ক্রীড়া প্রতিবেদক

  ২২ নভেম্বর, ২০১৭

খুলনাকে আরিফুলের উপহার

হয়তো সমর্থকরাও আশা ছেড়ে দিয়েছিলেন। কিন্তু বিশ্বাস ছিল আরিফুল হকের। খুলনা টাইটান্স ব্যাটসম্যানের সেই আত্মবিশ্বাসটাই নিষ্প্রাণ ম্যাচে উত্তাপ ছড়াল। নাটকীয় জয় পেল মাহমুদউল্লাহ রিয়াদের দল। ১৮ বলে ৩৬ রানের কঠিন সমীকরণটা মেলানোয় আরিফুল অবধারিতভাবেই হলেন ম্যাচের নায়ক। কাল মিরপুর শেরেবাংলা স্টেডিয়ামে খুলনার চতুর্থ জয়টি এলো ২ উইকেটের ব্যবধানে। মাহমুদউল্লাহ রিয়াদের দলও থাকল পয়েন্ট টেবিলের পুরোনো ঠিকানা তিন নম্বরে। পক্ষান্তরে, এ নিয়ে পঞ্চম ম্যাচে হেরে তালিকার তলানিতেই থাকল ড্যারেন সামির দল। কালকের দুঃস্মৃতির পরাজয়ে টুর্নামেন্টে তাদের টিকে থাকার স্বপ্নটাও ধূসর হয়ে গেল।

খুলনার লক্ষ্যটা ছিল চ্যালেঞ্জিং। রাজশাহী কিংসের ১৬৬ রানের জবাব দিতে নেমে ভালোই বেগ পেতে হলো খুলটা টাইটান্সকে। লক্ষ্যে ব্যাট করতে নেমে ১৫.৫ ওভারে ১২৩ রানে ৭ উইকেট হারিয়ে ফেলেছিল মাহমুদউল্লাহর দল। সেখান থেকে কি দারুণভাবেই না ফিরে এলো খুলনার ফ্র্যাঞ্চাইজি দলটি। দলের অধিনায়ক মাহমুদউল্লাহ ম্যাচ শেষে আরিফুলকে ধন্যবাদ দিতেই পারেন।

খুলনার ইনিংসের শুরুটাও ছিল দুঃস্বপ্নের। ১৩ রানের মধ্যে ফিরে গেছেন দুজন ব্যাটসম্যান। তৃতীয় উইকেট জুটিতে ওয়ালটন ও প্রসন্নকে হারানোর ধাক্কাটা প্রায় সামলে উঠেছিল খুলনা টাইটান্স। রাইলি রুশো ও মাহমুদউল্লাহর ব্যাটিং দৃঢ়তায় সহজ জয়ের পথেই হাঁটছিল। কিন্তু পথটা কঠিন হয়ে যায় ৬৭ রানের জুটিটা বিচ্ছিন্ন হওয়ার পর।

রুশো সাজঘরে ফিরতেই আরেক দফা ছন্দপতন হয় খুলনা টাইটান্সের। কিছুক্ষণের জন্য আফিফ হোসেন। ১০৭ রানে দলের পঞ্চম ব্যাটসম্যান হিসেবে সাজঘরে ফিরে যান অধিনায়ক মাহমুদউল্লাহ। ৪৪ বলে ৫৬ রানের ইনিংস খেলেছিলেন তিনি। ইনিংস সাজিয়েছিলেন ৮টি চার ও ১ ছক্কায়। ১৭ বলে একটি চার-ছক্কায় ১৭ রানে আউট হন প্রোটিয়া ব্যাটসম্যান রুশো।

ধুঁকতে থাকা খুলনা ১২৩ রানের মধ্যে ৭ উইকেট হারিয়ে ফেলেছিল। কার্লোস ব্র্যাথওয়েট আশার প্রদীপ হয়ে এলেও নিভে গেছেন ১২ বলে ১২ রান করে। একদিকে উইকেটের লাগামহীনতা অন্যদিকে আস্কিং রেটের চাপ। সবমিলিয়ে জয়ের আশাটা প্রায় ছেড়েই দিয়েছিল খুলনা টাইটান্স।

সময়মতোই জ্বলে উঠলেন আরিফুল হক। তাকে যোগ্য সঙ্গটাই দিয়েছিলেন জুনায়েদ খান। তাদের ৪০ রানের হার না মানা জুটিই শেষ অবধি জয়ের ভিতটা গড়ে দিয়েছে। বিস্ময়কর হচ্ছে, এই জুটিতে পাকিস্তানি বোলারের অবদান মাত্র ১ রান! এদিন ব্যাট হাতে নিজেকে মেলে ধরার সুযোগ না পেলেও বল হাতে ঠিকই আগুন ঝরিয়েছেন জুনায়েদ। রাজশাহীর পতন হওয়া ৮ উইকেটের ৪টিই নিয়েছেন তিনি। ম্যাচটা অমন কঠিন না হয়ে উঠলে হয়তো ম্যাচ সেরার স্বীকৃতিটা জুনায়েদই পেতে পারতেন।

রাজশাহীর শুরুর বিপর্যয়টা তো এই পেসারই ডেকে এনেছিলেন। টস হেরে ফিল্ডিংয়ে নামা রাজশাহীর ৬ রানের মধ্যে দুই ব্যাটসম্যান মুমিনুল হক ও ড্রামন্ডকে ফিরিয়েছিলেন সাজঘরে। উইকেট শিকারে তার সঙ্গে এসে যোগ দিলেন আবু জায়েদ রাহি। ২১ রানে থাকা রাজশাহীর তৃতীয় ব্যাটসম্যান জাকির হাসানকে করেন উইকেট ছাড়া। ব্যক্তিগত সংগ্রহ পঞ্চাশ ছাড়ানো মুশফিকুর রহিমের ঘাতকও তিনি।

অবশ্য শুরুতে কোণঠাসা হলেও রাজশাহীর ইনিংসের এক প্রান্ত আগলে রেখেছিলেন ডোয়াইন স্মিথ। মুশফিকুর রহিমের সঙ্গে কার্যকর জুটি গড়ে তোলেন ক্যারিবীয় ব্যাটসম্যান। তাদের ৭৬ রানের জুটিতে ম্যাচে ফেরে রাজশাহী। ৩৬ বলে ৬২ রানের আগ্রাসী ইনিংস খেলে বিদায় নিয়েছেন স্মিথ। ইনিংসে ছিল ৭টি চার ও ৪ ছক্কা। পরে ফ্র্যাঙ্কলিনকে নিয়ে ৪৪ রানের জুটি গড়ে তোলেন মুশফিক।

দলীয় সংগ্রহ ১৮০ হবে এমনটা ধারণা করা হচ্ছিল। কিন্তু সেটা ভুল প্রমাণ হতে শুরু করে মুশফিকের বিদায়ে। উইকেটরক্ষক-ব্যাটসম্যানে বিদায়ে রানের গতি থেমে যায় রাজশাহীর। ৩৩ বলে ৪টি চার ও ৩ ছক্কায় ৫৫ রানের ইনিংস খেলেন মুশফিক। শেষ দিকে ফ্র্যাঙ্কলিনের ২৯ রানের মাঝারি মানের ইনিংস সুবাদে নির্ধারিত ওভারে ৮ উইকেটে ১৬৬ রান করে ডারেন সামির দল।

"

প্রতিদিনের সংবাদ ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন
আরও পড়ুন
  • সর্বশেষ
  • পাঠক প্রিয়
close
Error!: SQLSTATE[42S02]: Base table or view not found: 1146 Table 'protidin_sangbad.news_hits_counter_2020_04_07' doesn't exist
Error!: SQLSTATE[42S02]: Base table or view not found: 1146 Table 'protidin_sangbad.news_hits_counter_2020_04_07' doesn't exist