্গে সুসম্পর্ক থাকায় কেউ তাদের উচ্ছেদ করে না। কয়েকজন মোটরসাইকেল চালক জানান, গ্যারেজের আশপাশে খোলা জায়গায় মোটরসাইকেল পার্ক করতে গেলে তাতে বাধা দেন গ্যারেজ মালিকরা। তাদের কথা, টি-বাঁধ ও সড়কের পাশে সাইকেল-মোটরসাইকেল রাখায় নিষেধাজ্ঞা রয়েছে পুলিশ ও পাউবোর। গ্যারেজ মালিকদের এ বিষয়টি দেখভালের দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে। তাই সব মোটরসাইকেল তাদের গ্যারেজেই রাখতে হবে। এভাবে তারা নিজেদের গ্যারেজে দর্শনার্থীদের মোটরসাইকেল রাখতে বাধ্য করেন। কেউ গ্যারেজে মোটরসাইকেল না রাখতে চাইলে তাকে নানাভাবে হয়রানি করা হয় বলেও অভিযোগ দর্শনার্থীদের।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে গ্যারেজ মালিকদের একজন ইয়াসিন আলী বলেন, গ্যারেজের পাশেই পুলিশ লাইন। এ এলাকা দিয়ে পুলিশের কর্মকর্তারা হাঁটাহাঁটি করেন। তাই তারা যেখানে সেখানে মোটরসাইকেল পার্ক না করার জন্য দর্শনার্থীদের বলে থাকেন। এসব মোটরসাইকেল তাদের গ্যারেজেই রাখা হয়। ইয়াসিন বলেন, গ্যারেজ খুলতে পাউবোর কাছ থেকে জায়গা ইজারা নেওয়া হয়নি। তবে মৌখিকভাবে পাউবোর অনুমতি নেওয়া আছে। মৌখিক ওই চুক্তি অনুযায়ী, প্রতিমাসে পাউবোকে টাকা দিতে হয় বলেও দাবি করেন ইয়াসিন আলী।
তবে টাকা নেওয়ার অভিযোগ অস্বীকার করে পাউবোর রাজশাহীর নির্বাহী প্রকৌশলী মোখলেসুর রহমান বলেন, এলাকাটি খুব গুরুত্বপূর্ণ। তাই কাঁটাতারের বেড়া দিয়ে ঘিরে রাখা হয়েছে। সেখানে গ্যারেজ করা হলে অবশ্যই সেটা অবৈধ। তিনি বলেন, কয়েক দিন আগেই তিনি এলাকাটি ঘুরে এসেছেন। তখন গ্যারেজটি চোখে পড়েনি। গ্যারেজ থাকলে খুব শিগগিরই উচ্ছেদ করা হবে।
"